Header Ads

মুখ্যমন্ত্রীর বাঙালি বিরোধী স্থিতি নিন্দা করছে আমরা বাঙালি

নয়া ঠাহর, সংবাদদাতা
সম্প্রতি আসামের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা আসামে বসবাসকারী বাঙ্গালীদের উদ্দেশ্য করে যেভাবে মন্তব্য করছেন আমরা বাঙালি আসাম রাজ্য কমিটি, তার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে। মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন ,বাঙ্গালীরা যদি মাতৃভাষা বাংলা লিপিবদ্ধ করে লোক গণনায় তাহলে বিদেশী বাছাই করতে তার সুবিধা হবে। অর্থাৎ সমগ্র বাঙালি জাতিকে তিনি বিদেশীর কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে ভাসমান জনগোষ্ঠীতে পরিণত করার এক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন ।আসামের লোক গণনা নিয়ে জালিয়াতির কথা ১৯৫১সালে তৎকালীন সেন্সার সুপারেনটেনডেন্ট বাগাইওয়ালা মন্তব্য করেছিলেন আসামের লোক গণনা এক বায়োলজিক্যাল মিরাকোল কারণ ১৫০ শতাংশ অসমীয়া ভাষাভাষীর সংখ্যা এই লোক গণনায় দেখানো হয়েছে ,যাহা জীবজগতের বিস্ময় ,আসামে বসবাসকারী বাঙ্গালীদের আসাম থেকে বিতাড়িত করার ইহা এক চক্রান্ত ।হেমন্ত বিশ্ব শর্মার বাঙালি বিদ্বেষ নতুন নয় ,চাকরি ক্ষেত্রে বাঙ্গালীদের চরমভাবে বঞ্চিত করা হচ্ছে, পৃথিবীর এমন কোন দেশ নেই ,এমন কোন সরকার নেই যে সরকার তার দেশের জনসাধারণকে লোক গণনায় মাতৃভাষা কি লিখা হবে বা কি লিখতে হবে তার নির্দেশ প্রদান করে। একমাত্র আসাম সরকার দেশের নাগরিকদের মাতৃভাষা ত্যাগ করতে উস্কানি দিচ্ছেন । আমার মাতৃভাষা কি হবে সেটা কোন সরকার বা কোন ব্যক্তি নির্ধারণ করে দিতে পারে না। এই জালিয়াতির বিরুদ্ধে আপামর বাঙালি সমাজ কে সরব হতে হবে।অতীতে বাংলা ভাষাভাষী মানুষের উপর চাপ সৃষ্টি করে মাতৃভাষা ত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছিল ,যার ফলে অসমিয়ার সংখ্যাদিক্য দেখানো হয়েছিল ।বর্তমানে পরিস্থিতি অন্যরকম হয়ে যাচ্ছে দেখে ,আসামের মুখ্যমন্ত্রী বাংলা ভাষাভাষী মানুষকে বিদেশীর কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে অসমীয়ার সংখ্যাধিক্য দেখানোর পুরনো যে রীতি ও পুরনো যে ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন ।পূর্ববঙ্গ থেকে কৃষক শ্রেণীর বাঙ্গালীদের আসামের অনাবাদি জমিতে এনে চাষবাসের সুযোগ করে দিয়েছিল ব্রিটিশ সরকার, সুতরাং এই সমস্ত লোক এখানে উড়ে এসে জুড়ে বসে নি। এরা ভারতের নাগরিক, সুতরাং ভারতের নাগরিকদের যিনি অনুপ্রবেশকারী বা বাংলাদেশী আখ্যা দিয়ে যেভাবে ভিটেছাড়া করছেন, উচ্ছেদ করছেন ,তা গণতান্ত্রিক ভারতবর্ষে চলতে পারেনা ।আমরা জানি সরকার তার প্রয়োজনে জমি অধিগ্রহণ করতে পারে ,সরকারি জমি থেকে উচ্ছেদ করতে পারে ,কিন্তু পুনর্বাসন তথা ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করাও সরকারের দায়িত্ব ।খোলা আকাশের নিচে শিশু বৃদ্ধদেরকে নিয়ে উৎখাত হওয়া লোকরা দিনাতিপাত করছেন। এই ক্ষেত্রে কোন মানবিক বিচার সরকারের তরফ থেকে করা হচ্ছে না ,সরকারের এই বাঙালি বিদ্বেষী নীতির আমরা বাঙালি তীব্র বিরোধিতা করছে। আজকে এই উচ্ছেদ করতে গিয়ে সরকার ধর্মীয় বিভাজনের রাজনীতি করছেন। আজকে যারা ভাবছেন যে আমরা নিরাপদে আছি সেই বাঙালি হিন্দুদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই ,আসামের কার্বিয়ালং জেলায় ও বড়ল্যান্ডে বাঙালি হিন্দুদের উপর নোটিশ জারি করা হয়েছে ।সুতরাং বাঙালি হিন্দুদের আশ্বস্ত হওয়ার কোন জায়গা নেই আগামীতে এই উচ্ছেদের খড়গ বাঙালি হিন্দুদের উপর পড়বে ।এছাড়াও আমরা দেখতে পাচ্ছি বাংলাদেশি বলে ধরে ধরে ভারতীয় নাগরিকদের  বাংলাদেশ সীমান্তে নিয়ে গিয়ে পুষবেক করা হচ্ছে ।সরকার যে এই বেআইনি কাজ করছে তা গৌহাটি হাইকোর্টের সম্প্রতি এক রায়ে প্রমাণিত হয়েছে, যে ১৪ জন ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশে পুষবেক  করা হয়েছিল ,তাদেরকে ফিরিয়ে আনতে সরকার বাধ্য হয়েছে। এই প্রক্রিয়া অর্থাৎ পুষবেক প্রক্রিয়া সারা ভারতবর্ষে চলছে উড়িষ্যা থেকে, দিল্লি থেকে ,গুজরাট থেকে ,মহারাষ্ট্র থেকে ,বাংলায় কথা বলা লোকদের বাংলাদেশী বলে ধরে এনে বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে পুষবেক করা হচ্ছে। এই অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠার জন্য আমরা বাঙালি দল সমস্ত শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষকে আহ্বান জানাচ্ছে ।আগামী দিনে শুধু আসাম নয় ,পশ্চিমবঙ্গ নয় ,সারা দেশ জুড়ে আমরা আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য আপামর বাঙালি সমাজের কাছে আহ্বান রাখছি।
          নিবেদক।
সাধন পুরকায়স্থ, সচিব, আমরা বাঙালি, আসাম রাজ্য কমিটি

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.