১৯ মে শিলচর স্টেশন কে ভাষা শহীদ স্টেশন হিসাবে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ঘোষণা করবেন?
নয়া ঠাহর ,সংবাদদাতা শিলচর
এবারের ১৯ শে মের শহিদ তর্পণের দিনে ' ভাষা শহিদ স্টেশন ' নামকরণের চূড়ান্ত ঘোষনা করার জন্য অসম সাহিত্য সভার প্রতিনিধি এবং মুখ্যমন্ত্রীকে আহ্বান জানাল বিডিএফ।
১৯ শে মে শহীদ দিবস হিসেবে আগামীকাল পালিত হবে সারা বরাক জুড়ে। এবার শহিদ দিবস উপলক্ষে শিলচর সফরে এসেছেন অসম সাহিত্য সভার এক প্রতিনিধিদল। তাঁরা ইতিমধ্যে ভাষা শহিদ স্মারক স্তম্ভে তাঁদের শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেছেন যে ভাষার অধিকার রক্ষায় আর যেন কেউ শহিদ না হন এটাই তাঁদের কাম্য। ভাষা শহিদদের স্বীকৃতি দিয়ে তাঁরা 'ভাষা শহিদ স্টেশন' নামকরণের দাবিকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন। এছাড়া প্রকল্প জমা পড়লে ভাষা শহিদ স্মারক সংগ্রহশালা তৈরির ব্যাপারেও তাঁরা সরকারের কাছে আবেদন জানাবেন বলে ঘোষণা করেছেন। অসম সাহিত্য সভার এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে সরকারের সাথে আলোচনা ক্রমে এবারের শহিদ দিবসে ' ভাষা শহিদ স্টেশন ' নামকরণের চূড়ান্ত ঘোষনা করার আহ্বান জানাল বিডিএফ।
বিডিএফ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিডিএফ মুখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায় বলেন যে অসম সাহিত্য সভার প্রতিনিধিদের এবারের বরাক সফর এবং তাদের বক্তব্য এক অর্থে ঐতিহাসিক। কারণ, মনে রাখতে হবে ১৯৬১ ,১৯৭২ এবং ১৯৮৬ তে যে ভাষা সার্কুলারের মাধ্যমে যে অসমিয়া ভাষা চাপিয়ে দেবার চেষ্টা করেছিল বিগত দিনের বিভিন্ন সরকার, তা অসম সাহিত্য সভার সম্মতি ক্রমেই করা হয়েছিল। তাই গতকাল যেভাবে অসম সাহিত্য সভার সভাপতি বসন্ত কুমার গোস্বামী ভাষা শহিদদের স্বীকৃতি দিলেন তারজন্য বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট এর পক্ষ থেকে তাঁরা অবশ্যই তাঁকে সাধুবাদ এবং অভিনন্দন জানাচ্ছেন। তিনি বলেন ভাষা শহিদ স্টেশন নামকরণের ব্যাপারে রাজ্য সরকারের আবেদনের ভিত্তিতে দশবছর আগে সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার ও রেল মন্ত্রকের পক্ষ থেকে। শুধু এই নামের প্রতিলিপি কি হবে তা জানাতে রাজ্য সরকারের কাছে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে। এই সামান্য কাজের জন্য ফাইলটি এতবছর থেকে আটকে আছে। তিনি বলেন যেহেতু অসম সাহিত্য সভার কর্মকর্তারা বর্তমানে বরাকে রয়েছেন তাই মুখ্যমন্ত্রীর সাথে আলোচনা ক্রমে কাল ১৯ মে র পবিত্র দিবসে এই ব্যাপারে তাঁরা চূড়ান্ত ঘোষণা করলে তা রাজ্যের সমস্ত বাঙালিদের আবেগের স্বীকৃতি হিসেবে আদৃত হবে। তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকেও এই অনুরোধ জানিয়েছেন।
প্রদীপ বাবু এদিন আরো বলেন যে আগামীতে বরাকে অসম সাহিত্য সভার অধিবেশন আয়োজনের যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তাঁকে স্বাগত জানাচ্ছে বিডিএফ। একই সাথে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় রাজ্যের অন্যতম বাঙালি সংগঠনদের নিয়ে একটি সম্মেলনের আয়োজন করার উদ্যোগ নিক অসম সাহিত্য সভা। তাতে উভয় উপত্যকার মধ্যে সমন্বয় আরো সুদৃঢ় হবে।
প্রদীপ দত্তরায় এদিন আরো বলেন যে শুধু সরকার অনুরক্ত বাঙালি সংগঠন বা লোকজনের সাথে আলোচনা করে প্রকৃত সমন্বয় হবেনা। এখানে বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন, নিখিল ভারত বঙ্গ সাহিত্য সম্মেলন ছাড়াও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক মঞ্চ, মাতৃভাষা সুরক্ষা সমিতি ইত্যাদি বিভিন্ন সংগঠন রয়েছে। একমাত্র তাঁদের প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনা ও আদান প্রদানের মাধ্যমেই উভয় উপত্যকার মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির অবসান সম্ভব। তাই এই ব্যাপারে গুরুত্ব দিতে তিনি অসম সাহিত্য সভার প্রতিনিধিদের আবেদন জানিয়েছেন।
বিডিএফ এর পক্ষ থেকে আহ্বায়ক হৃষীকেশ দে এক প্রেস বার্তায় এই খবর জানিয়েছেন।
কোন মন্তব্য নেই