বরাকের বিশিষ্ট কবি আশুতোষ দাস কে অর্জুন চন্দ্র বর্মণ পুরস্কার
*বরাকের বিশিষ্ট কবি ও সাহিত্যিক আশুতোষ দাসকে 'অর্জুন চন্দ্র বর্মন সম্মান'*
*নয়া ঠাহর প্রতিবেদন, নুতন দিল্লি *- এবছর অর্জুন চন্দ্র বর্মণ স্মারক পুরস্কার দেওয়া হবে বরাকের নামি কবি ও সাহিত্যিক আশুতোষ দাসকে। দিল্লির প্রজ্ঞা মেইল হিন্দি পত্রিকা গৌষ্ঠীর বহুভাষিক কবিতা সম্মিলনে কবিকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হবে আগামী 17 ডিসেম্বর রাজধানীর প্রখ্যাত প্রেক্ষাগৃহ গান্ধী সদনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে। আশুতোষ দাস প্রান্তিক অঞ্চলের দলিত সাহিত্যের একজন উজ্জ্বল বর্ণময় নক্ষত্র। তিনি সহজ সরল মনভাব নিয়ে সাহিত্য সাধনা ও জীবন যাপনের পক্ষে। তিনি বিগত পাঁচ দশক ধরে দক্ষিণ আসামের হাইলাকান্দি শহর থেকে প্রকাশিত 'বেলাভূমি' নামের একটি বিখ্যাত বাংলা পত্রিকার সম্পাদনাও করছেন। ছিলেন ছাত্রীদের শিক্ষা প্রসারে নিয়োজিত এক সমর্পিত স্বনামধন্য শিক্ষক।
দিল্লিস্থিত আন্তর্জাতিক সাংবাদিক রত্নজ্যোতি দত্তের সভাপতিত্বে প্রজ্ঞা মেইলের বহুজাতিক কবিতা উৎসব ও পুরস্কার প্রদান আয়োজক কমিটির বিশেষ সভায় সম্প্রতি সর্বসম্মতিক্রমে বরাকের এই সৃজনশীল সাহিত্য ও নাট্য ব্যাক্তিত্বকে এ স্মারক পুরস্কার প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রজ্ঞা মাইলের সম্পাদক অরুণ কুমার বর্মণ, বিশিষ্ট অসমীয়া ও বাংলা ভাষার কবি কাব্যমণি বরা জুরিতে ছিলেন। গত বছর প্রয়াত পিতা অর্জুন চন্দ্র বর্মনের স্মরণে কলকাতায় এক অনুষ্ঠানে অরুণ কুমার বর্মণ এই পুরস্কার ঘোষণা করেন। বিশিষ্ট সাংবাদিক রত্নজ্যোতি দত্ত এ সম্মাননা পুরুস্কারের প্রথম প্রাপক।
আগামী রবিবার (১৭ই ডিসেম্বর) মিন্টো রোডে অবস্থিত গান্ধী সদনে প্রজ্ঞা মেইল গৌষ্ঠীর আয়োজিত বহুভাষিক কবিতা উৎসব ও স্মারক পুরস্কার সমারোহ অনুষ্ঠিত হবে।
প্রজ্ঞা মেইলের দ্বিতীয় বহুভাষিক সর্বভারতীয় কবি সম্মিলনের আয়োজন পরিচিত কবি মহলে ইতিমধ্যেই সাড়া জাগিয়েছে। কলকাতার জনপ্রিয় ইংরেজি সংবাদ গোষ্ঠী নিউজ ম্যানিয়া, উত্তর পূর্বাঞ্চলের সাড়া জাগানো নিউজ পোর্টাল নয়া ঠাহর ও গুয়াহাটির জনপ্রিয় অসমীয়া ম্যাগাজিন 'রহস্য' এই আয়োজনের সহযোগী সংস্থা। প্রখ্যাত বহুভাষিক অসমীয়া কবি কাব্যমণি বরা এ আয়োজনের অন্যতম আয়োজক।
অর্জুন চন্দ্র বর্মনের পরিচয়
প্রয়াত অর্জুন চন্দ্র বর্মণ বাংলাদেশের এক কৃষক পরিবারে 2 অক্টোবর, 1939 সালে জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক সম্পত্তিতে প্রচুর জমি ছিল, যা তাকে দাঙ্গার সময় রাতারাতি ছেড়ে দিতে হয়েছিল। তিনি ঢাকার কায়েদে আজম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.কম পাস করেন। তার মনে সেবার বোধ বিদ্যমান ছিল ছাত্র থাকাকালীন। এজন্য, তিনি বি.ফার্মাও করেন এবং ঢাকার হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে ওষুধ বিতরণের দায়িত্বের অভিজ্ঞতাও ছিল। পরবর্তীকালে দেশভাগের পর ভারতে চলে আসতে হয়। তিনি উদ্বাস্তু শিবিরের বিশৃঙ্খলা স্বচক্ষে দেখেন এবং তাঁর কাছের অনেক লোককে কলেরা মহামারীতে মারা যেতে দেখেন। তারপর, সিদ্ধান্ত নেন যে তিনি ভারতে চলে যাবেন।
গুয়াহাটিতে একটি কেমিস্টের দোকানে চাকরি নেন এবং সেখানকার স্থানীয় লোকদের সাহায্য করেন। শরণার্থী শিবিরে বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণের অভিজ্ঞতাও হয়। এরপর, তিনি উত্তর প্রদেশের লখিমপুর খেরিতে ভারত সরকারের পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়ে কাজ করার সুযোগ পান। এরপর তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের অ্যাকাউন্টস বিভাগে চাকরি পেয়ে দিল্লি চলে আসেন। এখানে তিনি অনেক ভাষার সংবাদপত্র পড়ার সুযোগ পান। শুরু থেকেই পড়ার প্রতি আগ্রহ ছিল তার।এই সময়কালে, ইংরেজি ছাড়াও, তিনি হিন্দি, পাঞ্জাবি গুরুমুখী, মালায়লাম, তামিল ভাষাও শিখেছিলেন। পরবর্তীতে দিল্লিতে অফিসের একজন সহকর্মীর চ্যালেঞ্জের কারণে তিনি মাত্র এক সপ্তাহে উর্দু শিখেছিলেন। তিনি 1998 সালে কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্য এন্ড সম্প্রচার বিভাগের অ্যাকাউন্টস অফিসারের পদ থেকে অবসর নেন। ব্লিজ, দ্য কারেন্ট, হিন্দুস্তান টাইমস পত্রিকা তার প্রিয় সংবাদপত্রের তালিকায় ছিল। তিনি 2015 সালে বুধ পূর্ণিমার পুন্যদিনে ইহলোক ত্যাগ করেন।








কোন মন্তব্য নেই