শিলচর অসম সাহিত্য সভার সম্মতিতে জন্ম হয়েছিল জোড়া গামছা
শিলচর অসম সাহিত্য সভার সম্মতিতেই
জন্ম নিয়েছিল জোড়া গামছা
গামছা তত্ত্বের আবিষ্কারক সমর বিজয় চক্রবর্তী
চয়ন ভট্টাচার্য
প্রান্তজ্যোতি প্রতিবেদন শিলচর: সারা রাজ্য গামছা বিতর্ক নিয়ে তোলপাড়। এই বিতর্কের জন্ম কোথা থেকে হয়েছে? অসম বাংলা সাহিত্য সভা বিবৃতিতে বলেছে, দেড় বছর আগে শিলচরে এক অনুষ্ঠানে প্রাক্তন বিধায়ক শিলাদিত্য দেবের উপস্থিতিতে
এই গামছা দেওয়া হয়েছিল মন্ত্রী বিমল বরাকে। আর
শিলাদিত্যের প্রস্তাবে এই জোড়া গামছা উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছিল। অর্থাৎ ঘুরেফিরে শিলচরের নাম এখানে এসে যাচ্ছে। শিলচর হচ্ছে এই গামছার আঁতুরঘর। আসলে শিলচরে এই গামছার জন্ম দিয়েছিলেন অধ্যাপক সমর বিজয় চক্রবর্তী। তিনি বাংলা সাহিত্য সভার কর্মকর্তা। ইংরেজির অধ্যাপক। সাহিত্যিক প্রাবন্ধিক । তাই তিনি যখন একটা গামছার জন্ম দিয়েছেন তখন সেটা সবাই গ্রহণ করে নেন।
আজ থেকে ঠিক এক বছর আগে গত ২৭ মার্চ
অসম সাহিত্য সভার শিলচর শাখা ও সমন্বয় নামের একটি সংস্থা একটি উৎসবের আয়োজন করে। উদ্দেশ্য ছিল বরাক ও ব্রহ্মপুত্রের মধ্যে মৈত্রী সুদৃঢ় করা। এই অনুষ্ঠানে অসম সাহিত্য সভার স্থানীয়
পদাধিকাররা উপস্থিত ছিলেন। এমনকি কেন্দ্রীয় কমিটির উচ্চপদস্থ পদাধিকারীরা এসেছিলেন। কয়েকজন স্বনামধন্য অসমীয়া বুদ্ধিজীবীও এখানে এসেছিল। তাদের এই গামছা দিয়ে বরণ করা হয়েছিল। এ নিয়ে কেউ আপত্তি জানাননি। বরং এই গামছাটা সেদিন
প্রশংসিত হয়েছিল। যদি এই গামছা অসমীয়া ভাবাবেগে আঘাত দিত তাহলে অসম সাহিত্য সভার কর্মকর্তারা আপত্তি করতেন। কিন্তু তারা আপত্তি তো করেননি। বরং সাদরে এই গামছাকে গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু আজ এক বছর পর এটা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হলো। পান্ডুর এই অনুষ্ঠানে এই গামছা কে কেন্দ্র করে রাজ্য জুড়ে না ধরনের কথাবার্তা চলছে। বাংলা সাহিত্য সভা দুঃখ প্রকাশ করে বিবৃতি জারি করেছে। আসলে দুঃখপ্রকাশ নয় কার্যত ক্ষমাপ্রার্থনা। শেষ পর্যন্ত এটা নিয়ে একটা অবাঞ্চিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হল। এতে রাজ্যের বাঙালি সমাজের মাথা কিছুটা হলো হেট হয়েছে।
অসম সাহিত্য সভার শিলচর শাখার বিদায়ী সভাপতি ঠাকুরিয়া জানালেন, এক বছর আগে তো তারা এ কথাটা বুঝতে পারেনি । এখন যখন রাজ্যজূড়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে তখন কি করা যায়। আসলে বিষয়টা এমন কিছু নয়। "শিলচরের অনুষ্ঠানটি মিডিয়া তেমনভাবে গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করেননি। কিন্তু পান্ডুর অনুষ্ঠানটি শুধুমাত্র গামছাকে কেন্দ্র করে পরিবেশিত হয়েছে । যার জন্য এতটা বিতর্কের জন্ম হয়েছে। আসলে এটা ঠিক কথা একটি গামছাকে অযথা অন্য একটি গামছার সঙ্গে জুড়ে দেওয়া ঠিক নয়। এ ধরনের জোর করে সমন্বয় আনার প্রচেষ্টা ফলপ্রসু হয় না। কিন্তু কেউ যদি এটা করে থাকে সে যে খুব চক্রান্ত করেছে এমন নয়।
হয়তো অজ্ঞানতাবশত এটা হতে পারে। কারণ যেদিন গামছা উপহার হিসেবে দেওয়া হয় শিলচরে। সেদিন যারা বক্তব্য রেখেছিলেন তারা ছিলেন অসম সাহিত্য সবার বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। এই অনুষ্ঠানে প্রাক্তন কেন্দ্র মন্ত্রী কবীন্দ্র পুরকায়স্থ, প্রাক্তন বিধায়ক শিলাদিত্য দেব উপস্থিত ছিলেন। বিষয়টা যদি এতই দোষের হতো তাহলে তারা নিশ্চয়ই প্রতিবাদ করতে ন। কিন্তু তখন এটা নিয়ে কোন বিতর্কের জন্ম হয়নি। আজ এটা নিয়ে এত কথা হচ্ছে। তবে অসমে সবকিছুই শেষ পর্যন্ত রাজনীতিতে গিয়ে শেষ হয়। কিন্তু সাধারণ মানুষ ভাবছেন এটা এমন কি বিষয় এত কথা বলে কি লাভ। আর এই সত্যটাই বুঝতে চাইছেন না কেউ।
কোন মন্তব্য নেই