আমি গর্বের সঙ্গে বলি,,, ,
শিরোনাম# রিফিউজি
কলমে#শ্রাবন্তী জয়া দত্ত
হ্যাঁ আমি রিফিউজি,
গর্বের সঙ্গে বলি হ্যাঁ আমি রিফিউজি,
হ্যাঁ আমার বাবা মা দাদু দিদা ঠাকুরমা ঠাকুর দা
সব্বাই রিফিউজি ছিলেন।
হ্যাঁ আমি রিফিউজি বাড়ির বউ,
জন্মের ভিটে মাটি শৈশব কৈশর বন্ধুদের ছেড়ে
আম,জাম ,কাঁঠাল,লিচু,তাল ,নারকেল ,,,,,,,,
বড়ো পুকুর, ছোট পুকুর, ধান জমি, শস্য ক্ষেত,
বড়ো উঠোন গোল বারান্দা একান্নবর্তী পরিবার কে
বিদায় দিয়ে ,ভবিষ্যৎ স্বপ্নকে বোঁচকা পুটলি
বাক্স করে সীমানা পেরিয়ে চলে আসতে হয়েছে।
সেই থেকেই লড়াই অন্ধকারে পথ খুঁজে পাবার,
অনিশ্চিত আশ্রয় একজয়গা থেকে আরেক
জায়গায় দৌড়,
শেষে তৈরি হলো কলোনী ,
গায়ে গা ঘেঁষা ঘেঁষি করে থাকা,বারো বাড়ি এক উঠোন।
এক চিলতে ঘরে সাত আট জনের বাস,
কড়াইয়ে শাক আর দুমুঠো ভাত,
ভাতের চেয়ে ফ্যানের চাহিদা ও ছিলো বেশ।
লোডশেডিং অন্ধকার হ্যারিকেনের আলো
ভবিষ্যতে কি হবে চিন্তায় চিন্তায় মুখ শুকনো
করে ঘুরে বেড়ানো।
সেইখান থেকেই ঘুরে দাঁড়ানো লড়াই করে
মাসিকতা র লড়াই পেটের লড়াই করেই তবেই
আজ এই স্থায়িত্ব পেয়েছে,
অভাবের মধ্যেই ছিলো আন্তরিকতা
বিপদে অপদে সকলের পাশে থাকা,
যেইটা আজ হারিয়ে গেছে উঁচু উঁচু ইমারত
সংকীর্ণ স্বার্থ আর উন্নয়নের হওয়ায়।
হ্যাঁ আমি গর্বের সঙ্গে বলি আমার পরিবার ছিলো
রিফিউজি,
তাই শাশুড়ি মায়ের মুখে এখনো দেশের বাড়ি র
গল্প শুনে মনে মনে মা দিদিমা বাবা কাকদের
ছোটবেলা কে মনের ক্যানভাসে ছবি আঁকি।
একটি দাঙ্গা কেড়ে নিয়েছে অনেক কিছু,
কেড়ে নিয়েছে সংসার সন্তান স্বামী স্বপ্ন,,,,,,,
আশি বছর বয়সে এসেও তাঁদের ঠিক মনে
আছে সেই শেষবারের মতো মিষ্টি কুল গাছ টা কে
বাড়ির কোন দিকে একা রেখে চলে এসেছিলো,
পাশের বাড়ির বন্ধুটির নাম এখনো লেখা
আছে বুকের বামদিকে।।
কোন মন্তব্য নেই