বাংলার মত ঝাড় খন্ডে ইডি হানা ৩০কোটি টাকার জাহাজ বাজেয়াপ্ত
বাংলার সঙ্গে সঙ্গে ঝাড়খন্ডে ইডি হানা
৩০ কোটি টাকার জাহাজ বাজেয়াপ্ত
মানস বন্দ্যোপাধ্যায়
পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষা কেনাবেচার তদন্তে নেমে প্রবর্তন নির্দেশালয় (ইডি)প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তার ঘনিষ্ট অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের একের পর এক বাড়িতে অভিযান চালিয়ে এ পর্যন্ত ৫০ কোটির ওপর নগর টাকা ও কোটি কোটি টাকার সোনার গহনা উদ্ধার করে দুর্নীতির জগতে এক ইতিহাস তুলে ধরেছে। এখানেই শেষ নয় ,অর্পিতার আরো একটি ফ্ল্যাট নয়াবাদে অভিযানের প্রস্তুতি চলছে। এপর্যন্ত জানা গেছে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অর্পিতার নামে,বেনামে দুই ডজনের বেশি ফ্ল্যাট ও জমি রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বেশ কয়েকটি ডাম্পার।এই ডামপার গুলিতে বালি তোলার জন্য শতাধিক ট্রাক মজুত রয়েছে। পার্থ গ্রেফতার হওয়ার পর এখন ট্রাক গুলি অকেজোর মতো দাঁড়িয়ে রয়েছে। জানা গেছে এখন থেকে অবৈধ ভাবে বালি তুলে ঝাড়খন্ডেও পাঠানো হতো।
ঝাড়খন্ডে বিভিন্ন অবৈধ খননকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ থাকার অভিযোগও উঠেছে পার্থর বিরুদ্ধে। তার দুর্নীতির সাম্রাজ্য শুধু পশ্চিমবঙ্গে নয় ,সীমান্ত পেরিয়ে ঝাড়খন্ডে বিস্তৃত।
এবার ঝাড়খন্ডেও প্রবর্তন নির্দেশালয়ের অভিযান
অবৈধ খননের সঙ্গে পার্থ যোগের যোগসূত্র খতিয়ে দেখার সম্ভাবনা
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের বিধায়ক প্রতিনিধি পঙ্কজ মিশ্রের বিরুদ্ধে এবারে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে। এবার ইডি একটি জাহাজ আটক করেছে। পঙ্কজ মিশ্রের নির্দেশে এই জাহাজটি অবৈধ খননের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছিল। এই জাহাজর মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০ কোটি টাকা।
বেআইনি খনন সংক্রান্ত তদন্তে ইতিমধ্যেই পঙ্কজ মিশ্রকে গ্রেফতার করেছে ইডি। এবার মঙ্গলবার তাঁরা এই জাহাজটি আটক করেছে। এর নাম M.V.Infralink-III। এর রেজিস্ট্রেশন নম্বর WB 1809 বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ইডি-র তরফে জানানো হয়েছে, কোনও অনুমতি ছাড়াই বেআইনিভাবে চালানো হচ্ছিল এই জাহাজটি। সাহেবগঞ্জ, শুকরগড় ঘাট থেকে বিনা পারমিটেই কাজ চালানো হয়েছিল। জানা গেছে, রাজেশ যাদব ওরফে দাহু যাদবের নির্দেশেই এই জাহাজটি চলছিল। পঙ্কজ মিশ্র ছিলেন দাহু যাদবের সহযোগী। অবৈধ খনন করে উত্তোলন করা ছোট-বড় পাথর পরিবহনে এসব জাহাজ ব্যবহার করা হত। জাহাজটি দাম ৩০ কোটি টাকা। ২৬ জুলাই এর মালিকের বিরুদ্ধে একটি এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছিল।
এর আগে, ইডি অবৈধ খননের সাথে জড়িত দুটি পাথর ক্রাশার বাজেয়াপ্ত করেছিল। এই দুটি ক্রাশার মা আম্বা স্টোন ওয়ার্কসের। এর মালিক বিষ্ণু যাদব এবং পবিত্র যাদব। এ ছাড়া অবৈধ খনির সঙ্গে জড়িত তিনটি HYVA ট্রাকও জব্দ করা হয়েছে। এগুলোর জন্য কোনও মাইনিং চালান ছিল না বলে জানা গিয়েছে। ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের বিধায়ক প্রতিনিধি পঙ্কজ মিশ্রকে ১৯ জুলাই বেআইনি খননের অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছিল ইডি।
ইডি এর আগে পি এম এল এ আইন ২০০২-র অধীনে হেমন্ত সোরেনের বিধায়ক প্রতিনিধি পঙ্কজ মিশ্র, দাহু যাদব এবং তাদের সহযোগীদের ৩৭টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সহ ১১.৮৮ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করেছিল। এর আগে, ইডি সাহেবগঞ্জ, বারহাইত, রাজমহল, মির্জা চৌকি এবং বারহারওয়াতে ১৯টি জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছিল। কলকাতার প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অবৈধ বালি তোলার কাজের সঙ্গে পঙ্কজ মিশ্র ও অন্যান্যদের যোগসূত্র রয়েছে কিনা সেটি নিয়েও খোঁজ খবর চলছে বলে জানা গেছে।
এদিকে কলকাতার নয়াবাদে অর্পিতার আরো একটি ফ্ল্যাটের দিকে ইডির নজর পড়েছে। অনেকের মতে ,পার্থ কাণ্ডে একের পর এক ইডি র অভিযানের পর হয়তো বহু জায়গা থেকে টাকা,দলিল ও সোনা গহনা সরিয়ে ফেলা হয়েছে।গতকাল গভীর রাতে বারুইপুরের পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কন্যার নামে বিশাল বাগান বাড়িতে ইডি হানার আগেই দুষ্কৃতীদের আচমকা ডাকাতির পিছনেও টাকা,দলিল সরিয়ে নেবার চক্রান্ত রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। বিজেপি এবং বাম দলগুলো সেই আশংকা ব্যক্ত করেছে।
কোন মন্তব্য নেই