Header Ads

উন্নয়নের তাগিদে অসমে গ্রীনফিল্ড এয়ারপোর্ট তৈরির নামে ৩০ লাখ চা গাছ উপড়ে ফেলা হল

অমল গুপ্ত, দেশে  ক্রমাগত ভাবে বন ধ্বংস হচ্ছে। সেই সঙ্গে পরিবেশ দূষণ বেড়েই চলেছে। বন নিধন, শিল্পায়ন,  নগর উন্নয়নের কারণে গ্রিনহাউস গ্যাসের পরিমান বৃদ্ধি,  কয়লা ,গ্যাস , তেল উত্তোলনের ফলে বিশ্বের তাপ মাত্রা বেড়েই চলেছে। বিশ্বের  মোট  সম্পদের ৯০শতাংশ ভোগ করে ১০শতাংশ মানুষ।এর ফলে মানুষের ভবিষ্যৎ   অন্ধকার, ধংস হচ্ছে  বাস্তু তন্ত্র,হ্রাস পাচ্ছে  জীব বৈচিত্র্য। পরিবেশ আইন অনুযায়ী যেসব উদ্ভিদ  মাটিকে ঢেকে রাখে আচ্ছাদন দেয়,   ছায়া দেয় তাই পরিবেশ সংরক্ষনের সয়াহক।  মাটিতে সামান্য সবুজ ঘাসের আচ্ছাদন,  ঝোপ ঝাড় মাঠের ধান গাছও।তাই  অসমের প্রায় ছোট বড় ৯০০ চা বাগানের  লাখ লাখ হেক্টর জুড়ে  ৭,১০ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট চা গাছ ।পরিবেশের অঙ্গ তা অস্বীকার করা যাবে না। ১০ জুন শনিবার  এক বহুল  প্রচারিত  বাংলা সংবাদ  পত্রে   লেখা হয়েছে শুধু মাত্র ২০১৭-১৮ সালে  দেশে ৫০০বর্গ কিলোমিটার বন ভূমি নস্ট করা হয়েছে উন্নয়নের নামে  এবং উন্নয়নের প্রবল তাগিদে শিলচরে গ্রীনফিল্ড তৈরির নামে  কেন্দ্রের কাছে প্রস্তাব পাঠানোর পূর্বেই ৩০লাখ চা গাছ উপড়ে ফেলেছে প্রশাসন। কম্পেনসেটরি  আফরেস্টেশন আইন  অনুযায়ী  বন নষ্ট করার ক্ষতিপূরণ হিসাবে বনের পরিধির বাইরে সমপরিমাণ  জমিতে গাছ লাগাতে হবে। ২০৩০ সালের মধ্যে দেশে কার্বন নিঃসরনের মাত্রা বেঁধে দেওয়ার  আশ্বাস দিয়েছে । দেশের বিদ্যুত উৎপাদনে  ৭০শতাংশ কয়লা নির্ভর তাপ বিদ্যুত  কেন্দ্র। বিদেশ থেকে কয়লা আমদানি ও দেশের কয়লা খনি উত্তোলন ছাড়া সম্ভব নয়।  পশ্চিম বঙ্গে নতুন করে  এক বৃহৎ কয়লা খনি চালু করতে চাইছে। দেশের লক্ষ লক্ষ ,কোটি কোটি যান বাহন জ্বালানি তেল পুড়িয়ে কার্বন ড্রাই অক্সাইড বিষ  বাতাসে ছড়াচ্ছে ,মুক্ত আকাশ কে বিষাক্ত করছে।ঠিক তেমনি  অপরিকল্পিত কল কারখানা,কয়লা খনি র আকাশ  বাতাস নদ নদীকে দূষিত করছে। উদার প্রকৃতি প্রাণ ভরে নিঃশ্বাস নিতে পারছে না। পরিবেশ প্রকৃতির প্রধান উপাদান বন,  মাটি ও নদ নদী। ফসল উৎপাদনের নামে ব্যাপক হারে কীট নাশক ব্যবহারের ফলে  মাটির উর্বরতা নষ্ট হয়ে গেছে।বাঁজা হয়ে উৎপাদনের শক্তি নষ্ট হয়ে গেছে ।দেশে এমন কোন ভোগ্য পণ্য নেই, ফল মূল নেই যাতে রাসায়নিক বিষ মেশানো হয় না। সরকার নীরব দর্শক।  গঙ্গা,  যমুনা ,ব্রহ্মপুত্র সহ দেশের ১৪৬নদী র জল পানের অনুপযুক্ত। দূষিত হয়েছে। প্লাস্টিক সারা দেশের নদ নদী  নর্দমা কে ভরাট করছে।যার ৫০০বছরেও মৃত্যু নেই, আজ মানুষের   দেহেও  প্লাস্টিকের  মাইক্রো   কনা ঢুকে গেছে।। সরকার    জল দুধ তেল,ঘি,প্রসাধনী,  মশলার প্যাকেটের  প্লাস্টিক বন্ধ না করে,  বড় বড় প্লাস্টিক কারখানা বন্ধ না করে   স্রেফ আত্মসমর্পণ করেছে  পুঁজিবাদী  শ্রেণীর কাছে।   হলিউডের বড় বড় অভিনেতারা এলাচ   ,নেশামুক্ত জর্দার নামে নেশার  বিজ্ঞাপন করছে। কোটি কোটি টাকার  বিনিময়ে । ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের অর্ধেক বাসিন্দা জল কষ্টে ভুগবে। দেশের নীতি আয়োগ এর সতর্ক বার্তা কে দেশ বাসী গুরুত্ত দেয় না।   দেশের মানুষের পবিত্র নদী গঙ্গা তে   মরদেহ ফেলা হচ্ছে।  হাতে আর সময় নেই ভাবতে হবে  হয় উন্নয়ন না পরিবেশ ।উন্নয়নের বিকল্প পথ খুঁজতে হবে। কোন একটাকে বেছে নিতে হবে।  দেশের বিশিষ্ট পরিবেশ বিদ সুন্দল লাল বহুগুনা রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করেছিলেন দেশের কোটি কোটি   গাছ কে   ভোট দেওয়ার নাগরিকদের মত অধিকার প্রদান করা হয়। গাছেদের  বেঁচে থাকার মৌলিক অধিকার নিয়ে যেন রাজনৌতিক দল গুলো  ইস্তেহার প্রকাশ করে। গাছ  বাঁচলেই বৃষ্টি নামবে,পরিবেশ প্রকৃতি সবুজ হবে।দূষণ কমবে। সব ঠিক আছে কিন্তু দুর্নীতি পরায়ণ  লোভী মানুষগুলোকে কে নিয়ন্ত্রণ করবে?

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.