অসম সাহিত্য সভার প্রয়াস সন্দেহজনক বলছেন বি ডি এফ
বরাক বঙ্গ সহ শহরের বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক সংস্থাগুলিকে ব্রাত্য রেখে অসম সাহিত্য সভার সমন্বয়ের প্রয়াস সন্দেহজনক - বিডিএফ ।
সম্প্রতি অসম সাহিত্য সভার শিলচর শাখা ও 'সমন্বয়' নামক একটি সংস্থার যৌথ উদ্যোগে বরাক ব্রহ্মপুত্র সমন্বয়ের বার্তা দেওয়া হল। বরাকের প্রতিনিধিত্ব মুলক সাংস্কৃতিক সংগঠন গুলিকে আমন্ত্রণ না জানিয়ে এমন একটি অনুষ্ঠানের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলল বরাক ডেমোক্রেটিক যুব ফ্রন্ট।
এক প্রেস বার্তায় বিডিএফ যুব ফ্রন্টের এর মুখ্য আহ্বায়ক কল্পার্ণব গুপ্ত বলেন যে বরাক ব্রহ্মপুত্র সমন্বয় নিয়ে এদিন বিশিষ্ট অসমিয়া সাহিত্যিক সিদ্ধার্থশঙ্কর বেজবরুয়া যে বক্তব্য রেখেছেন তাঁকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি।বরাক ব্রহ্মপুত্র 'একই বৃন্তে দুটি কুসুম ' হয়ে থাক এটা আমরাও সর্বান্তকরণে চাই। কিন্তু বাংলা সহ বরাকের সব ভাষা সংস্কৃতির প্রচার ও প্রসারে দীর্ঘদিন ধরে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে আসছে বরাক বঙ্গ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক মঞ্চ, রূপম ইত্যাদি সংগঠন, যা অসম সাহিত্য সভার অজানা নয়। এদের কাউকে আমন্ত্রণ না জানিয়ে সমন্বয়ের উদ্দেশ্য কি করে চরিতার্থ হবে এটা আমাদের বোধগম্য হয়নি। তিনি বলেন যদি সমন্বয় সত্যিই উদ্দেশ্য হয় তবে বরাক বঙ্গ ও অসম সাহিত্য সভা মিলে যৌথ সভা করুক। সেটা শিলচর বা গৌহাটি যে কোনো স্থানে হতে পারে। কিন্তু সেসব না করে হঠাৎ করে গজিয়ে উঠা 'সমন্বয়' নামক এক সংগঠনের সাথে এই যৌথ উদ্যোগ সন্দেহজনক ও আমরা আশঙ্কা করছি এর পিছনে কিছু স্বার্থান্বেষীদের ন্যাস্ত স্বার্থ নিহিত রয়েছে।
কল্পার্ণব এই প্রসঙ্গে আরো বলেন যে ভাষার সাথে বরাক এবং ব্রহ্মপুত্র দুই উপত্যাকার জনগনের আবেগ জড়িত রয়েছে। সমন্বয় কাম্য হলে অসম সাহিত্য সভার কর্মকর্তাদের তা অনুধাবন করে পদক্ষেপ নিতে হবে। বরাকের দীর্ঘদিনের গনদাবি ভাষা শহীদ স্টেশন নামকরণ শুধু সরকারি অবহেলায় কার্যকর হচ্ছে না। সর্বানন্দ সোনোয়াল ভাষা শহীদ স্মারক মিউজিয়াম স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। গত পাঁচ বছরে এই ব্যাপারেও কোনো অগ্রগতি হয়নি। যদি সত্যিকারের সমন্বয় কাম্য হয় তবে অসম সাহিত্য সভাকে এইসব দাবির সমর্থনে এগিয়ে আসতে হবে। যুবফ্রন্টের মুখ্য আহ্বায়ক আরো বলেন যে ১৯৬১ এর ভাষা আইন লঙ্ঘন করে সরকারি হোর্ডিং লাগানোর প্রতিবাদে মাস কয়েক আগে বরাকে যে প্রতিবাদ সংগঠিত হয়েছিল তাঁতে সরকারের ভুমিকা নিয়ে বরাকে সর্বস্তরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। তাই আমরা সন্দেহ করছি যেহেতু আগামীতে কেবিনেট বৈঠক এখানে অনুষ্ঠিত হবে তাই সরকারি তরফে 'ড্যামেজ কন্ট্রোল' করতেই এসব লোকদেখানো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
যুবফ্রন্টের আরেক আহ্বায়ক ইকবাল নাসিম চৌধুরী বলেন যে সাহিত্য সভার সম্মেলনে সবাই আমন্ত্রিত হতেই পারেন কিন্তু এই সভায় একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের নেতাদের আধিক্য সন্দেহজনক এবং মনে হচ্ছে এর পিছনে কিছু বিশেষ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে। তিনি বলেন যে সমস্ত নেতারা এদিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন তাঁরা বরাকের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সরকারি বৈষম্য নিয়ে নীরব কেন ? কেনো বরাকের তিন লক্ষের অধিক রেজিস্ট্রিকৃত বেকার চাকরি পাচ্ছেন না, কেনো প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর পদে বরাকের প্রার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছেন এসব নিয়ে তাঁরা প্রশ্ন তুলছেন না কেনো ? ইকবাল বলেন এইসব সমস্যার সমাধান না করে শুধু মুখে সমন্বয়ের কথা বলে কোনো লাভ নেই। সমন্বয়ের জন্য দুই তরফে সদিচ্ছার প্রতিফলন চাই।
বিডিএফ যুবফ্রন্টের পক্ষ থেকে এক প্রেস বার্তায় এই খবর জানিয়েছেন দেবায়ন দেব।
কোন মন্তব্য নেই