তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধি দল ডিম হাসাও জেলার প্রাকৃতিক দুর্যোগ গ্রস্থ এলাকা সফর
নয়া ঠাহর,সম্প্রতি অসম তৃণমূল কংগ্রেসের এক প্রতিনিধি দল ডিমা হাসাও জেলার হাফলং শহরের পার্শবর্তী গ্রাম গুলি প্রদর্শন করেন। তৃণমূল নেতা চিত্তরঞ্জন পালের নেতৃত্বে এই প্রতিনিধি দলটি ডিমালিক, সঙপিজাং, বড় হাফলং, জাটিঙ্গা খাসি, মউলহয়, লোয়ার হাফলং, মহাদেব টিলা সহ অন্যান্য অঞ্চল পরিদর্শনের করেন।
অসম তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি রিপুন বরার নির্দেশে যাওয়া এই প্রতিনিধি দলটি লোয়ার হাফলং হাইস্কুল ও মউলহয় হাইস্কুলে আশ্রয় নেওয়া ক্ষতিগ্ৰস্ত মানুষের সঙ্গে দেখা করে আশ্বস্ত করেন।
তৃণমূল নেতা চিত্তরঞ্জন পাল বলেন, আপার হাফলং শহরে বন্যা ও প্রবল বর্ষণে তেমন কোন কাষতি হয় নি। যদিও নিচে গ্রাম গুলি উঁচু পাহাড় থেকে নেমে আসা ভূ স্খলনের ফলে কয়েকশো বড় বড় বিল্ডিং ভেঙে চূড়মার হয়ে গেছে। আশ্রয় শিবিরে থাকা মানুষদের একটাই প্রশ্ন "আমরা কতোদিন এভাবে শিবিরে থাকবো, নিজের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার কোনও উপায় নেই। অথচ, ওখানে নতূন করে বাড়ি ঘর বানানোরও বিকল্প পথ নেই। কারণ ধ্বস নামার ফলে জমির গুণাগুণ নষ্ট হয়ে গেছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে এমন মনে হয়েছে যে কয়েক বছর আগে নেপালে সংঘটিত ৭.৯ রিখটার স্কেলের ভূমিকম্পে চারদিক শুধু ধ্বংসস্তূপ দেখা গিয়েছিলো, ঠিক তেমনি হাফলং শহরে শুধু ধ্বংস স্তূপ বিরাজমান। অথচ এতো বড় মাপের প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরও প্রধানমন্ত্রী তো দূর অস্ত, একজন কেন্দ্ৰীয় মন্ত্ৰীও ডিমা হাসাও জেলা পরিদর্শন করতে আসেন নি।
চিত্তরঞ্জন পাল আরও বলেন, মানুষের মনে এখনও যে মানবতা বোধ রয়েছে, তা হয়তো লোয়ার হাফলং হাইস্কুলে না গেলে বোঝাই যেতো না। ১৭ই মে থেকে প্রায় দেড়শো মানুষ ওই বিদ্যালয়ে আশ্রয় গ্রহণ করেন। লোয়ার হাফলং শহরটি বাঙালি অধ্যুষিত অঞ্চল। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষয়িত্ৰী ও অন্যান্য শিক্ষক শিক্ষয়িত্ৰীরাও ক্ষতিগ্ৰস্ত মানুষের সঙ্গে একসাথে দিন রাত কাটাচ্ছেন। ডিজেষ্টার ম্যানেজম্যান্টের রিলিফ না আসা পর্যন্ত বিদ্যালয় কতৃপক্ষই তাঁদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। শহরের নিচে হকাইপুনজি গ্রামে বারো বছরের শিশু সহ আটচল্লিশ বছরের এক শিক্ষক ও বত্রিশ বছরের এক যুবক পাহাড় থেকে খসে পড়া মাটির চাপে মারা গেছেন। তৃণমূলের নেতারা ওই মৃত ব্যক্তিদের বাড়িতে গিয়ে শোকসন্তপ্ত পরিবার কে সহানুভূতি জানান। লামডিং শিলচর রেল যোগাযোগ ব্যহত। যদিও চারলেনের রাস্তা খুলেছে, তাও আবার তথৈবচ। জীবনের ঝুঁকি নেয়েই চলাফেরা করতে হয়েছে। ১৯০৩ সালে বৃটিশ ইঞ্জিনীয়ারেরা যে মিটারগেজ রেল লাইন চালু করেছিলো, তা আজও অক্ষত ও সদর্পে টিকে রয়েছে। ছোটখাটো দু একটি ভূস্খলন ছাড়া তেমন কোন বড় দুর্ঘটনা ঘটে নি। অথচ, গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি-র নেতারা জমির গুণাগুণ পরীক্ষা না করেই ভোটের লালসায় ব্রডগেজ চালু করেছে। যদিও সেক্ষেত্রে রেলওয়ে সেফটি কমিশনারের সবুজ সঙ্কেত নেওয়া হয় নিবলে অভিযোগ উঠেছে। ফলস্বরূপে, আজ ডিমা হাসাও জেলার পাশাপাশি সমগ্র বরাক উপত্যকার মানুষেরা শাপমুক্ত হতে পারছেন না। মাইবং ও লাঙটিং শহরেও রিলিফ ক্যাম্প খোলা হয়েছে। যদিও সেখানে সরকারি ত্রাণ সাহায্য পর্যাপ্ত নয় বলে অভিযোগ উঠেছে। তৃণমূলের নেতা চিত্তরঞ্জন পাল প্রতিটি ক্ষতিগ্ৰস্ত মানুষকে ভিন্ন জায়গায় জমি আবন্টন করে বাড়ি ঘর বানিয়ে দেওয়ার দাবি তুলেছে।
কোন মন্তব্য নেই