ছট পূজাতে সূর্যকে অর্ঘ্য প্রদান করল ভক্তরা
দেবযানী পাটি কর, গুয়াহাটি১১ নভেম্বর। ছট পূজা উপলক্ষে সূর্যকে অর্ঘ্য প্রদান করল ভক্তরা। এই উপলক্ষে নগরের প্রতিটি ঘাটে ভক্তের ঢল দেখা গেছে। ছট পূজা মূলত সূর্য আরাধনার উৎসব। হিন্দু দেবতাদের মধ্যে সূর্য একমাত্র দেবতা যিনি দৃশ্যমান । সূর্য সমস্ত শক্তির উৎস।পৌরাণিক কথা অনুসারে সূর্যের দুই স্ত্রী -ঊষা ও প্রত্যুষা। ছট পূজা তে সূর্যের সাথে এই দুই শক্তির আরাধনাও করা হয়ে থাকে ।সন্ধ্যা বেলা সূর্যের শেষ কিরণ প্রত্যুষা এবং প্রাতঃকালে সূর্যের প্রথম কিরনকে অর্ঘ্য প্রদান করা হয় এদিন । পারিবারিক সুখ-সমৃদ্ধি ,মনোবাঞ্ছা পূর্ণ ,পুত্র প্রাপ্তি ও সম্পত্তির জন্য ছট পূজার ব্রত পালন করা হয়ে থাকে। মূলত হিন্দিভাষী মানুষেরা এই উৎসব পালন করলেও অহিন্দিভাষীরাও যেমন অসমীয়া ,বাঙালি, নেপালিদের মধ্যে অনেকেই এই উৎসব নিষ্ঠার সাথে পালন করে থাকেন। তাই হিন্দিভাষী উৎসবের সমস্ত ব্যারিকেড ভেঙ্গে এখন এই ছট উৎসব সার্বজনীন উৎসবের পর্যায়ে পৌঁছে গেছে বলে অনেকে মনে করেন।
প্রতি বছরই নগরের বিভিন্ন ঘাট যেমন কালিপুর, বৈশিষ্ট্য, বেলতলা, ও পাণ্ডু ,চুনশালী, শুক্লেস্বর ঘাট, কছুমারীঘাট ইত্যাদি ঘাটে সূর্য উপাসনার জন্য ভক্তদের ভীড় দেখা গেছে। প্রতিটি ঘাটে ছিল ভক্তদের উপচে পরা ভীড়। বিভিন্ন ঘাটের মধ্যে পাণ্ডু ঘাটকে অন্যতম ঘাট বলে মনে করা হয়। বুধবার বিকেলে ও বৃস্পতিবার সকালে এই ঘাটে মানুষের ভিড় দেখা গেছে। সকাল থেকেই নগরের সমস্ত ঘাট গুলিকে সুন্দর করে রঙিন কাগজ ,ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। বুধবার দুপুরের পর থেকেই পূজার উপকরণ নিয়ে ধীরে -ধীরে ঘাটে পৌছতে শুরু করেছে ব্রতধারীদের সাথে লোকেরা। ছট পূজার বিভিন্ন সমিতির দ্বারা পূজার আয়োজন করা হয়েছে । বুধবার সন্ধ্যার পর পর্যন্ত ঘাটে ভক্তের ভিড় দেখা গেছে, এবং বৃস্পতিবার সকালে সূর্য ওঠার আগে থেকেই শুরু হয়েছে ভক্তদের আগমন। এই উৎসব উপলক্ষে স্বেচ্ছাসেবী ছাড়াও এনডিআরএফ, এসডিআরএফ জল পুলিশ পুলিশ ছিল সতর্ক। ঘাটে ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে এবং অস্থায়ী স্নানাগার বানানো হয়েছে। সাথে স্বচ্ছতার উপর বিশেষ ধ্যান রাখা হয়েছে। সব মিলিয়ে উৎসাহী সবাই। এর সাথে রয়েছে ছোট বাচ্চারাও। অনেক নেতা মন্ত্রীরাই এই উৎসব উপলক্ষে ঘাট পরিদর্শন করেন।
এই পবিত্র উৎসবের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হলো মাটির পাত্র, আখের গুড়, বাঁশের তৈরি ডালা ,আখ,গমের প্রাসাদ। চারদিনের এই উৎসবের মধ্যে শেষের দুই দিনের বিশেষত্ব পূর্ণ। এর সঙ্গে রয়েছে ছট পূজার লোকসংগীত।
কোন মন্তব্য নেই