Header Ads

কমলা ভাসিনের স্মরণ সভা ঘরোয়ার



।।কমলা ভাসিনের 
দক্ষিন পূর্ব এশিয়ার অন্যতম নারীবাদী ও পিতৃস্বত্বার বিরুদ্ধে আন্দোলনের প্রমুখ কমলা ভাসিনের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গত ৩রা অক্টোবর বিকেল ৫টায় ঘরোয়ার প্রেক্ষাগৃহে এক ভাবগম্ভীর স্মরন সভা আয়োজিত হয়। ২০০০ সালে ঘরোয়া প্রথম মহিলা আন্দোলনের নেটওয়র্কে সরাসরি সংযুক্ত হয়; যাদের মধ্যে জাগোরী, সঙ্গত, স্বয়ম, অ্যাকশন ইন্ডিয়া, স্বাতী,মাসুম, ক্রিয়া, নিরন্তর ও নর্থ ইষ্ট নেটওয়র্ক উল্লেখযোগ্য, এদের দ্বারা আয়োজিত কর্মশালা, প্রশিক্ষন ও সম্মেলনে অংশ নিয়ে Gender, Equity and Equality, গার্হস্থ হিংসা, পিতৃস্বত্বার মতন বিষয়ে সমৃদ্ধ হয়েছেন ঘরোয়ার কর্মী ও সদস্যদের অনেকেই। এই পরিপ্রক্ষিতে প্রোফেসর উমা ভৌমিক যিনি ঘরোয়ার নারী আন্দোলনের একটি পরিচিত মুখ তার বক্তব্যে বলেন মহিলাদের পুরুষ দ্বারা তৈরী শৃঙ্খল থেকে বেডিয়ে আসতে হবে, মনুবাদী চিন্তা ধারা থেকে মুক্ত হয়ে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে লিঙ্গ বৈষম্যহীন সমাজ যেখানে সমতা ও যোগ্যতার মাপ কাঠিতে মহিলা ও পুরুষের ক্ষমতা নির্ধারিত হবে।কমলা ভাসিন চাইতেন  সমাজে মহিলারা সমতা ফিরে পান। কমলা ভাসিন জন্ম নেন ১৯৪৬ সালে বর্তমানে পাকিস্তানের পন্জাব প্রভিন্সের শাহীদানওয়া গ্রামে, দীর্ঘদিন রাজস্হানের উদয়পুরে ‘সেবা মন্দির’ নামক  সংস্থায় কাজ করেন ও ১৯৭৬ রাষ্ট্র সংঘের FAO বা ফুড এ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজ্সনে কর্মরত ছিলেন। ২০০২ সালে অবসর নিয়ে চলে আসেন দেশে ও ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠা করেন, ‘সঙ্গত’ নামে একটি ফেমিনিষ্ট সংস্থা। ওনার সাথে ছিলেন; রুনু চক্রবর্তী, আভা ভাইয়া, গৌরী চৌধুরি,সেবা চাচ্চি, মনজরি ডিগওয়ানি ও যোগীন্দ্র পাঙ্গালের মতন নারীবাদ ব্যক্তিত্ব। 
১৯৮০ সালে পাকিস্তানের মহিলা মজলিশের আমন্ত্রণে পাকিস্তান যান, তখন জিয়া উল হকের নেতৃত্বে ডিক্টেটরশিপ চলছে, জিয়ার বিরুদ্ধে  সর্বপ্রথম ‘লড়কে লেঙ্গে আজাদী’ স্লোগান দিয়ে মহিলারা আওয়াজ তোলেন। এই আজাদী স্লোগানকে হাতিয়ার করে তিনি তার আন্দোলন শুরু করেন। ১৯৯১ সালে যাদবপুর ইউনিভার্সিটি হলে মহিলা সম্মেলনে ড্রাম বাজিয়ে গান ধরেন লড়কে লেঙ্গে আজাদী যা অনেককেই পরবর্তীতে নারীবাদ আন্দোলনে যোগ দিতে প্রেরনা যুগিয়েছিল। তার লেখা কবিতা, গান, বক্তব্যে উঠে এসেছে ; পিতৃস্বত্বা, পৌরুষত্ব,  অহিংসা ও মহিলাদের উন্নয়নের বিষয়গুলি। ১৯৯৫ সালে বেইজিং আন্তর্জাতিক মহিলা সম্মেলনে তার ভাষনের পর স্ট্যান্ডিং ওভেশন দেওয়া হয়। কিশোরীদের উপরে রচিত ‘ধমক ধম’ বইটি প্রকাশ করেন ইউনিসেফ। এ ছাড়াও তার বই, পুস্তিকা বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদিত হয় । গত ২৫শে সেপ্টেম্বর তার মৃত্যু হয় ক্যান্সারে। আজ এই সভায় বক্তব্য রাখেন প্রোফেসর নীলু পাল, রাজেশ বোস, সুনীল বিশ্বাস। স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন রুমা চৌধুরি। ঢাকায় কমলা ভাসিনের সংস্পর্শে আসা মধুমিতা দে পাল তার অভিজ্ঞতা সবাইকে জানান। মেন এনগেজের প্রতিনিধি রনয় দাস পাঠ করেন কমলাদির লেখা কবিতা। কমলা ভাসিনের লেখা ও পছন্দের সমবেত সঙ্গীত পরিবেশন করেন ; তাপসী বরুয়া, ভবানী সরকার, স্বপ্না গোপ, শুক্লা অধিকারী, মনি সাহা, অন্নপূর্ণা মালাকার, নিভা চক্রবর্তী, বন্দনা লোধ , বিন্দু দাস, মধুমিতা দে পাল, ও গিটারে ছিলেন সুমন দাস। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন রনয় দাস, সহযোগীতায় ছিলেন, কামনা রায়,দিলিপ দে , মনি মালাকার, সন্জয় শর্মা  ও সুজিত দে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.