Header Ads

বরাকের অসমিয়া স্কুল গুলিকে রক্ষা করুক সরকার:বরাক ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট



 নয়া ঠাহর, শিলচর ;খিলঞ্জিয়া এবং অসমিয়াদের অধিকার রক্ষার মেকী বাগাড়ম্বর বন্ধ করে বরাকের অসমিয়া স্কুলগুলির রক্ষায় সচেষ্ট হোক সরকার - বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট।

শিলচরের ঐতিহ্যমন্ডিত 'তরুণরাম ফুকন অসমিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়'কে বাংলা মাধ্যমের সাথে জুড়ে দেওয়া হচ্ছে বলে সম্প্রতি অভিযোগ জানিয়েছেন আসাম সাহিত্য সভা,শিলচর শাখার সাধারণ সম্পাদক।এই ব্যাপারে  বিডিএফ এর প্রতিনিধিদল আজ ' তরুণ রাম ফুকন  স্কুল কর্তৃপক্ষের সাথে দেখা করেন এবং এই সিদ্ধান্তের  প্রতিবাদ জানান।

পরে স্কুলপ্রাঙ্গনে সংবাদ মাধ্যমের সামনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিডিএফ এর মূখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায় বলেন যে আমরা জানি 'মাতৃভাষা মাতৃদুগ্ধ সম।' তাই বিডিএফ জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সবার মাতৃভাষায় শিক্ষার অধিকার সুরক্ষিত রাখতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। যেহেতু এই স্কুল বন্ধ হলে স্থানীয় অসমিয়া ছেলেমেয়েরা ইচ্ছে থাকলেও সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত হতে পারেন তাই এর প্রতিবাদে আমরা আজ এখানে মিলিত হয়েছি।

প্রদীপ বাবু বলেন যে এই স্কুলটিকে বাংলা মাধ্যমের সাথে জুড়ে দেবার যে প্রস্তাব  স্থানীয় শিক্ষা কতৃপক্ষ পাঠিয়েছেন আমরা তার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে যাতে এটি প্রত্যাহার করা হয় সেজন্য সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি। শুধু তাই নয়, আমরা এও শুনলাম যে বরাকের প্রায় দশটি অসমিয়া স্কুলেরও একই অবস্থা এবং সরকার বিশেষ উদ্যোগ না নিলে হয়তো সেগুলোই অচিরেই বন্ধ হয়ে যাবে। 

প্রদীপ বাবু বলেন যে এটা সত্যিই আশ্চর্যের বিষয় যে সরকার খিলঞ্জিয়ার অধিকার রক্ষার নামে ১৯৫১ ভিত্তিবর্ষ করে রাজ্যের এক কোটি বাঙালিদের নাগরিক অধিকার খর্ব করতে চাইছেন ,যারা বাংলাদেশী জুজুর ভয় জিইয়ে রাখতে একবার এন আর সি করে আবার প্রত্যাখান করছেন, তারা বরাকের অসমিয়া স্কুলগুলিকে রক্ষা করতে পারছেন না, যেখানে মাতৃভাষার চর্চা বন্ধ হলে জাতির অস্তিত্বই প্রশ্নচিহ্নের মুখে পড়তে পারে। এগুলোকে দ্বিচারিতা ছাড়া আর কি বলা যায় ? সমস্ত 'খিলঞ্জিয়া' ইস্যু যে তাই রাজনৈতিক স্বার্থে ,অসমিয়া ভাষা ,সংস্কৃতির প্রকৃত উন্নয়নে যে সরকার আদৌ ভাবিত নয়, এসব তারই প্রমান। 

বরাকে চাকরিসূত্রে আসা অসমিয়া লোকদের একহাত নিয়ে এদিন বিডিএফ মূখ্য আহ্বায়ক আরো বলেন যে এই উপত্যকার ৪০ শতাংশ পদে নিযুক্তি পেলেও তাঁরা তাঁদের ছেলেমেয়েদের অসমিয়া মাধ্যমে না পড়িয়ে বেসরকারি স্কুলে পাঠাচ্ছেন, অথচ ব্রহ্মপুত্র উপত্যাকায় গেলে এরাই বহিরাগতরা অসমিয়া ভাষা সংস্কৃতিকে অবলুপ্তির দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে হাল্লা চীৎকার করতে থাকেন। প্রদীপ বাবু বলেন বরাক থেকে অন্যত্র বদলি করা হলে আবার এঁরাই 'সোনার খনি ' থেকে তাদের সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে কান্নাকাটি জুড়ে দেন। তিনি বলেন এইসব দ্বিচারিতা দেখতে দেখতে আমরা অভ্যস্ত।

ফ্রন্টের আরেক আহ্বায়ক জহর তারণ বলেন যে 'তরুণরাম ফুকন স্কুল'টির অনেক সুনাম রয়েছে। জজ, ম্যাজিস্ট্রেট সহ অনেক কৃতিমান ছাত্রছাত্রী এই স্কুলের প্রাক্তনী যারা এখনো কাজ করে যাচ্ছেন। এদের কয়েকজনকে পেশাগত জীবনে সহকর্মী হিসেবে তিনি নিজেও পেয়েছেন। জহরবাবু বলেন বরাকের অসমিয়া মাধ্যম স্কুলগুলোর প্রতি নজর দিক সরকার। একই সাথে  অসমিয়া ছাত্রছাত্রীদের মাতৃভাষায় শিক্ষা নিতেও  উৎসাহিত করুক সরকার। তবেই একমাত্র অসমিয়া ভাষা সংস্কৃতি সুরক্ষিত হবে। একইভাবে ব্রহ্মপুত্র উপত্যাকায় বাঙালা স্কুলগুলোর যেভাবে দুরবস্থা চলছে তারও প্রতিবিধানে সরকারকে ্ সচেষ্ট হতে হবে বলে দাবী জানান  তিনি।

বিডিএফ মিডিয়া সেলের পক্ষ থেকে এক প্রেস বার্তায় এই খবর জানিয়েছেন আহ্বায়ক হৃষীকেশ দে ও জয়দীপ ভট্টাচার্য।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.