পাকিস্থানের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করা লড়াকু কমলা ভাসিন ক্যান্সারের কাছে হার মানলেন
আশিষ কুমার দে, বেঙ্গালুরু : গত ২৫শে অক্টোবর ভোর ৩টায় ক্যান্সারের কাছে হার মানেন লড়াকু কমলা ভাসিন।কমলা ভাসিনের জন্ম ১৯৪৬ সালে শাহীদানওয়া গ্রামে যা বর্তমানে পাকিস্তানের পন্জাব প্রভিন্সে । দীর্ঘদিন ‘সেবা মন্দির’ নামের বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত ছিলেন উদয়পুরে। পরে ১৯৭৬ সালে ফুড এ্যান্ড এগ্রিকালচার সংস্থা FAO যা রাষ্ট্রসংঘের একটি অংশ তাতে যোগদান করেন । ২০০২ সালে অবসর নিয়ে চলে আসেন দেশে ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠা করেন ‘সঙ্গত’ নামে একটি নারীবাদী সংস্থা। ওনার সাথে ছিলেন ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত ‘জাগোরী’র সদস্যদের একদল নারীবাদী, আভা ভাইয়া, রুনু চক্রবর্তী, গৌরী চৌধুরি, সেবা চাচ্চি, মনজরী ডিগওয়ানি ও যোগীন্দ্র পঙ্গাল। ১৯৯১ সালে এই ছোটখাট মহিলা যাদবপুর ইউনিভার্সিটি হলে মহিলাদের সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে ড্রাম বাজিয়ে গান ধরেন লড়কে লেঙ্গে আজাদী যার ফলে অনেককেই নারীবাদী আন্দোলনে যোগদিতে উৎসাহিত করে। তার কাছে শোনা; ১৯৮০ সালে পাকিস্তানের মহিলা মজলিশের আমন্ত্রণে লাহোর যান । তখন পাকিস্তানে একনায়কতন্ত্র চলছে, জিয়া-উল-হকের নেতৃত্বে। জিয়ার বিরুদ্ধে পাকিস্তানের মহিলারা প্রথম আওয়াজ তোলেন, লড়কে লেঙ্গে আজাদী। পরবর্তীতে তিনি এই স্লোগান বিভিন্ন আঙ্গিকে রচনা করেন; অওরত কা নারা আজাদী, বঁচ্চোন কা নারা আজাদী হম লড়কে লেঙ্গে আজাদী। তার লেখা কবিতা, গান, অডিও- ভিডিওতে উঠে এসেছে পিতৃসত্বা, পৌরুষত্ব, শান্তি, অহিংসা এবং মহিলাদের উন্নয়ন মতো বিষয়গুলি। ১৯৯৫ সালে বেজিং সম্মেলনে তার জ্বালাময়ী ভাষনের পর স্ট্যান্ডিং ওভেশন দেওয়া হয়। কিশোরীদের উপড় রচিত বই, ‘ধমক ধম’ প্রকাশ করেন ইউনিসেফ। এছাড়া তার রচিত প্রচুর বই - পুস্তিকা, গান ব্যবহার করেন দক্ষিন এশিয়ার নারীবাদীরা।
আমার সাথে প্রথম সাক্ষাত NIPCCD- দিল্লী, সেটা ২০০৩ সন । আমি লিঙ্গ বা Gender and development এর উপড় একটি ফেলোশিপ নিয়ে কাজ করতে গেছিলাম, কমলাদি ছিলেন আমার প্রশিক্ষক। গতকালও তার সাথে টুইট করে কথা হয় । আজ সকালে PUCL এর কবিতা শ্রীবাসতব জানায় উনি নেই। ২০০৬ সালে ওনার একমাত্র মেয়ের আত্মহত্যার পর উনি কিছুটা বিমর্ষ হয়ে পরেন এর সাথে ছিল মারনব্যাধি রোগের প্রভাব। গতকাল রাতে ওনারা বেশ কয়েকজন একসাথে গানও করেন। ওনার মৃত্যুতে আমরা হারালাম একজন নির্ভিক নারীবাদ কে।
কোন মন্তব্য নেই