মন্ত্রী পরিমল শুক্ল্যবৈদ্যের ব্যর্থতায় বরাকবাসী লজ্জিত, আত্মসমান বজায় রাখতে পদ্যাত্যাগ করুন, দাবি বরাক ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্টের
সংবাদ দাতা, শিলচর : সম্প্রতি আসামের মুখ্যমন্ত্রী বনবিভাগের বিভিন্ন
অকর্মন্যতা নিয়ে বিভাগীয় মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্যের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ক্ষোভ
প্রকাশ করেছেন এবং এবং এই বিভাগের কিছু গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব অন্য মন্ত্রকে অর্পণ
করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বরাকের একমাত্র মন্ত্রীর এই ব্যার্থতার পরিপ্রেক্ষিতে
এবার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করল বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট।
এক প্রেস বার্তায় বিডিএফ এর মূখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ
দত্তরায় এই ব্যাপারে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন যে মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্যের
স্বচ্ছ ভাবমূর্তি ও কর্মদক্ষতার ব্যাপারে বরাকের নাগরিকরা খুবই আশাবাদী ছিলেন।
কিন্তু কার্যক্ষেত্রে তা অপূর্নই থেকে গেল। তিনি বলেন এটা বুঝতে পেরেছিল বলে আগেই
এই ব্যাপারে মুখ খুলেছিল বিডিএফ। এবং তা যে ভূল ছিলনা মূখ্যমন্ত্রীর
সাম্প্রতিক প্রতিক্রিয়াতে তাই প্রমানিত হল।
বিডিএফ মূখ্য আহ্বায়ক এই প্রসঙ্গে বলেন যে মূখ্যমন্ত্রী
যেভাবে পরিমলবাবুকে প্রকাশ্য মঞ্চে বসিয়ে তার সমালোচনা করেছেন তাতে বরাকবাসী
লজ্জাবোধ করেছেন। তিনি বলেন যে বনবিভাগের বিভিন্ন দায়িত্বপালনে ব্যার্থ হওয়ার
জন্যই বরাকের এই একমাত্র মন্ত্রীকে এভাবে অপদস্থ করা হয়েছে। নগাঁও জেলার বামুনিপাহাড়ে
একসাথে ১৮ টি হাতির মৃত্যুর কারণ খুঁজে বের করতে এবং তার জন্য দায়ী আধিকারিকদের
শাস্তি দিতে সম্পূর্ণ ব্যার্থ হয়েছেন মন্ত্রী এবং এই ঘটনার জন্য আন্তর্জাতিক
স্তরে আসাম তথা দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। একইভাবে বালি এবং পাথরের মহালের
অবৈধ বানিজ্য রুখতেও ব্যার্থ মন্ত্রী পরিমল যার জন্য সরকার প্রতিবছর ২৫০০ কোটি
টাকা রাজস্ব প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়েছে। তাই মূখ্যমন্ত্রী বাধ্য হয়ে রাজ্যের
বালি এবং পাথর মহালের দেখভালের দায়িত্ব বনমন্ত্রক থেকে সরিয়ে খনি ও খনিজ সম্পদ
মন্ত্রকের অধীনে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এছাড়া আগামীতে আবগারি দপ্তরও তার
থেকে কেড়ে নিয়ে পুলিশ বিভাগের হাতে অর্পণ করা হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। বিডিএফ
মূখ্য আহ্বায়ক বলেন যে এসবই পরিমল বাবুর অকর্মন্যতার জন্য হচ্ছে এবং এটা বরাক বাসী
তথা রাজ্যের বাঙালি সমাজের জন্য সুখকর নয়।
প্রদীপ বাবু
আরো বলেন যে বিজেপির এই বিধায়কের সততা ও স্বচ্ছ
ভাবমূর্তি নিয়ে অনেকেই নিঃসন্দেহ ছিলেন কিন্তু তাও ভূল প্রমাণিত হয়েছে। তার
নিজস্ব ড্রাইভার কাজল দত্তের রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হওয়া এবং পরবর্তীতে আজ অব্দি
এই ব্যাপারে তার নীরব ভূমিকা নিয়ে আগেই পরিমল বাবুর ভাবমূর্তি তলানিতে পৌঁছেছে।
তিনি বলেন এই ব্যাপারে একমাত্র পুত্রহারা মায়ের কান্না বিডিএফ সদস্যরা সচক্ষে
দেখেছেন এবং তা নিয়ে প্রতিবাদী হয়েছেন।
এছাড়াও পরিমল বাবুর ঘনিষ্ঠ এবং স্নেহধন্য দুই বিজেপির নেতা
অনেক দিন ধরে তার সমষ্টিতে ক্ষমতা কাটিয়ে গরীবদের জমি আত্মসাৎ করে চলেছেন বলে
গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এবং এও স্পষ্ট যে মন্ত্রীর পরোক্ষ মদত না থাকলে তারা এভাবে
কোটি কোটি টাকার জমি কেলেঙ্কারি করতে পারতেন না। এছাড়া রোজকান্দি চা বাগানের যে
৫০০ বিঘা জমিতে পরিমল বাবুর ফিশারি রয়েছে তাও কিভাবে হাসিল করা হয়েছে তা নিয়েও
অনেক অভিযোগ উঠেছে।
বিডিএফ মূখ্য আহ্বায়ক বলেন যে পরিমলবাবু জনপ্রতিনিধি তথা
একমাত্র মন্ত্রী হিসেবে সর্বার্থেই এতদঅঞ্চলের জনগনের আশা আকাঙ্খা পূরণে ব্যার্থ
হয়েছেন। এই উপত্যকায় কৃষ্ণেন্দু পাল,
দীপায়ন চক্রবর্তী বা কৌশিক রায় সহ বিজেপির
অনেক বিধায়ক রয়েছেন যারা বয়সে নবীন এবং উদ্যমী। তাই তার উচিত স্বেচ্ছায়
পদত্যাগ করে তাদের মন্ত্রীত্বের সুযোগ করে দেওয়া। তাতে তারও মান কিঞ্চিৎ হলেও
বাঁচবে এবং আগামীতে বরাকেরও মঙ্গল হবার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি বলেন এটাই এই সময়ের
গনদাবি।
বিডিএফ মিডিয়া সেলের পক্ষ থেকে এক প্রেস বার্তায় এই খবর
জানিয়েছেন আহ্বায়ক হৃষীকেশ দে ও জয়দীপ ভট্টাচার্য।
কোন মন্তব্য নেই