গানে কারুকাজে অনন্য নজীর তরুনী সুস্মিতার
নয়া ঠাহর প্রতিনিধি, আগরতলা : কোন জিনিসপত্রই ফেলনা নয় সুস্মিতার কাছে। চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অব্যবহৃত নানান ফেলনা জিনিস, বাড়ী ঘরে পড়ে থাকা নানান কিছুর অবশেষ কিংবা পথের ধারে অবহেলায় পড়ে থাকা নুড়ি পাথরের গায়ে শৈল্পিক ছোঁয়ায় দৃষ্টিনন্দন রকমারি জিনিস তৈরি করছেন সুস্মিতা। তার হাতের তৈরি জিনিসগুলি ব্যবহৃত হচ্ছে ঘর সাজানোর উপকরণ, প্রিয়জনকে দেবার মত অমূল্য উপহার হিসাবে। ৬/৭ বছর ধরে এমন ব্যতিক্রমী কাজ করছেন ত্রিপুরার শিল্পী সুস্মিতা চক্রবর্তী। প্রথাগত ভাবে এই কাজগুলি কারো কাছ থেকে না শিখলেও ছোটবোন চিত্রশিল্পী সুদীপার নানান শৈল্পিক কাজ দেখেই অনুপ্রাণিত হয়েছেন। আগরতলার ভট্রপুকুরের মেয়ে বর্তমানে দক্ষিণ জেলার বাইখোড়ার গৃহবধূ সুস্মিতার শৈল্পিক পরশে সৃষ্ট কারুকার্যগুলি দারুনভাবে সমাদৃত হচ্ছে বিভিন্ন মহলে। এতদিন সময় কাটানোর ছলে করা নিজের কারুকাজকে রোজগারের মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার করে স্বাবলম্বী হওয়ার চিন্তাও মাথায় আনছেন সুস্মিতা। সুস্মিতা চক্রবর্তী মূলতঃ সংগীত শিল্পী। বেতার, দূরদর্শণেও শোনা যায় সুস্মিতার শ্রুতিমধুর গলা।সংগীত শিক্ষার হাতেখড়ি বাবা দিলীপ চক্রবর্তী'র কাছে। বিশিষ্ট সঙ্গীত গুরু প্রয়াত ননী গোপাল চক্রবর্তী, ডক্টর রবীন্দ্র ভরালি, রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী তিথি দেব্বর্মন ও কলকাতার কণ্ঠশিল্পী পন্ডিত শান্তনু ভট্টাচার্যের কাছেও গানের তালিম নিয়েছেন । ২০১৭সালে ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সঙ্গীত বিভাগে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করে শান্তিনিকেতন বুনিয়াদী শিক্ষক শিক্ষণ কলেজ থেকে সঙ্গীতে বি. এড করেন সুস্মিতা। ২০১৫-১৬ সালে বঙ্গীয় সংগীত পরিষদের রবীন্দ্র সংগীত বিষয়ে সর্বভারতীয় স্তরে প্রথম হয়ে "সংগীত রত্ন" উপাধিও পায় সুস্মিতা। সঙ্গীতের পাশাপাশি কারুকাজেও বিশেষ দখল রয়েছে তাঁর। শুকিয়ে পড়া তুলসী গাছের ডগা থেকে শুরু করে ফেলে দেওয়া অবশেষকে গ্রহণযোগ্য করে তোলার নেশাটা ছোট বেলা থেকেই মাথায় চেপে বসে সুস্মিতার । হাতের নাগালে পাওয়া অতি সাধারণ দ্রব্য সামগ্রী, কাঠের টুকরো, বাঁশ, নুড়ি পাথর,কাগজ, বাক্স সঙ্গে সামান্য রঙ লাগিয়ে তৈরি করা উৎপাদিত দ্রব্যগুলো মূলত ঘর সাজানোর উপকরণ। একান্ত শখের নেশায় তৈরি করা কারুকাজগুলি পেশাগত ভাবেও যথেষ্ট গুরুত্ব পেতে পারে। দেশের এই কর্মসংকটময় সময়ে জীবিকার মাধ্যমও হতে পারে সুস্মিতার কারুকাজগুলি।









কোন মন্তব্য নেই