বরাকে টিকাকরণ নিয়ে চূড়ান্ত অরাজকতা চলছে
সংবাদদাতা, শিলচর : টিকাকরণের দাবিতে বিডিএফ
এর বিক্ষোভ কর্মসূচীকে ভেস্তে দেবার চেষ্টা প্রশাসনের, জেলাশাসক কার্যালয় ছেড়ে
ক্ষুদিরাম মূর্তির পাদদেশে জড়ো হয়ে প্রতিবাদ জানালেন ফ্রন্টের সদস্যরা।
বরাক উপত্যকায় কোভিড টিকাকরণের ক্ষেত্রে চূড়ান্ত
অব্যাবস্থা চলছে। এর প্রতিবাদে আজ বিক্ষোভে সামিল হলেন বিডিএফ সদস্যরা।
এদিন বিডিএফ এর পক্ষ থেকে প্রথমে অতিরিক্ত জেলাশসকের
মাধ্যমে এই ব্যাপারে মূখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে এক স্মারকলিপি তুলে দেওয়া হয় । পরে
জেলাশাসক কার্যালয়ের সামনে হাতে প্রতিবাদী পোস্টার নিয়ে স্লোগান দেবার সময়
কর্তব্যরত পুলিশ কর্তারা ১৪৪ ধারার অজুহাত দেখিয়ে এই কর্মসূচীতে বাধা দেন। এমনকি
তারা ছবি তোলা এবং সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতেও দেননি। পরে বাধ্য হয়ে বিডিএফ
কর্মকর্তারা ক্ষুদিরাম মূর্তির পাদদেশে তাদের প্রতিবাদ সাব্যস্ত করেন।
পরে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে গিয়ে ফ্রন্টের মিডিয়া
সেলের আহ্বায়ক জয়দীপ ভট্টাচার্য বলেন যে টিকাকরণের ব্যাপারে সরকারি পরিকল্পনা
চূড়ান্তভাবে ব্যার্থ হয়েছে। তিনি বলেন যে বরাক উপত্যকায় রাত বারোটা থেকে লাইনে
দাড়িয়ে সকালে নাগরিকরা জানতে পারছেন যে ভ্যাক্সিন দেওয়া হবেনা। লাইনে দাড়াতে
হচ্ছে বৃদ্ধ থেকে শাররীক ভাবে অসুস্থ নাগরিকদেরও। তিনি বলেন এই ধরণের অরাজকতা চলতে
পারেনা। মূখ্যমন্ত্রী কিছুদিন আগে ফলাও করে বললেন যে রাজ্যে দৈনিক তিন লক্ষ ডোজ
দেওয়া হবে এবং পনের অগাস্টের মধ্যে সবার প্রথম ডোজ শেষ করা হবে। কিন্তু বর্তমানে
দৈনিক ২০০০০ ডোজও দেওয়া হচ্ছেনা। কাছাড় জেলায় গত তিনদিন ধরে ভ্যাক্সিন উপলব্ধ
নেই। জয়দীপবাবু বলেন কোভিডের আগামী ঢেউকে রোখার একমাত্র উপায় গনটিকাকরণ। কিন্তু
তা না করে বারবার দীর্ঘ লকডাউন জারি করে সরকার আম নাগরিক, বিশেষতঃ যাদের ' দিন আনি দিন খাই' অবস্থা তাদের আরো শোচনীয়
অবস্থার মধ্যে ঠেলে দিচ্ছেন। তিনি বলেন সারা রাজ্য তথা বরাকে এখনও ৩০ শতাংশেরই
টিকাকরণ হয়নি। এভাবে চললে এই প্রক্রিয়া শেষ হতে কয়েক বছর লেগে যেতে পারে। এবং
সেইক্ষেত্রে কোভিড পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ কখনই সম্ভব হবেনা। বিডিএফ মিডিয়া সেলের
আহ্বায়ক বলেন যে আসামের বর্তমান মূখ্যমন্ত্রী যথেষ্ট ক্ষমতাবান বলে খ্যাত। তিনি
কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে বৈঠক করে অবিলম্বে বরাক উপত্যকা সহ গোটা রাজ্যের
গনটিকাকরণ প্রক্রিয়া তে গতি আনুন। অন্যথা এই ইস্যুতে আবার পথে নামবে বিডিএফ।
বিডিএফ যুবফ্রন্টের আহ্বায়ক কল্পার্ণব গুপ্ত বলেন যে এর
আগে পেট্রোপন্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বিডিএফ এর প্রতিবাদ কর্মসূচীর জন্যই
রাজ্যে ১৪৪ ধারা জারি করেছিল জেলা প্রশাসন। এবং আজকেও তাই পরিকল্পিতভাবে জেলাশাসক
কার্যালয়ের সামনে বিডিএফ এর বিক্ষোভ কর্মসূচীকে ভেস্তে দিতে উদ্যোগ নিল পুলিশ
প্রশাসন। তিনি বলেন যেখানে জেলায় লকডাউনে এতটা ছাড় দেওয়া হচ্ছে সেখানে ১৪৪ ধারা
জারি করার পেছনে এটাই অন্যতম কারণ। তিনি বলেন এইভাবে নাগরিকদের প্রতিবাদ করার
গনতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিতে চাইছে প্রশাসন তথা সরকার । কল্পার্ণব বলেন বিডিএফ
এর শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচীকে এইভাবে কখনোই আটকানো যাবেনা। নায্য দাবিতে
আন্দোলন চলবেই। তারজন্য যদি ভবিষ্যতে গ্রেফতারবরণ করতে হয় তাতেও 'কুছ পরোয়া নেই'। একই সাথে অবিলম্বে
ভ্যাক্সিনের পর্যাপ্ত যোগান নিশ্চিত করা এবং বয়স্কদের ঘরে ঘরে গিয়ে টিকাকরণের
দাবি জানান তিনি। বিডিএফ সদস্যরা এদিন বলেন যে সরকার যদি ঘরে ঘরে মদ পৌঁছে দেবার
উদ্যোগ নিতে পারে তবে অবশ্যই বাড়ি বাড়ি গিয়ে টিকাকরণের ব্যাবস্থাও করা উচিত।
এদিনের কর্মসূচীতে অন্যান্যদের মধ্যে সামিল ছিলেন ফ্রন্টের
মূখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায় ও আহ্বায়ক জহর তারণ সহ দেবরাজ দাশগুপ্ত,হৃষীকেশ দে, সমর ভট্টাচার্য, অমিত চৌধুরী, দেবায়ন দেব,কুনাল নাগ,রিপন দাস,সঞ্জয় পুরকায়স্থ প্রমূখ।
বিডিএফ মিডিয়া সেলের পক্ষ থেকে এক প্রেস বার্তায় এই খবর জানিয়েছেন আহ্বায়ক হৃষীকেশ দে।









কোন মন্তব্য নেই