Header Ads

বাজেটে বরাক বঞ্চিত, প্রতিবাদে সরব বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট, বরাক বঙ্গ ও খুশি নয়

নয়া ঠাহর সংবাদদাতা, শিলচর : বাজেট পরিকল্পনা ও অন্তর্ভুক্তির জন্য রাজ্যের  জনগনের তরফে প্রয়োজনীয় প্রস্তাব চেয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী এবং সেই অনুযায়ী বরাকের উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ২০ টি দাবি অর্থমন্ত্রীর কাছে পেশ করেছিল বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট। কিন্তু তার একটিও ২০২১-২২ বাজেট প্রস্তাবে অন্তর্ভুক্ত না হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে মুখ খুল বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট।

এক রেকর্ডেড প্রেস বার্তায় বিডিএফ এর মুখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায় বলেন যে এই  বাজেট আমাদের সর্বার্থে আশাহত করেছে কারণ একমাত্র মিনি সচিবালয় ছাড়া এই বাজেটে আর কোন প্রকল্পের উল্লেখ নেই যা বরাকের বাসিন্দাদের আশা আকাঙ্খাকে কিছুটা হলেও পূরণ করতে পারে। তিনি বলেন বিডিএফ এর পাঠানো প্রস্তাবগুচ্ছের মধ্যে শিলচর মেডিকেল কলেজকে সুপার স্পেশালিটি স্তরে উন্নীত করা এবং করিমগঞ্জ মেডিকেল কলেজ স্থাপনের প্রস্তাব ছিল ।তিনি বলেন যে  প্রতিটি বরাক বাসী জানেন যে এই দুই বিষয় কতটা গুরুত্বপূর্ণ কারণ এ তাদের জীবন মরণের সাথে জড়িত। কিন্তু এবারের বাজেটে রাজ্যে নতুন আরো পাঁচটি মেডিকেল কলেজ স্থাপনের প্রস্তাব থাকলেও বরাকের বহুদিনের এই দুই দাবিকে কোনো গুরুত্ব দেওয়া হলনা যা দুর্ভাগ্যজনক।প্রদীপ বাবু বলেন এছাড়া কাছাড় কাগজ কলের পুনরুজ্জীবন এর ব্যাপারেও যে সরকারের কোনো পরিকল্পনা নেই তাও এই বাজেট প্রস্তাব থেকে স্পষ্ট হয়ে পড়ল।বিডিএফ আহ্বায়ক আরো বলেন যে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী এবং পেট্রোপন্যের  অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি কমাতেও এই বাজেটে কোন প্রস্তাব রাখা হয়নি। তাই প্রান্তিক জনগনের কল্যানে যেসব প্রকল্পের ব্যয় বাড়ানো হয়েছে তাতে  কোনো উন্নতিই সূচিত হবেনা কারণ এই 'লাভের গুড় পিপড়ে খেয়ে নেবে'। বরঞ্চ ভোজ্য তেল থেকে শুরু করে বিভিন্ন পন্যের যেহারে মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে তাতে প্রান্তিক নাগরিকদের অবস্থা আগামীতে আরো খারাপ হবার সম্ভাবনা রয়েছে।প্রদীপ বাবু বলেন যে শিলচরের জন্য একটি চিড়িয়াখানার প্রস্তাব রাখা হয়েছে যা কি কাজে লাগবে তার বোধগম্য হয়নি। বরং এরচেয়ে বিডিএফ এর প্রস্তাব অনুযায়ী শিলচর শশ্মানে একটি বৈদ্যতিক চুল্লীর জন্য অর্থবরাদ্দ করলেও তাতে  এক বৃহৎ সংখ্যক মানুষ উপকৃত হতেন।

বিডিএফ এর অপর দুই আহ্বায়ক পার্থ দাস ও জহর তারণ বলেন যে ক্ষুদ্রঋণ মকুব বা অরুনোদয় প্রকল্পে ভাতাবৃদ্ধি এসব করে কখনই রাজ্যের স্থায়ী সম্পদ  বা স্বনির্ভরতা বৃদ্ধি হবেনা। এসব শুধু আগামী লোকসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে সরকারের জনমোহিনী উদ্যোগ। তারা বলেন যে শিলচর শহরের যানজট সমস্যা দিনে দিনে ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। বিডিএফ সেজন্য বৃহত্তর শিলচরের চারদিক দিয়ে একটি রিংরোড নির্মান ও প্রস্তাবিত উড়াল পুল নির্মানের দাবি জানিয়েছিল। কিন্তু বাজেটে পাঁচটি নতুন রাস্তা নির্মানের প্রস্তাব থাকলেও রাজ্যের এই দ্বিতীয় বৃহত্তম শহরের এই জ্বলন্ত সমস্যাকে ধর্তব্যের মধ্যেই আনেননি বর্তমান অর্থমন্ত্রী। এছাড়া তিনটি জেলায় সিভিল হাসপাতালের উন্নতিকল্পে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দেওয়া সত্ত্বেও এই ব্যাপারেও নীরব থেকেছেন মুখ্যমন্ত্রী।তারা আরো বলেন যে শিলচর এবং করিমগঞ্জ শহরের মাস্টার ড্রেনেজ প্রকল্প বা বিশুদ্ধ পানীয় জলের বন্দোবস্ত করতে সরকারের যে আগ্রহ নেই তাও বোঝা গেল এই বাজেট প্রস্তাব থেকে।

বিডিএফ সদস্যরা এদিন বলেন যে যেহেতু বাজেটের ব্যাপারে পূর্বনির্ধারিত সিদ্ধান্ত নেওয়া ছিল তাই এভাবে মতামত চেয়ে বরাক তথা অন্য প্রান্তের সচেতন নাগরিকদের হেনস্থা ও অপমান করার কোনো প্রয়োজন ছিলনা। তারা আরো  বলেন যে এইভাবে ক্রমাগত বঞ্চিত হতে হতে হতে বরাকের বাসিন্দারা যদি  অন্য কোনো বিকল্পের কথা ভাবে তাতে তাদের মোটেই দোষ দেওয়া যায়না। কারণ এরজন্য প্রকারান্তরে দিশপুরের বৈষম্যমূলক মনোভাবই ১০০ শতাংশ দায়ী।

বিডিএফ মিডিয়া সেলের পক্ষ থেকে এক প্রেস বার্তায় এই খবর জানিয়েছেন আহ্বায়ক হৃষীকেশ দে ও জয়দীপ ভট্টাচার্য।এদিকে বরাক উপত্যকার অগ্রণী  সংস্থা  বরাক  বঙ্গ  র পক্ষ্যে কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গৌতম প্রসাদ দত্ত  জানিয়েছেন তারাও  বরাকের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে অর্থমন্ত্রী অজন্তা নেওগ কে এক  স্মারকপত্র দিয়েছিল। সাংসদ রাজদীপ রায় কেও তা জানানো হয়েছিল।   দত্ত অভিযোগ করেন তাদের আশা পূরণ হয় নি।চলিত বিধানসভাতে দেখা গেছে বিজেপি দলের সদস্যরা বরাকের দাবি নিয়ে মোটেই সরব নয়।ব্যতিক্রম সেই    কংগ্রেস দলের  তথা বরাকের এক মাত্র প্রতিবাদী কণ্ঠ  কমলাখ্য দে পুরকায়স্থ।

 


কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.