এ পর্যন্ত ৮৫ লক্ষ ডোজ ভ্যক্সিন দেওয়া হয়েছে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী কেশব মহন্ত
অমল গুপ্ত, গুয়াহাটি ঃ আজ অসম বিধাসভায় প্রশ্নোত্তর
পর্বে স্বাস্থ্যমন্ত্রী কেশব মহন্ত রাজ্যবাসীকে আশ্বস্ত করলেন রাজ্যে করােনা
প্রতিষেধক ভ্যাক্সিনের কোনাে অভাব নেই। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদির কাছে রাজ্যে ভ্যাক্সিনের জন্য আর্জি জানান।
প্রধামন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বলেন, এপর্যন্ত রাজ্যবাসীকে ৮৫ লক্ষ
ভ্যাক্সিন দেওয়া হয়েছে। অন্য রাজ্য থেকে কোনাে অংশেই কম নয়। কংগ্রেসের ভরত নরহ
এবং অন্যান্যরা ভ্যাক্সিনের অভাবের কথা তুলে ধরলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী তা মানতে রাজি
হলেন না। তিনি অভিযােগ করেন, অনেক এলায়ায় আশাকর্মী, পঞ্চায়েত কর্মীকে দিয়ে প্রচার
চালিয়ে ভ্যাক্সিন দেওয়ার প্রচেষ্টা করা। হচ্ছে। ভ্যাক্সিনের বিরুদ্ধে অনেক গুজব
ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বিধানসভা থেকে এই ধরনের বার্তা
যাওয়া উচিত নয়। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি জেলায় সব দলের
বিধায়কদের আস্থার মধ্যে নিয়ে ভ্যাক্সিন দেওয়া হচ্ছে। বিজেপি বিধায়ক রূপক শৰ্মা
আর্জি জানান, প্রতিজনের
ঘরে ঘরে গিয়ে ভ্যাক্সিন দেওয়ার ব্যবস্থা করা হােক। আজ বিধানসভায় তেরশ গােয়ালার
এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, ২০২১-র ১ এপ্রিল থেকে ১০ জুলাই
পর্যন্ত রাজ্যে কোভিডের সংখ্যা ছিল ৩,১৩,৬৭২ জন, আরােগ্য হওয়ার সংখ্যা ছিল ২,৮৯,২৭৮ জন আর মৃত্যু হয়েছিল
৪৮১২জনের। ১১ জুলাই থেকে আজ পর্যন্ত রাজ্যে ৬৫,৭৭,৬৪৯ জনকে ভ্যাক্সিনের প্রথম
ডােজ দেওয়া হয়েছে। ১৩,৪৬,৯৯২ জনকে দ্বিতীয় ডােজ দেওয়া
হয়েছে। মােট ৭৯,২৪,৬৪১ জনকে ভ্যাক্সিন দেওয়া
হয়েছে। পয়লা এপ্রিল থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত কাছাড় জেলায় ১৬৫৬৪ জন পজিটিভ কেস
পাওয়া গিয়েছে এবং ২৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। হাইলাকান্দিতে ৪,২৩৩ জন পজিটিভি কেস। পাওয়া
গিয়েছে এবং ৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে। হােজাইয়ে ৪,৯৬৫ জনের পজিটিভ ও মৃত্যু
হয়েছে ১১১ জনের। যােরহাট জেলায় ১২,০৯৭ জন পজিটিভি ও ২৬৩ জনের
মৃত্যু হয়েছে। কামরূপ মেট্রোতে ৫৫,৭৪৪ জনের পজিটিভ ও ৯৪০ জনের
মৃত্যু হয়েছে। কাৰ্বি আংলঙে ৫,৫১৯ জনের পজিটিভ পাওয়া গেছে এবং
মৃত্যু হয়েছে ১১১ জনের। করিমগঞ্জ জেলায় ৫,৯৭২ জনের পজিটিভ ধরা পরেছে ও
মৃত্যু হয়েছে ৯৫ জনের। নগাঁও জেলায় ১৭,৫১১ জনের পজিটিভ পাওয়া গিয়েছে
ও মৃত্যু হয়েছে ২১৪ জনের। তিনসুকিয়া জেলায় ১৫,৩৩২ জনের পজিটিভ ধরা পড়েছে এবং
মৃত্যু হয়েছে ২৯১ জনের। পশ্চিম কাৰ্বি আংলঙে ৯৪৫ জনের পজিটিভ কেস ধরা পড়েছে এবং
৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। ডিব্ৰুগড় জেলায় ২১,৬১৬ জনের পজিটিভ ধরা পড়েছে ও
৪৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আজ অসম বিধানসভায় বিধায়ক বিদ্যাসিং ইংলেং-এর এক
প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী কেশব মহন্ত জানান, অসমে ২০২১ সালের ১০ জুলাই
পর্যন্ত মােট কোভিড়ে আক্রান্ত হয়েছে ৫,৩৩,৬৬৩ জন। ২০২১-র ১০ জুলাই
পর্যন্ত ৯৫.১০ শতাংশ হারে রাজ্যে ৫,০৭,৫১৬ জন কোভিড রুগী সুস্থ্য হয়ে
উঠেছে। ১০ জুলাই পর্যন্ত রাজ্যে মােট ১,৬১,০১,৩১৫ জনকে কোভিড টেষ্ট করা
হয়েছে এবং ৩.৩১ শতাংশ হারে ৫,৩৩,৬৬৩ জনকে কোভিড রুগী হিসাবে
শনাক্ত করা হয়েছে। বয়স অনুযায়ী ০-৫ বছর বয়সের মধ্যে ৯৪২৬ জন আক্রান্ত হয়েছে
এবং মৃত্যু হয়েছে ২৬ জনের। ৬-১৮ বছর বয়সের ক্ষেত্রে ৪৫৫৬৯ জনের কোভিড ধরা পড়েছে
এবং মৃত্যু হয়েছে ২৯ জনের। ১৯-৩০ বছর বয়সের মধ্যে ১৪৬৪২৪ জনের কোভিড ধরা পড়েছে
এবং মৃত্যু হয়েছে ১৭০ জনের। ৩১-৪৫ বয়সের মধ্যে ১৬৪৪৫৮ জন কোভিড আক্রান্ত হয়েছে
এবং ৮১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। ৪৬-৬০ বছর বয়সের মধ্যে ১০৭৫২২ জনের কোভিড ধরা পড়েছে
এবং ১৫৮৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। ৬১-৭৫ বছর বয়সের মধ্যে ৩৬৩৬২ জনের কোভিড়ে আক্রান্ত
হয়েছে এবং ১৫৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। ৭৬ বছর বয়সের ওপরে ৭৪৩৩ জনের কোভিড ধরা
পড়েছে এবং ৬১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাজ্যের সর্বমােট ৫১৭১৯৪ জন কোভিড রােগে
আক্রান্ত হয়েছে এবং ৪৮১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। তিনি জানান, বর্তমানে অসমে ডেল্টা প্লাস
ভেরিয়েন্টর কোভিড রােগী একটাও ধরা পড়েনি। রাজ্যের সব কটি জেলায় এসিএসপি-র অধীনে
স্ক্রিনিং করে কোভিড আকান্ত সকলের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। প্রতিদিন কমেও এক লক্ষ
লােককে কোভিড পরীক্ষা হেয়েছে। চিকিৎসালয়গুলাে আইসিইউ বিছানা ও অক্সিজেনের যােগান
বাড়ানাের প্রচেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, অসমে বর্তমানে সাত জন ব্ল্যাক
ফাংগাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং তাদের দু’জন ইতিমধ্যে সুস্থ হয়ে ঘরে
ফিরে গিয়েছে। একজনের চিকিৎসা চলছে ও চারজন রােগীর মৃত্যু হয়েছে। আজ বিধানসভায়
কংগ্রেস পরিষদীয় দলনেতা দেবব্রত শইকিয়ার এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী
কেশব মহন্ত জানান, অসমে
প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ে মােট ৪,৬২,০০,০০০ কোভিড প্রতিষেধক টিকার
প্রয়ােজন আছে। ৩০ জুন পর্যন্ত ৫৭,৯০,৯২১ জনকে প্রথম ডােজ ভ্যাক্সিন, দ্বিতীয় ডােজ দেওয়া হয়েছে ১২,৩০,৪০১ জনকে।
আজ বিধানসভায় শিলচরের বিজেপি
বিধায়ক দিপায়ন চক্রবর্তীর এক প্রশ্নের জবাবে শহর উন্নয়ন মন্ত্রী অশােক সিংহল
জানা, শিলচর
শহকে বন্যা কৃত্রিম বন্যা থেকে বাঁচনাে জন্য শিলচর টাউনকে সিটি ইনফ্রা ডেভেলপমেন্ট
ফান্ডের অধীনে আনা হয়েছে। লরেন্স ইসলারীর এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী
জানান, কোকরাঝাড়
মেডিক্যাল কলেজ ২০২২ সালের ৩১ মের মধ্যে সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। কংগ্রেসের কমলাক্ষ্য
দে পুরকায়স্থের এক প্রশ্নের জবাবে অশােক সিংহল জানান, করিমগঞ্জ পুরসভা এলাকায়
ডেলিমিটিয়েশন করা হয়েছে। ২০২০-র অক্টোবর মাসে তা করা হয়। রাজ্যের পুরসভা ছাড়াও
সাধারণ এলাকায় ডেলিমিটিয়েশন করা হবে।
কোন মন্তব্য নেই