৭৮ জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় ৯০ শতাংশ কোটিপতি, ৪২ শতাংশের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা ঝুলছে
নয়া
ঠাহর প্রতিবেদন, গুয়াহাটি : কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার ৭৮ জন মন্ত্রীর মধ্যে ৯০ শতাংশ
ধনী শ্রেণীর কোটিপতি। এসসিয়েশন অফ ডেমোক্র্যাটিক
রিফর্মস রিপোর্টে এই তথ্য ধরা পড়েছে। সবচেযে ধনী
মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া তাঁর সম্পত্তির পরিমান ৩৭৯ কোটি টাকা। সব চেয়ে গরিব মন্ত্রী ত্রিপুরার
প্রতিমা ভৌমিক তার সম্পত্তির পরিমান মাত্র ৬ লাখ টাকা, দ্বিতীয় গরিব মন্ত্রী বঙ্গের জন বারলা, তার সম্পত্তির পরিমান ১৪ লাখ
টাকা। এই রিপোর্ট অনুযায়ী শিক্ষাগত যোগ্যতার নিরিখে ২১ জন এম এ পাশ, ৯ জন
ডক্টরেট, ১৭ জন বি এ
পাশ, ২ জন ক্লাস এইট পাশ, ৩ জন দশম শ্রেণী, ৭ জন
দ্বাদশ শ্রেণী পাশ। এই রিপোর্ট বলছে, ৪২ শতাংশ
মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে। তার মধ্যে ২৪ জনের
বিরুদ্ধে খুন, খুনের চেষ্টা ও ডাকাতির মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।
সবে
মাত্র দ্বিতীয় মোদি সরকারের প্রথম রদবদল ও সম্প্রসারণ ঘটেছে। এরই মধ্যে সামনে চলে
এল চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট। অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস (এডিআই)-এর এই
রিপোর্ট অনুযায়ী, মোদি সরকারের ৯০ শতাংশ মন্ত্রীই কোটিপতি। ৪২
শতাংশ মন্ত্রীর নামে ফৌজদারি মামলা রয়েছে।
মোদি সরকারের মন্ত্রীদের সম্পদ নিয়ে বিশ্লেষণ করা হয়েছে এডিআর
রিপোর্টে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, ৯০ শতাংশ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীই (৭০ জন) কোটিপতি।
মোদি সরকারের মন্ত্রীদের মাথাপিছু গড় সম্পদ ১৬ কোটি ২৪ লক্ষ টাকা। নির্বাচনী
হলফনামা অনুযায়ী, ৪ জন মন্ত্রীর সম্পত্তি ৫০ কোটি টাকারও বেশি। এই
তালিকায় শীর্ষে রয়েছেন সদ্য মোদি মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পাওয়া কংগ্রেসত্যাগী নেতা
জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ ৩৯৫ কোটি টাকা। সম্পত্তির নিরিখে
সিন্ধিয়ার পরে রয়েছেন যথাক্রমে পীযূষ গোয়েল (৯৫ কোটি), নারায়ণ
রানে (৮৭ কোটি) ও রাজীব চন্দ্রশেখর (৬৪ কোটি)। এডিআর রিপোর্ট বলছে, যে আটজন
মন্ত্রীর সম্পত্তি ১ কোটি টাকার কম তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ত্রিপুরা থেকে সদ্য
মন্ত্রিসভায় জায়গা পাওয়া প্রতিমা ভৌমিক (৬ লক্ষ টাকা)। এই তালিকার বাকি সদস্যরা
হলেন জন বারলা, কৈলাস চৌধুরী, বিশ্বেশ্বর
টুডু, ভি মুরলীধরন, রামেশ্বর
তেলি, শান্তনু ঠাকুর ও নিশীথ প্রামাণিক।
এডিআর-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমান
মোদি সরকারের ৩৩ জন মন্ত্রীর নামে (৪২ শতাংশ) ফৌজদারি মামলা রয়েছে। তাঁদের
মধ্যে ২৪ জনের (৩১ শতাংশ) বিরুদ্ধে রয়েছে খুন, খুনের
চেষ্টা ও ডাকাতি সহ গুরুতর অপরাধের মামলা। নির্বাচনী হলফনামা অনুযায়ী, বাংলা
থেকে সদ্য মোদি মন্ত্রিসভায় যোগ দেওয়া কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ প্রামাণিকের
বিরুদ্ধে খুনের (ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায়) মামলা রয়েছে। খুনের চেষ্টার মামলা
(৩০৭ ধারায়) রয়েছে মোদি সরকারের চারজন মন্ত্রীর নামে। সেই তালিকাতেও নাম রয়েছে
নিশীথ প্রামাণিক ও বাংলা থেকে সদ্য মন্ত্রী হওয়া জন বারলার। এডিআর রিপোর্ট বলছে,
পাঁচজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি ভঙ্গের
অভিযোগে ফৌজদারি মামলা রয়েছে। নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগে মামলা রয়েছে মোদি
মন্ত্রিসভার সাত সদস্যের বিরুদ্ধে।
সম্পত্তির পাশাপাশি রিপোর্টে মন্ত্রীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়েও
আলোকপাত করা হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, ৭৮ জন মন্ত্রীর মধ্যে ১২ জনের শিক্ষাগত যোগ্যতা
অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির মধ্যে। ৬৪ জন মন্ত্রী হলফনামায় জানিয়েছেন, তাঁদের
শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক বা তার বেশি। দু’জন
মন্ত্রী ডিপ্লোমা হোল্ডার।
কোন মন্তব্য নেই