গণ আন্দোলন স্তব্ধ করতে কাছাড়ে ১৪৪ জারি অভিযোগ বি ডি এফের
সংবাদাতা, শিলচর : পেট্রোপন্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে গত ৯ জুলাই
স্থানীয় রাঙিরখাড়ি পেট্রোল পাম্প এর সম্মুখে এক বিক্ষোভ কর্মসূচি প্রদর্শন
করেছিল বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট। এর পরিপ্রেক্ষিতে পরদিনই কাছাড়ে ১৪৪ ধারা জারি
করেছেন জেলাশাসক। এই ব্যাপারে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করলেন বরাক ডেমোক্রেটিক ইউথ
ফ্রন্টের সদস্যরা।
এক প্রেস বার্তায় যুব ফ্রন্টের মূখ্য আহ্বায়ক কল্পার্নব
গুপ্ত বলেন যে বিডিএফ এর প্রতিবাদে যেহেতু সরকার অস্বস্তিতে পড়েছেন তাই আমরা
নিশ্চিত যে দিশপুর তথা স্থানীয় সাংসদ,
যিনি জেলাশাসকের অন্যতম পরামর্শদাতা , তাদের নির্দেশেই জেলাশাসক
এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অন্যথা যেখানে খোদ মূখ্যমন্ত্রী সম্প্রতি বলেছেন যে
রাজ্যের সাতটি জেলা ছাড়া অন্যত্র করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে এবং সেই
পরিপ্রেক্ষিতে এইসব জেলায় আগামী বুধবার থেকে কার্ফু বেলা একটার পরিবর্তে বিকেল
চারটা থেকে লাগু করা হবে,যারমধ্যে কাছাড় ও অন্তর্ভুক্ত, সেখানে হটাৎ করে জেলাশাসকের
এই নির্দেশ খুবই আশ্চর্যজনক। তিনি আরো বলেন যে বর্তমানে বেলা একটার পর কার্ফু
চলাকালীন সারা জেলায় অবাধে যানবাহন ও মানুষজন চলাফেরা করছেন। পরিস্থিতি যদি
উদ্বেগজনক হয়েই থাকে তবে এসব জেলাশাসকের নজর এড়িয়ে যায় কি করে ?কল্পার্ণব বলেন যে আসলে
বিডিএফ এর প্রতিবাদে সরকার ভীত ,তাই আগামী বাজেট অধিবেশনের আগে যাতে জনগন আর কোনো প্রতিবাদি
কর্মসূচি নিয়ে সরকারকে অস্বস্তিতে না ফেলতে পারেন তাই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন এভাবে জনগনের কন্ঠরোধ করার প্রক্রিয়া ধিক্কার যোগ্য এবং অবিলম্বে জেলা
থেকে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছে বিডিএফ যুব ফ্রন্ট।
যুব ফ্রন্টের আরেক আহ্বায়ক ইকবাল নাসিম চৌধুরী বলেন যে
বর্তমান জেলাশাসক কতটা স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন তা নিয়ে বিভ্রান্তি
রয়েছে কারণ এর বদলে তাকে এম পি ,এম এল এদের সাথে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ফিতে কাটাতে ব্যাস্ত
থাকতেই বেশি দেখা যায়। উদাহরণস্বরূপ তিনি বলেন যে কিছুদিন আগে রামনগরের লুনিয়া
মার্কেটিং এর গুদাম থেকে ৪৫০ বস্তা অবৈধ চাল বাজেয়াপ্ত করার পরিপ্রেক্ষিতে তারই
নির্দেশে ফুড এন্ড সিভিল সাপ্লাই বিভাগের চেয়ারম্যান দেবজ্যোতি পাঠক এই কোম্পানির
কর্ণধারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। কিন্তু এখন অব্দি দোষীকে গ্রেফতার সহ এই
তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে কোনকিছুই জনগন জানতে পারেননি। তিনি আরো বলেন যে উক্ত বিভাগে
কর্মরত বরাকের চারজন দূর্নীতিবাজ ও দাগি অফিসার অনেক দিন ধরে মৌরসীপাট্টা চালিয়ে
যাচ্ছিলেন। তাঁদের বদলির জন্য সরকারি তথা নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ আসার পরও তারা
বহাল তবিয়তে এখানেই রয়ে গেছিলেন ,এতটাই তাদের ক্ষমতা। অবশেষে খাদ্যমন্ত্রী রঞ্জিত দাস
পুনরায় এই ব্যাপারে কড়া চিঠি দেবার পর জেলাশাসক তাদের বদলির নির্দেশ দেন। কিন্তু
তার দুদিন পরই এই ব্যাপারে তারই অধস্তন এক অতিরিক্ত জেলাশাসকের নির্দেশে মূল দুই
অভিযুক্ত এবং পালের গোদা দীপেন শর্মা এবং রাজকমল শর্মার বদলি আবার রদ হয়ে
যায়, এবং তারা বহাল তবিয়তে বরাকে রয়ে যান। ইকবাল বলেন যে একজন
জেলাশাসকের নির্দেশ তারই অধস্তন আধিকারিক এইভাবে অমান্য করে যদি পাল্টা নির্দেশ
দিতে পারেন তবে সেই জেলাশাসকের সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা
স্বাভাবিক।
বিডিএফ যুব ফ্রন্টের সদস্যরা এদিন বলেন যে তারা বর্তমানে জেলাশাসককে অবিলম্বে কাছাড়ের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেবার দাবি জানাচ্ছেন এবং একই সাথে কোন দৃঢ়চেতা ও সৎ আই এস অফিসারকে তার স্থলাভিসিক্ত করার আবেদন রাখছেন ,যিনি রাজনৈতিক চাপকে অগ্রাহ্য করে সাধারণ জনগনের সুখ-দুঃখের সাথি হতে পারেন এবং কোভিড পরিস্থিতি সহ জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার সমাধানে দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ নিতে পারেন।
বিডিএফ যুব ফ্রন্টের পক্ষ থেকে এক প্রেস বার্তায় এই খবর
জানিয়েছেন সমর ভট্টাচার্য এবং অমিত চৌধুরী।
কোন মন্তব্য নেই