পেপার মিল নিয়ে ইতিবাচক পদক্ষেপ না নিলে আন্দোলনের পথে যাবে বি ডি এফ
নয়া ঠাহর সংবাদদাতা, শিলচর : কাগজকলের ব্যাপারে
অবিলম্বে মূখ্যমন্ত্রী ইতিবাচক পদক্ষেপ নেবেন বলে আশাবাদী, অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটতে বাধ্য হব - বরাক
ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট।
কাছাড় ও জাগিরোড কাগজকল সহ এইচ পিসির সম্পত্তি নিলাম করার
জন্য সাম্প্রতিক জারি করা বিজ্ঞপ্তির পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত
বিশ্ব শর্মা বলেছেন যে এই বিজ্ঞপ্তিকে এতো গুরুত্ব দেবার দরকার নেই। এরকম নোটিশ
প্রায়শই জারি করা হয়ে থাকে। তিনি কর্মীদের বকেয়া বেতন পরিশোধকে প্রাথমিকতা
দেবার কথা জানিয়ে ভবিষ্যতে মিল চালুর ক্ষেত্রেও পরিকল্পনা নেবেন বলে প্রতিশ্রুতি
দিয়েছেন। তার এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করল বরাক
ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট।
এক রেকর্ডেড প্রেস বার্তায় ফ্রন্টের মূখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ
দত্তরায় বলেন যে এই নোটিশের ব্যাপারটি আমরা মোটেই হালকাভাবে নিচ্ছিনা। কারণ
আমাদের কাছে খবর আছে যে গুজরাটের একটি ব্যাবসায়ী গোষ্ঠী কিছু আমলাদের সাথে
যোগসাজশ করে এইচ পি সির এই সম্পত্তি জলের দরে আত্মসাৎ করতে চাইছেন। এও খবর পাওয়া
যাচ্ছে যে তারা পরিকল্পিতভাবে মাত্র ১১৩৯ কোটি টাকার বিনিময়ে এই ৫০০০ কোটি টাকার
সম্পত্তি কিনে নিতে আমলা স্তরে লবিবাজি চালাচ্ছেন। প্রদীপ বাবু এই ব্যাপারে
মূখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন যে তিনি আশাকরি অবগত আছেন যে ২০১৬ সালে খোদ
প্রধানমন্ত্রী এই মিল পুনরায় চালু করার ব্যাপারে জনসমক্ষে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এরপর বিজেপি
দলের নির্বাচনী সংকল্প পত্রতেও একই প্রতিশ্রুতি ছিল। নির্বাচনী প্রচারকালে একই কথা
শোনা গেছে কেন্দ্রীয় গৃহমন্ত্রীর মুখেও। তাই মূখ্যমন্ত্রী কে এবার এইসব
প্রতিশ্রুতিকে বাস্তবে রূপায়িত করা অবশ্য কর্তব্য।
বিডিএফ এর মূখ্য আহ্বায়ক আরো বলেন যে কিছুদিন আগে রাজ্য
সরকারের পক্ষ থেকে ২০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে নুমলিগড় তৈল শোধনাগার প্রকল্পের ২৬% শেয়ার কেনা হয়েছে। তিনি আরো বলেন যে এনার্সি
প্রক্রিয়ার সরকারের খরচা হয়েছে ১৬০০ কোটি টাকা , যার পুরোটাই জনগন থেকে অর্জিত। এখন আবার সেই পুরো তালিকাকেই
বাতিল করার চেষ্টা চলছে। প্রদীপ বাবুর বক্তব্য যে সরকার যদি এইসব প্রকল্পে টাকা
বিনিয়োগ করতে দ্বিধা না করে তবে মাত্র ১১৩৯ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে এইচ পিসির
সম্পত্তি ক্রয় করে মিল দুটিকে আবার চালু করার
ঘোষণা কেন অবিলম্বে করছেন না ? তিনি বলেন যে এই মিলগুলো
চালুর আগে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে যে সমীক্ষা করা হয়েছিল তাতে এসব লাভজনক হবে
উল্লেখ করা হয়েছিল এবং তা ইতিমধ্যে হয়েছেও। তিনি বলেন কাঁচামাল সহ পারিপার্শ্বিক
পরিস্থিতি এই ব্যাবসার পক্ষে এখনো অনুকুল এবং দক্ষতার সাথে পরিচালিত হলে রাজ্য
সরকার এর থেকে লভ্যাংশ তো পাবেনই এরসাথে প্রায় দু/ তিন লক্ষ পরিবার উপকৃত হবেন, যা আসামের মতো অনুন্নত রাজ্যের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়।
বিডিএফ মূখ্য আহ্বায়ক বলেন যে আমরা আশা করছি যে
মূখ্যমন্ত্রী অনতিবিলম্বে কর্মীদের বকেয়া পাওনা মিটিয়ে দিতে উদ্যোগী হবেন কারণ
কর্মীরা সব দুর্বিষহ অবস্থার মধ্যে কালাতিপাত করছেন। ইতিমধ্যে অর্ধাহারে , অনাহারে, চিকিৎসার অভাবে ৮২ জন
কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। প্রয়োজনীয় টাকার অভাবে অনেকের ছেলে মেয়েরা উচ্চশিক্ষা
নিতে পারছেন না। এই অমানবিক পরিস্থিতির অবিলম্বে অবসান হওয়া জরুরী।
বিডিএফ মূখ্য আহ্বায়ক বলেন যে আমরা মূখ্যমন্ত্রীর
কর্মদক্ষতা সম্পর্কে সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল এবংজানি যে তিনি চাইলে একাই এই সমস্যার
সুষ্ঠু সমাধান করতে পারবেন ,আর কারুর দরকার হবেনা। তাই
এই ব্যাপারে আমরা সাগ্রহে তার আগামী উদ্যোগের অপেক্ষায় থাকব।
কিন্তু একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে এই ব্যাপারে কোন
অগ্রগতি না হলে এই উপত্যকার জনগনের স্বার্থে এই ইস্যু নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে
পা বাড়াতে বাধ্য হবে বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট।
বিডিএফ মিডিয়া সেলের পক্ষ থেকে এক প্রেস বার্তায় এই খবর জানিয়েছেন আহ্বায়ক হৃষীকেশ দে ও জয়দীপ ভট্টাচার্য।









কোন মন্তব্য নেই