অসম নগাঁও বামুনিপাহাড়ে ১৮টি হাতির করুন মৃত্যু আজও রহস্যে আবৃত, বনমন্ত্রীর ভাষ্য মানছেন না প্রকৃতি প্রেমীরা
অমল
গুপ্ত, গুয়াহাটি
: অসমে গত ১২ মে এক মর্মান্তিক
ঘটনা ঘটে গেল। নগাঁও জেলার কার্বি আংলং
পার্বত্য জেলার সীমান্তে বামুনিপাহার তপজুরি পাহাড়ে ১৮টি হাতির করুন মৃত্যুর কিনারা আজও হলনা। এই মৃত্যুকে বজ্রপাতে
মৃত্যু বলে বন বিভাগ প্রথম থেকে সত্যকে
ধামা চাপা দেওয়ার সব চেষ্টা করে। বনমন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য ৩ মে জানিয়ে দিলেন ১০ জন
চিকিৎসক ওখানে গিয়ে তদন্ত করে দেখেছেন বজ্রপাতের
ফলেই মৃত্যু হয়েছে। তিনি কিন্তু পোস্টমর্টেম রিপোর্ট প্রকাশ্যে
আনলেন না। বন বিভাগের এক
দুষ্ট চক্র হিস্টপেথলজিকেল রিপোর্টকে পোস্টমর্টেম রিপোর্ট বলে চালাবার চেষ্টা করেও
সফল হয়নি। রাজ্যের বিশিষ্ট বিজ্ঞানি, ইলেক্ট্রিক বিশেষজ্ঞ,
প্রকৃতি প্রেমীরা বিস্তারিতভাবে
নানা তথ্য দিয়ে প্রমাণ করার
চেষ্টা করেন বজ্রপাতে হাতিগুলির মৃত্যু হয়নি। বামুনি
পাহাড় এলাকায় হাতিদের যাতায়াতের
করিডোর বছরে ১০০/১৫০ বুনো
হাতি ওই পাহাড়, বন-পথ অতিক্রম
করে। হাতিদের
দাপট থাকলে ওখানে সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা যাবে না। এই প্রকল্প
নির্মাণের কাজ জোর কদমে
চলছে। আগে থেকে জমি প্রস্তুত করার
জন্যে ৪০০/৫০০ সেগুন
গাছ কেটে ৩০০ একর জমি
অধিগ্রহণ করা হয়েছে। সবুজ
রঙের তারের বেড়া নির্মাণ করা হয়েছে। ব্যাপকহারে মাটি কাটা চলছে। সবুজ
পাহাড়ের মাথায় ২৭৯ ফুট
উচ্চবড় গাছে বজ্রপাত হল না। সব চেয়ে
উঁচুতে বাজ পড়ে বা
বজ্রপাত হয়, তার
বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে। আর বজ্রপাত
হল পাহাড়ের তলে ২৫৪ মিটার
উচ্চতা বিশিষ্ট গাছে, গাছে যা
কোনোদিন সম্ভব নয়। এবং গাছে চিড় বা ফাটল ধরে গেছে এক
বানানো গল্প ছাড়া কিছুই নয়। নুমলিগরে
হাতিদের করিডোর ধ্বংস করে শিল্প গড়ার অনুমতি দেওয়ার
পর দ্বিতীয় ঘটনা সরকার হাতিদের
করিডোর ধ্বংস করে বিদ্যুৎ শিল্প গড়ে তোলা
হচ্ছে। জানা গেল, এন ও সিতে
বলেছে, এই অঞ্চলে হাতিদের কোনো করিডোর
নেই। সব কিছু পরিকল্পিত বলে
অভিযোগ করে গোলাঘাটের সাংবাদিক প্রকৃতি প্রেমিক অপূর্ব
বল্লভ গোস্বামী বন
বিভাগ এবং সোলার বিদ্যুৎ কোম্পানির বিরুদ্ধে সামাগুডি পুলিশ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন গতকাল। রাজ্যের
অন্যতম প্রকৃতিপ্রেমী সংগঠন নেচার বেকনের
প্রধান সৌমদ্বীপ দত্ত
নানা যুক্তি প্রদর্শন করে অভিযোগ করেছেন সম্পূর্ণ
পরিকল্পিতভাবে হাতি গুলোকে হত্যা করা হয়েছে। বিজ্ঞান ভিত্তিক
তদন্ত হয়নি। বজ্র পাতের পর মাটি পরীক্ষা
হয়নি। পোস্টমর্টেম রিপোর্ট প্রকাশ
করা হল না। প্রদীপ শইকিয়া,
বুবুল শর্মা, ভাস্কর বড়ুয়া, মানস লোচন দাস বিশিষ্ট সাংবাদিক নব ঠাকুরিয়া প্রমুখ বিশিষ্ট বিজ্ঞানি, ইলেক্ট্রিক বিষেজ্ঞরা জানালেন হাতিগুলি
ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল, এক সঙ্গে ছিল না। হাতিগুলিকে হত্যা করে মাটিতে
পুঁতে দেওয়ার সব ব্যবস্থা আগে থেকে করা
হয়েছিল বলে সন্দেহ করার কারণ আছে। আগে থেকে কয়েক বস্তা লবন এনে রাখা
হয়েছিল। যাতে তারা তারি দেহগুলি পচে যায়। পচে
গেলে আর পোস্টমর্টেম রিপোর্ট
হয় না। তাই সব ছিল
পরিকল্পিত। রাজ্যের বিশিষ্ট প্রকৃতি প্রেমী আনোয়ার
উদ্দিন বলেছেন, বজ্রপাতে
মৃত্যু হলে হাতিদের দেহে ঝলসানো চিহ্ন থাকতো, কিছুই
ছিল না। রাজ্যে করোনা উদ্ভূত জটিল পরিস্হিতি চলছে এই সময় দুষ্ট
চক্র নিরীহ বুনো হাতিগুলোকে চিরতরে সরিযে দিয়ে বজ্রপাতের গল্প ফাঁদল বলে প্রকৃতি প্রেমী
সংগঠনের অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া
যাবে না।
কোন মন্তব্য নেই