ভারতকে নিয়ে উদ্বিগ্ন রাষ্ট্রপুঞ্জ, তবে সংক্রমণ দেশে হ্রাস পাচ্ছে
অমল
গুপ্ত, গুয়াহাটি : গত ৪০ দিনের
তুলনায় দেশে এক দিনে
আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ২ লাখ
হ্রাস পেয়েছে। ২৪ ঘন্টায় ১ লক্ষ ৯৬ হাজার আক্রান্ত
হয়েছে। পি আই
বি সূত্র আজ এই তথ্য দিয়ে জানিয়েছে দেশে এক্টিভ কেস দাঁড়িয়েছে ২৫,৮৬,৭৮২ জন, পজিটিভিটির হার ৯.৫৪ শতাংশ।
দেশে এখন পর্যন্ত ২০ কোটি
মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। ২০ কোটির
মধ্যে ১২ কোটির
বেশি ১৮/৪৪ বছরের
মানুষকে দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তনিয় গুতেরেশ ভারতের
করোনা পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, এখন পর্যন্ত টিকার ৮২ শতাংশের বেশি গিয়েছে ধনী দেশগুলোর কাছে। নিম্ন
আয়ের দেশগুলো পেয়েছে মাত্র ০.৩ শতাংশ টিকা। আমেরিকা
ব্রাজিলের পর
তৃতীয় দেশ হিসেবে ভারতে মৃতের সংখ্যা তিন লাখ ছুঁই
ছুঁই। ১৮ থেকে ৪৪ বছর
পর্যন্ত বয়স ব্যাক্তিদের
টিকা বিশ্ব বাজার থেকে কেনার জন্য ৯/১০ টি
রাজ্য বিশ্ব টেন্ডার ডেকেছে। কবে সেই টিকা ভারতে
পৌঁছবে, কবে দেশে ব্যাপক হারে টিকাকরণ শুরু হবে তা ঈশ্বর
জানেন। টিকা উৎপাদনে ভারত ছিল বিশ্বের প্রথম
সারিতে। মোদি সরকার বিশ্বের প্রায় ৭০ টি দেশকে
টিকা সরবরাহ করেছে। আজ
নিজের দেশে টিকার আকাল। সেকথা লেখা যাবে না। বেশি করে লিখলে সরকারের কোপে
পড়তে হবে। এক জাতীয় পর্যায়ের সংবাদপত্রের হেড লাইন" টিকা
বেপাত্তা, অগ্রাধিকার
মোদির "প্রাসাদ"। সরকারি লক্ষ্য অনুযায়ী আগামী বছর ২০২২ সালের
ডিসেম্বর মাসের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর নতুন সরকারি বাসভবন নির্মাণ
সম্পূর্ণ হয়ে
যাবে। ৪ মের ওই সংবাদপত্রে বলা
হয়েছে কোভিড পরিস্থিতির মধ্যেও মোদি সরকার রাজধানী দিল্লিকে ঢেলে সাজানোর
সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্পের ২০ হাজার
কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়নি
চালিয়ে যাচ্ছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সন্থা বা হু বলেছে, বাতাসে ছড়াতে পারে সার্স-কোভ,-২। বাড়ির
পরিবেশ পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা বিশুদ্ধ পানীয় জল,
ঘরে যথেষ্ট আলো বাতাস থাকা
দরকার। এই দেশে ১০০ শতাংশ
বিশুদ্ধ পানীয় জল সোনার পাথর বাটির মতই, যা কোন দিন ছিল না। হোম
ক্যরেন্টিনে থাকতে গেলে দুটি ঘরে দুটি
পৃথক টয়লেট থাকা জরুরি। ২০১১ সালের
জনগণনা অনুযায়ী ৫ শতাংশের
বাড়িতেও দুটি টয়লেট নেই। দেশের প্রধান নদী গঙ্গা আজ করোনা আক্রান্ত মৃতদেহগুলো
ফেলে দেওয়ার প্রধান ডাস্টবীন। বেশি করে লিখলেই বিপদ মুখ্যমন্ত্রী
যোগী আদিত্য নাথ পুলিশ পাঠিয়ে দেবে। পবিত্র গঙ্গা, যমুনা ব্রহ্মপুত্র সহ দেশের
৪৫ নদী
দূষিত হয়ে গেছে। গঙ্গায়
মরদেহ ফেলার কথা বলা হলেও কানপুরের চামড়া
খারখানার প্রচন্ড দূষিত জল গঙ্গায় ফেলার কথা লেখা যাবে না। কারণ তাদের লবি
সংবাদপত্রের মুখ বন্ধ করে দেবে। আপনি কোথায় যাবেন। পশ্চিম
বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন উত্তরপ্রদেশ সরকার পবিত্র
গঙ্গা নদীতে হাজার হাজার কোভিড আক্রান্ত মৃতদেহ ফেলে ভারতকে দূষিত করছে।
ভূগর্ভস্থ জল তুলে তুলে প্রায় নিঃশেষ হয়ে গেছে। তা বন্ধ করার ক্ষমতা কারও
নেই। জলের উৎস নদ নদী খাল বিল তাও অশুদ্ধ
পানের যোগ্য নয়। কোভিড নিয়ে দেশের
অধিকাংশ মানুষ নিয়ম নীতির
তোয়াক্কা করে না। প্রধানমন্ত্রী পরিস্থিতির জটিলতায় চোখের
জল সংবরণ করতে পারছেন না। পরিবারকেন্দ্রিক বৃত্ত
থেকে বেড়িয়ে আসার মুরোদ নেই, কংগ্রেস দলের নেতাদের। তিনি সভাপতিও নন
বার বার বিদেশে ছুটি কাটিয়ে ফিরে এসেই টুইট আর টুইট। তিনি রাজপুত্র রাহুল
গান্ধী। তিনি বার বার প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করছেন। এক
বিদেশি সংবাদপত্রে" ভারতের প্রধানমন্ত্রীকাঁদছেন "বলে হেডিং
দিয়ে এক চোখে জল থাকা এক কুমিরের মুখের ছবি
ছেপেছে। তা নিয়ে রাহুল কটাক্ষ করেছেন। নেহরু পরিবার কোটি কোটি টাকার মালিক। দেশের
এই দুঃসময়ে অন্ততঃ ভ্যাকসিন কিনতে টাকা
ঢালুক। টুইট না হয় কিছুদিন তোলা থাকুক।
কোন মন্তব্য নেই