হারালাম দূরদৃষ্টিসম্পন্ন মহান ব্যক্তিত্বকে
রত্নজ্যোতি দত্ত
বরাকের বিশিষ্ট জননেতা ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক পার্থসারথি চন্দ স্যারের মৃত্যুর কয়েক দিন পর একটা মিস কল পেলাম। সৌজন্যতা মেনে সে নম্বরে কল করলাম। কলকাতা থেকে পার্থ স্যারের বড় ভাতিজি অন্য প্রান্তে ছিল। আমাদের ব্যক্তিগতভাবে কখনও দেখা হয়নি। প্রারম্ভিক কান্না সামলে ও যা বলতে পেরেছিলেন তাতে অভিভূত হলাম। "ছোট আপনাকে আমাদের পরিবারেরই একজন ভাবতো।"
ছোট গল্পের মাধ্যমে জীবন দর্শনের কথা বোঝাতেন।রেখেছিলেন পরামর্শদাতা হিসাবে গভীর ছাপ জনমানসে। ছিলেন বিশাল মাপের ব্যাক্তিত্বের অধিকারী।
স্যারের সাথে প্রায়ই দিল্লি থেকে কথা হত। দীর্ঘ কথোপকথনের সময় আমার প্রতি থাকা তাঁর স্নেহ অনুভব করতে পারতাম। নিরপেক্ষ সাংবাদিক হিসাবে তিনি আমার দৃষ্টিভঙ্গির প্রশংসা করতেন।
মনে আছে, একবার তিনি ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন যে আমি রয়টার্সের সাংবাদিক হিসাবে কাজ করব। সম্ভবত, আমার দক্ষতার প্রতি থাকা আত্মবিশ্বাস থেকে তিনি এমন ভবিষ্যৎবাণী করেছিল। আমি ২০০৯ সালে যখন রয়টার্স যোগ দিয়ে সিঙ্গাপুরে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলাম তখন হঠাৎ একদিন তিনি অভিনন্দন জানানোর জন্য শিলচর থেকে কল করেছিলেন। দিয়েছিলেন আগামীদিনের প্রচেষ্টার জন্য আশীর্বাদ।
কোভিডের এই কঠিন সময়ে উনার সাথে কথা বলে খুব ভালো লাগতো। তালাবন্ধের সীমাবদ্ধতার সময়ে দারুনভাবে মিস করবো স্যারের জ্ঞানবর্ধক সতেজ কথাবার্তা।
এবছর বাংলা নববর্ষের কয়েক দিন আগে শিলচর সফরকালে আমি তাঁর সাথে মধ্যাহ্নভোজ মিলিত হয়েছিলাম। "জীবনে যা পেয়েছি তা যথেষ্ট। জীবনের প্রাপ্তি হল ছাত্রদের ভালোবাসা এবং বরাকের সাধারণ মানুষের স্নেহ"। এই কথাগুলো এখনও আমার কানে বাজে।
[লেখক দিল্লিতে কর্মরত আন্তর্জাতিক সাংবাদিক।]









কোন মন্তব্য নেই