Header Ads

অসমে আবার সর্বানন্দ সনোয়াল সরকার লক্ষ ভোটে হিমন্ত বিশ্ব শর্মা জিতলেন



অমল গুপ্ত, গুয়াহাটি : অসমে প্রত্যাশিতভাবেই  বিজেপি জোট সরকার দ্বিতীয়বার  দিসপুরের মসনদে বসতে চলেছে। অগপইউ পি পি এলকে সঙ্গে নিয়ে বিজেপি জোট সরকারে মুখ্যমন্ত্রী পদে  কে বসবেন।  নিজের কেন্দ্র পরিবর্তন করে পাঠাচারকুচি থেকে জয় লাভ করে বিজেপি সভাপতি রঞ্জিত দাস এ সম্পর্কে বলেন,  বিজেপি দলের সংসদীয় কমিটি  একজন পর্যবেক্ষক পাঠাবে সেই  পর্যবেক্ষক  দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনয়ালকে আজ প্রধানমন্ত্রী  নরেন্দ্র মোদি টেলিফোন  করে ধন্যবাদ   জ্ঞাপন করেন। মাজুলি থেকে জয় লাভ করে মখ্যমন্ত্রী  রেপাব্লিক টিভিকে বলেন, দুই সুন্দর উপত্যকা বরাক ব্রহ্মপুত্র  উপত্যকার  অসমীয়া, বাঙালি, হিন্দীভাষী, হিন্দু-মুসলিম সব জনগোষ্ঠীর মানুষের সার্বিক উন্নয়নে  নিরলসভাবে কাজ করেছে বিজেপি। হিমন্তবিশ্ব শর্মার সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে এক পরিবারের সদস্যদের মত কাজ করেছেন। কোনো বিভেদ নেই।   এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিজেপি ৭০টির বেশি আসন পেয়েছে। অগপ ১১টি, এ আই ইউ ডি এফ ১৬টি,  কংগ্রেস ৪০টি,  বিপিএফ টি  আসন পেয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী সনয়াল ১২ হাজারের বেশি ভোটে জয়লাভ করতে চলেছেন। ব্যবধান আরও বাড়বে। গহপুর থেকে কংগ্রেস  দলের সভাপতি প্রার্থী সাংসদ রিপুন বরা হেরে যান।  তিনি পরাজয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করে বলেন, সাম্প্রদায়িক শক্তি ও  অর্থবল তাকে হারিয়েছে। তিনি অনেক ভালো কেন্দ্র পেয়েছিলেন। কিন্তু গহপুরের প্রতি তার দায়িত্ব পালন করতে  গিয়ে হারলেন। বড় খবর, কৃষক মুক্তি সংগ্রাম  সমিতির নেতা অখিল গগৈ তার  নতুন দল  রাইজ দলের সভাপতি হিসাবে জেল থেকেই  হাজার ভোটে জয় লাভ করেন। বিভিন্ন ধারায় অখিল গগৈকে  গ্রেফতার করা হয়েছে। রাজ্যের ৭০টির বেশি সংগঠন  নাগরিকত্ব  সংশোধনী আইনের  বিরুদ্ধে   জোর আন্দোলন শুরু করেছিল। এই আন্দোলনে পাঁচজন নিরীহ যুবকের প্রাণও যায়।  নিবাচনী ফল  কোনো প্রভাব পড়লো না।  এবার রাজ্যের  প্রায় ৩৪ শতাংশ মুসলিম এবং আগের মত বাঙালি হিন্দুরা  বিজেপিকেই ভোট দিয়েছে বলে পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে।  যথারীতি  জনপ্ৰিয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা  রেকর্ড ভোটে  জয় লাভ করেন। তার ঝালুকবাড়ি কেন্দ্র থেকে লাখ হাজার ১১১ ভোটে জয়লাভ করেন। অসম জাতীয় পরিসদ  সভাপতি লুরিনজ্যোতি গগৈ তার দুটি কেন্দ্রে পরাজিত হয়েছেন। তার দল খাতা খুলতে পারেনি। মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল টি ভি চ্যানেল  নিউজ লাইফকে বলেন, ভালো কাজ করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। তাই বিজেপি ভালো ফল পেয়েছে। হিমন্তবিশ্ব শর্মা বলেন, অসমের ভোটাররা অসমের সভ্যতা সংস্কৃতির পক্ষ্যে ভোট দিয়েছেন। প্রধান মন্ত্রীর উন্নয়ন ও বিকাশে তারা কাজ শুরু করেছিলেন তার সমর্থনে মানুষ ভোট দিয়েছে। বিধানসভার বাঙালি মুখ উত্তর-করিমগঞ্জর কংগ্রেস বিধায়ক কমলাক্ষ্য দে  পুরকায়স্থ  জয় লাভ করেন। বিজেপির বাকি বাঙালি সদস্যরা   মুখ খোলেন না।   বরাকের কয়লা, সুপারি দুর্নীতি  সিন্ডিকেট নিয়ে  বিজেপির  পদত্যাগী দিলীপ পাল সরব হলেও তিনি শিলচর কেন্দ্রে হেরে গেলেন। দুর্নীতি ইস্যু হল না। মন্ত্রী পরিমল  শুক্লবৈদ্য জয় লাভ করেন, বাঙালিদের ডি ভোটার ডিটেনশন ক্যাম্প, এন আর সি নিয়ে  যেভাবে বাঙালিদের বিজেপি সরকার হয়রানি করেছে তা নিয়ে চুপ থাকেন পরিমল। এবার অসমে মুসলিম ভোটাররা বিজেপিকে ভোট দিয়েছে।  কংগ্রেস, ইউ ডি এফ জোট নানা  ক্ষেত্রে বিজেপি সরকারের হয়ে কাজ করেছে বলে কংগ্রেস অভিযোগ করেছে। কংগ্রেস সভাপতি রিপুন বরা  হারের নৈতিক দায়িত্ব গ্রহণ করে সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর কাছে পদত্যাগপত্র পাঠান। অসমে  বটদ্রবা কেন্দ্রে   বিজেপির আঙুর লতা  ডেকা  হেরে গেছেন। অপরদিকে, বি পি এফের  প্রমিলা রানী ব্রহ্ম, চন্দন ব্রহ্ম হেরে গেছেন। হজাই কেন্দ্রে বিজেপির রামকৃষ্ণ ঘোষ, লামডিং কেন্দ্রে বিজেপি   শিবু মিশ্র জয় লাভ করেন। লক্ষ্মীপুরে বিজেপি কৌশিক রাই  জয় লাভ করেন তার বিরুদ্ধে  দুর্নীতির ব্যাপক অভিযোগ তোলা হয়েছিল। অগপর তিন মন্ত্রী জয়লাভ করেন। অতুল বরা, কেশব মহন্ত ও ফনিভূষণ চৌধুরী জয় লাভ করেন। মানকাচার কেন্দ্রে ইউ ডি এফ প্রার্থী, আমিনুল ইসলাম জয় লাভ করেন। এই কেন্দ্রে  বিজেপিতে যোগ দেওয়া প্রাক্তন মন্ত্রী আমিনুল ইসলাম  প্রথম থেকে সভা সমিতি করে বিজেপিকে অনেক এগিয়ে দেয়। শেষ পর্যন্ত তাকে বাদ দেওয়া হল  বিজেপি অগপর দুর্বল এক  প্রার্থীকে  সেখানে দাঁড়া করায়। বিজেপিসঙ্গে গোপন বোঝাপড়া করে  ইউ ডি এফ প্রার্থী আমিনুলকে জেতানো হয় অভিযোগ তুলে   আমিনুল  দল থেকে পদত্যাগ করেন। সোনাই থেকে বিধানসভার উপাধ্যক্ষ আমিনুল হক লস্কর  হেরে যান। সেখানে ইউ ডি এফ জিতেছে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.