Header Ads

বাঙালি হিন্দু ভোটারদের ভোটে আবার বিজেপি ক্ষমতায় আসছে, কিন্তু বাঙালিরা যে তিমিরে ছিল সেই তিমিরে থাকবে

অমল গুপ্ত, গুয়াহাটি : অসমে  বরাক ব্রহ্মপুত্র উভয় উপত্যকার প্রায় ৭৫ লাখ বাঙালি হিন্দু জনগোষ্ঠীর মানুষকে  অন্য নির্বাচনের মত এই ভোটেও  ব্যবহার করা হল। কোনো গুরুত্ব পেলো না। মেরুদণ্ডহীন বাঙালি হিন্দু নেতারা  বিভিন্ন দলের  কাছে লেজুর  বৃত্তি  করে রাজনীতি করে। যাচ্ছেন  এবাৰেও ব্যাতিক্রম হল না।এই বৃহত্তর  জনগোষ্ঠীর উন্নয়নের লক্ষ্যে  কোন দল কাজ করে না।  উজানের  তিনসুকিয়া, ডিব্রুগর, নগাঁ, পশ্চিম গুয়াহাটিপূর্ব গুয়াহাটি  সহ রাজ্যের ১২৬টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে অন্তত ৩০ টি কেন্দ্র বাঙালি হিন্দু ভোটাররা নির্ণায়ক শক্তি, কিন্তু তাদের টিকিট দেওয়া হয় না। বিজেপি, কংগ্রেস ব্রহ্মপুত্র উপত্যাকাতে মাত্র দুজন করে প্রার্থী দিয়েছে। বরাকের অবস্থাও একই। প্রায় ৭৫ লাখ বাঙালির বিশেষ করে অভিবাসী বাঙালি হিন্দুদের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনটি বা কা এক নৈতিক শক্তি  জোগাত। কিন্তু সেকথা কংগ্রেস দলকে বোঝানোর কেউ নেই। আইনটির রুল আজও তৈরি হয়নি। পশ্চিমবঙ্গের তিন কোটি মতুয়া সমাজের  ভোটের দিকে চেয়ে বিজেপি আইনটি আনতে চেয়েছেআইনটি বাস্তবায়িত হবে কি-না সন্দেহ আছে। অথচ রাহুল গান্ধীরা অসমে গলায় কা বিরোধী গামোছা পরে বাঙালিদের  বিরুদ্ধে গেলেন। এই ভোটে তার প্রভাব পড়বেই। বিজেপি কিছু না করেই লাভবান হল। বিজেপি কা আনবে এই ফাঁকা আওয়াজ আর আশ্বাসেও ই ভি এম বাঙালির ভোটে ভরে যাবে। ডিটেনশন ক্যাম্প উঠিয়ে দেওয়া হল না। ইতিমধ্যে 27 জন ডিটেনশন ক্যাম্প এ মারা গেলেন ,সরকারি ক্ষতি পূরণ পেল না।  বিজেপি পুনরায় গোয়ালপাড়ার মাটিযায় যে ৬৫ কোটি টাকা ব্যয় করে বাঙালিদের  জন্যে জেল নির্মাণ করছে। 1997 সাল থেকে রাজ্যের  লখ্যাধিক ডি ভোটার ভোট দান থেকে বঞ্চিত হয়ে আছে। এবারও ভোট দেওয়ার অধিকার পেলো না।   আগের 40 লক্ষ এন আর সি ছুটদের  মধ্যে বায়োমেট্রিক  করা হয়েছিল। পরে তাদের অনেকের নাম এন আর সি তে  অর্ন্ত ভুক্ত হলেও  বায়োমেট্রিক  হোল্ড করে রাখা আছে। তাদের সংখ্যা প্রায় 30 লাখ হবে। আধার কার্ড তৈরি থেকে ব্যাংক লোন  বঞ্চিত হয়ে আছে। সবাই বাঙালি।প্রায় 2লক্ষ বিদেশি মামলা ঝুলছে। 100 বিদেশি ট্রাইব্যুনাল আছে,বিচার নেই।  সবাই  বাঙালি, এন আর সি-তে সব চেয়ে বেশি বাঙালিদের হয়রানি ও হেনস্থা করা হয়েছে। তাদের নাম বেশি কাটা পড়েছে।  তাতে কিছু আসে যায় না, বাঙালিদের সিংহভাগ ভোট বিজেপির পক্ষে গেছে। বাঙালিদের দালাল সংগঠন রাজ্যে ভরে গেছে। ফেডারেশন নামে এক সংগঠন আছে। ভোট এলেই জেগে উঠে। সক্রিয় হয়।  বাঙালিদের  সরকারি চাকরি, জমির পাট্টা,  বিভিন্ন  রাষ্ট্রায়ত্ত সন্থাতে কোন পদ , দলের মধ্যে কোন পদ নৈব নৈব চ, সেই অধিকার টুকু কংগ্রেস, বিজেপি, অগপ  দেয়নি। কংগ্রেস দলের সরকার ভাষিক  সংখ্যালঘু উন্নয়ন বোর্ড গঠনের নামে  যে ধরণের তামাশা করেছে, বিজেপি সরকার ও তাঁর বতিক্রম  হলনা ।  বিজেপি কে বাঙালি হিন্দুরা ঢেলে ভোট দিয়েছে । মেরেছ কলসির কানা, তাই বলে  কি প্রেম দেব না? তা হতেই পারে না। এবার বিজেপি বাঙালি হিন্দুদের বেশি ভোট পেয়েছে। পূর্বাভাস কিন্তু  সেকথাই বলছে। বাংলা মাধ্যমের বিদ্যালয়গুলো তুলে দেওয়া হোক। ৭5 লাখ বাঙালির  ভাষার অধিকার কেড়ে নেওয়া হোক।   কোনো পরোয়া নেই, বাঙালি হিন্দুর ভোট বিজেপি পাবেই। কারণ, এই দুর্বল জনগোষ্ঠীর সামনে কোনো বিকল্প নেই। ওঠে দাঁড়াবার  ক্ষমতা নেই।  পথ দেখবার  নেতা নেই।  ধুরন্ধর সব বাঙালি নেতা আখের গোছাতে ব্যাস্ত।প্রতিবেশী পশ্চিমবঙ্গবাসী অসমের বাঙালিদের কথা চিন্তা করে না। অসমে   নৃপেন সাহা, অজয়  দত্ত, সাধন  পুরকায়স্থ, চন্দন বিশ্বাস,  নওগাঁ এর  রাজনীীতিক  চিত্ত পাল ,কমলা  ক্ষ্য  দে পুরকায়স্থ, শেখর দে, সুস্মিতা দেব ,রাজদীপ রায় ,কবিন্দ পুরকায়স্থ, দিলীপ পাল, ডাক্তার অর্ধেন্দু কুমার দে, শিলাদিত্য দেব প্রমুখদের নাম নেওয়া যেতে পারে। তবে তাদের সীমাবদ্ধতা আছে।  গত বিধানসভা অধিবেশন গুলিতে দেখা গেল বরাকের  কংগ্রেস   বিধায়ক কমলাক্ষ্য দে একাই বাঙালিদের  ভাষা কৃষ্টি রক্ষার দাবিতে লড়ে গেলেন, বিধানসভার বরাকের অন্য সদস্যরা পিছনের বেঞ্চিতে বসে মুখ লুকিয়ে থাকলেন পাঁচ বছর , তার আগের 15 বছর কংগ্রেস আমলে বরাকের কংগ্রেস  বিধায়ক  নেতারা পুকুর চুরিতে লিপ্ত হয়েছিল তাদের কয়েকজন বিজেপি তে ভিড়েছেন।। এই  অবহেলিত বঞ্চিত  বাঙালি ভোটারদের  সমর্থন নিয়ে  বিজেপি আবার দিসপুর মসনদ দখল করবে।  সে   ব্যাপারে  নিশ্চিত  । নেতাহীন কংগ্রেস দলের   আশীর্বাদ পেয়ে  বদরুদ্দিন আজমল   ফুলে ফেঁপে উঠবে  তাদের সঙ্গে জোট বেঁধে । এ আই ইউ ডি এফ   গোলাম ওসমানীর ইউ এম এফ নয়ধর্মনিরপেক্ষতার  নাম-গন্ধ নেই। শুধুই মুসলিম জনগোষ্ঠী এই দলের  ধারক  ও বাহক। অসমে আরও শক্তিশালী রূপে আত্মপ্রকাশ করবে। সেই পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে। অসমে হিন্দু মুসলিম বিভাজন আরও স্পষ্ট হবে। মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা লাগাতার ভাবে মুসলিম বিরোধী ভূমিকা গ্রহণ করে  বদরুদ্দিন আজমলের ঘরে সোনালী  ফসল তুলে দিলেন। রাজ্যে বিজেপির জয় হলেও ধর্মনিরপেক্ষতার পরাজয় ঘটবে। অসমের   75 লাখ      অবহেলিত জনগোষ্ঠীর  ভাগ্যে  কি হবে, ?   এর  উত্তর  সহজ  , যত দিন  রাজনৈতিক  শক্তি হিসাবে      গড়ে  না উঠছে। ততদিন পরে পরে  মার  খেতেই হবে। আল্লার জপ  ছাড়া গতি নেই।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.