পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্রের উৎসবে মৃত্যু মিছিল
অমল গুপ্ত, গুয়াহাটি : পশ্চিমবঙ্গে
নির্বাচন চলছে, কারও মুখে মাস্ক নেই। শারীরিক দূরত্ব বিধি মানছে না। পশ্চিমবঙ্গে লাফিয়ে লাফিয়ে
বাড়ছে। করোনা সংক্রমণ। রাজ্যে মৃত্যুর
সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এক দিনে ১১ হাজার আক্রান্ত হয়েছে।
কলকাতাতে একদিনে ২৬৪৪ জন আক্রান্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৫৬ জন। নির্বাচন কমিশন
আজ ৭ টা থেকে সব রোড শো, সাইকেল মিছিল বন্ধ করার নির্দেশ
দিয়েছে। তবে ৫০০ মানুষকে নিয়ে সভা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তাতে বিশিষ্ট ডাক্তাররা তীব্র আপত্তি করেছে। প্রশ্ন তুলেছে গণতন্ত্রের উৎসবে এত মৃত্যু কেন? দেশজুড়ে অক্সিজেনের তীব্র অভাব। সুপ্রিম কোর্ট এবং দিল্লি হাইকোর্ট কেন্দ্র সরকারের ভূমিকায়
অসন্তোষ প্রকাশ করে দেশের সর্বত্র অক্সিজেন দ্রুত পৌছিয়ে দেওয়ার কড়া নির্দেশ
দিয়েছে। টিকাকরনে কেন্দ্রের সুষ্ঠু পরিকল্পনা কোথায় তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। অপরদিকে, দিল্লি সরকারকে
অক্সিজেন দেওয়ার জন্যে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ
কেজরিওয়াল প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন। কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী ভ্যাকসিন নিয়ে বৈষম্যমূলক নীতির সমালোচনা করেছেন। কেন্দ্রকে ভ্যাকসিনের
ডোজ প্রতি ১৫০
টাকা রাজ্য সরকারগুলোকে ডোজ প্রতি ৪০০ টাকা এবং বেসরকারি
হাসপাতালে ডোজ প্রতি ৬০০ টাকা, সিরাম ইনস্টিটিউটের সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশে তীব্র অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রের
কড়া সমলোচনা করেছেন। পশ্চিমবঙ্গের কোনো কোনো জেলা
বিশেষ করে সীমান্ত জেলা মুর্শিদাবাদ। মালদহের কোনো হাসপাতালে বেড নেই। অক্সিজেন নেই। চিকিৎসার ন্যূনতম
ব্যবস্থা নেই। প্রতিদিন মৃত্যু মিছিল, প্রকৃত ছবি ধরা পড়ছে না। গঙ্গার ঘাট শ্মশানে সর্বত্র ঠাঁই নেই। চিতা জ্বলছে আর জ্বলছে। গত ৪/৫ মাস নির্বাচন ছিল না করোনা সংক্রমণ ছড়ায়নি। নির্বাচনে লক্ষ লক্ষ মানুষের ভীড়। করোনা তীব্র রূপ
ধারণ করেছে। নির্বাচন কমিশন, রাজনৈতিক দলের নেতারা কোভিড বিধি না মানা ভিড়
দেখেও চুপ। কোনো লাগাম ছিল না। এখন সব সীমা ছাড়িয়ে গেছে। অতিমারী ভয়ানক রূপ নিয়েছে। গণতন্ত্রের উৎসবে মৃত্যু মিছিল কেন? কল্যাণকামী সরকারের
ভূমিকা কোথায়? পশ্চিমবঙ্গে
বাম শাসন থেকে তৃনমূল নির্বাচন মানে
গণতন্ত্রের উৎসব নয়। হিংসা হানা হানির উৎসব
বোমাবাজি ইট বৃষ্টির খুন খুনির উৎসব।
কোনও নিয়ন্ত্রন নেই। সারা দেশকে দেখেও
শিক্ষা নিচ্ছে না বাংলার মানুষ, মানুষের লজ্জাবোধ নেই। হিংসার সঙ্গে অতিমারী করোনার তাণ্ডব সমানে চলছে। বাংলার
মানুষ তাই চাই।
কোন মন্তব্য নেই