Header Ads

লুঙ্গি, টুপি দাড়ি আর বিজেপির কাছে ব্রাত্য নয়, বাঙালিরা ব্রাত্য, দিসপুর দখলে বঙ্গীয় মুসলিম ভোটার


প্ৰতীকী ছবি, সৌঃ আন্তর্জাল

 অমল গুপ্ত, গুয়াহাটি

 অসমিয়া জাতীয়তাবাদী দল লাচিত সেনা বঙ্গ মূলের মুসলিম,আর বাঙালি হিন্দুদের সঙ্গে নিযে দল গড়তে রাজি নয়, অখিল গগৈয়ের নতুন দল ‘রাইজর দল’ বরাক এবং নিম্ন অসমে জেলার আহ্বায়ক অধিকাংশ বঙ্গীয় মূলের মুসলিম,পদে বসেছেন। অখিল গগৈয়ের সমর্থন আছে, কিন্তু লাচিত সেনা তার প্রতিবাদ করে ৭০ টি সংগঠনকে নিয়ে গঠিত কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতির নতুন রাজনৈতিক দল রাইজর দল ছেড়েছে। এবার বিজেপি সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে রাজ্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী বঙ্গীয় মুসলিমদের সমর্থন আদায়ের সব চেষ্টা শুরু করেছে। এবার নির্বাচনে ইতিমধ্যে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকা থেকে ১৮ জন মুসলিম প্রার্থী দেওয়ার তোড়জোড় শুরু করেছে। 

সংখ্যালঘু উন্নয়ন মোর্চার সভাপতি মুক্তার হোসেন খান জানিয়েছেন নিম্ন অসমে ও বরাকে এবার বঙ্গীয় মুসলিম অর্থাৎ বাংলাভাষী মুসলিমরা বিজেপিকে সমর্থন করবে। বিগত নির্বাচনে বিজেপির মাত্র এক জন বিধায়ক বরাকের আমিনুল হক লস্কর, এবার  বাড়বে, বিজেপি মুসলিম জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে বোর্ড গঠন করে মমিনুল আওয়ালকে অধ্যক্ষের পদে বসিয়ে কয়েকশো কোটি টাকা বাজেট দিয়েছে, বৃত্তির টাকার ব্যাপক দুর্নীতি ছাড়া কিছু উন্নতি হয়েছে। প্রায় ৫০০ কোটি টাকার বাজেট অপর দিকে মাত্র ২০.২৫ কোটি টাকার বাজেট দিয়ে বাঙালি হিন্দুদের উন্নয়নে ভাষিক সংখ্যালঘু উন্নয়ন বোর্ড গঠন করে প্রাক্তন বিধায়ক অলক ঘোষকে অধ্যক্ষ পদে বসানো হয়েছে। আরেক তথাকথিত বাংলাভাষী সংগঠন গড়ে বাঙালি সংগঠন গুলোকে হাতে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। বাজেট শুনলে লজ্জায় পড়বেন। ভাষিক সংখ্যালঘু বোর্ড কিন্তু একা বাঙালিদের নয়, হিন্দি ভাষী,মনিপুরী,নেপালি প্রভৃতি ১৩ টি জনগোষ্ঠীর বাজেট কত বাজেট? মাত্র ২৪ কোটি টাকা, তাও অপব্যবহার করার অভিযোগ আসছে, গত বাজেট ছিল মাত্র ৫ কোটি, বোর্ডের অধ্যক্ষ অলক ঘোষ, মরিয়নি এবং উপাধ্যক্ষ রামকৃষ্ণ ঘোষ হোজাই থেকে ভোটে দাঁড়াবেন, প্রায় ৫০ লক্ষ বাঙালি জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে মাত্র ২৪ কোটি এই দুটি কেন্দ্রে জেতার জন্যে ছড়াবে বলে ফেডারেশন অভিযোগ করেছে। যারা বিজেপিকে দিসপুরের মসনদে বসালো তাদের  গুরুত্ব কমিয়ে দিয়ে বঙ্গীয় মুসলিমদের এবার বেশি করে টিকিট দেওয়ার তোরজোড় চলছে, গত বিধানসভাতে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকাতে মাত্র সাড়ে তিন জনকে টিকিট দেওয়া হয়েছিল, এবার তাও পাবে কিনা সন্দেহ আছে। 

 মুসলিমদের বিরুদ্ধে আর সমালোচনা করা যাবে না, হোজাইয়ের বিজেপি বিধায়ক শিলাদিত্য দেব মুসলিমদের বিরুদ্ধে বেশি সরব ছিলেন, তাই এবার তাঁর ডানা কাটার চেষ্টা চলছে,মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ও  আর মুসলিমদের বিরুদ্ধে কথা বলছেন না। সবই বিজেপি দলের নির্বাচনী কৌশল বলে মনে করা হচ্ছে, বিজেপির কৌশল সফলতার দিকে যাচ্ছে, তার প্রমাণ। পাওয়া গেল আজ শোণিতপুর জেলার বরসলাতে বিজেপি বিধায়ক গণেশ লিম্বুর উপস্থিতিতে প্রায় ২০০ বঙ্গীয় মূলের মুসলিম বিজেপি দলে যোগ দেন, এক মুসলিম প্রতিনিধি উদাত্ত কণ্ঠে ঘোষণা করলেন, আগে লুঙ্গি টুপি দাড়ি মানেই লোকে বলতো তারা কংগ্রেস দলের সমর্থক, কিন্ত আর নয় এবার তারা বিজেপিকে ভোট দেবে। বাবরি মসজিদ থাকা না থাকা তাদের কোনও ক্ষতি বৃদ্ধি নেই এমন কথা বলতেও কুন্ঠিত হলেন না। আজ এ আই ইউ ডি এফ-এর সভাপতি সাংসদ বদরুদ্দীন আজমল অন্ধ  সংস্কার, ধর্মে বিশ্বাসী প্রচার শুরু করেন, বদরুদ্দীন সায়েব জলের বোতলে ফুঁ দিয়ে সকলকে পান করতে দিয়ে জন সভা শুরু করেন। তার আর আগের জনপ্রিয়তা নেই, কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতাকে তিনি ঝুলিয়ে রেখেছেন, তরুণ গগৈ কবে সুস্থ হয়ে  হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরবেন তারপর সমঝোত, চূড়ান্ত ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত দুটি দল কোনও নির্বাচনী কৌশল তৈরি করতে পারছে না। এই সমঝোতা ভাঙার জন্যে বিজেপি সর্ব শক্তি নিয়োগ করবে, নতুন নতুন দলগুলো আজও সংগঠিত নয়। সবদিক থেকে বিজেপি এগিয়ে আছে, আজ বরসলার ঘটনা  অন্য দল গুলোকে যথেষ্ট ভাবাবে। লুঙ্গি টুপি দাড়ি আর বিজেপির কাছে ব্রাত্য নয়, তারা বিজেপির ভোটার তাদের সমর্থন নিয়ে বিজেপি নির্বাচনী বৈতরণী পার হবে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.