Header Ads

জন্মদিনে কবিতার বই উপহার ত্ৰিপুরার প্ৰখ্যাত অভিনেত্রী মধুমিতা তালুকদারকে

 

জন্মদিনে কবিতার বই প্রকাশ, ব্যতিক্রমী উপহার পেলেন ত্রিপুরার প্ৰখ্যাত অভিনেত্রী মধুমিতা তালুকদার

নয়া ঠাহর প্রতিনিধি, আগরতলা , ৯ অক্টোবরঃ

 জন্মদিনে কবিতার বই  উপহার পেলেন ত্রিপুরার প্ৰখ্যাত অভিনেত্রী মধুমিতা তালুকদার। কবি আশীষ ভট্টাচার্য - শুধু  তোমাকেই, মধুমিতার কবিতার বইটি প্রকাশ করে তাঁর কাব্য নায়িকাকে দিয়েছেন জন্মদিনের সেরা উপহার। উপহার পেয়ে মধুমিতা আবেগে আপ্লুত হয়ে বললেন, দারুণ দারুণ দারুণ, আমার জীবনের সর্বসেরা উপহার। সার্থক আমার জীবন যে আমি কারও কাব্যনায়িকা হতে পেরেছি। বৃহস্পতিবার অভিনেত্ৰীর আগরতলার বাড়িতে জন্মদিনের অনুষ্ঠানেই প্রকাশিত হয় কবিতার বইটি। বইটির আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করেন ত্রিপুরার প্রখ্যাত কবি জোৎস্না বেগম। আগরতলার নির্মলা কালচারাল সোসাইটির শিল্পীদের গানে শুরু হয় অনুষ্ঠান। কবি আশীষ ভট্টাচার্য, মধুমিতা তালুকদার, মানসী রায় ও জোৎস্না বেগম কথা বলেন অনুষ্ঠানে। শিল্পী উৎপলা গোস্বামী, বিপ্লব তালুকদার, মিস্টি গোপ ও শ্রুতি দেবনাথের গান অন্যমাত্রা এনে দেয় অভিনেত্রীর জন্মদিনের অনুষ্ঠানে। ছোটবেলায় পাড়ার পুজোতে রবীন্দ্রনাথের ডাকঘর নাটকে অমলের চরিত্রে   অভিনয়ের মাধ্যমে শুরু মধুমিতার অভিনয় জীবন। ছোটবেলা থেকেই দুরন্ত চঞ্চল, ছটফটে মধুমিতার স্বপ্ন ছিল বড় হয়ে নায়িকা হওয়ার। কলেজ বেলায় কলেজ সপ্তাহে নাটকে অভিনয় করে বাহবা কুড়িয়েই আরো উৎসাহ পান অভিনয়ে। ত্রিপুরার উনকোটি জেলার কুমারঘাটে পিসি প্রয়াতা মিনতি দাস তালুকদারের কাছেই বড় হয়েছেন ছোটবেলায় মা - বাবা হারানো মধুমিতা।

 ২০০৫ সালে আগরতলায় আসেন বিবাহ সূত্রে। আগরতলার সেরা নাটকের মঞ্চ আন্তঃঅফিস নাটক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে পুরস্কৃত হয়ে আরও উৎসাহিত হন মধুমিতা। নাটকে অভিনয় করেছেন কলকাতা ও বেঙ্গালুরুর নাট্যমঞ্চেও। ত্রিপুরার বিভিন্ন যাত্রাদলের সঙ্গে একশোটির মত যাত্রাপালায় অভিনয় করে পেয়েছেন যাত্রাশিল্পীর তকমাও। মধুমিতা যুক্ত মডেলিংয়ের সঙ্গেও। ত্রিপুরায় তৈরি টেলিফিল্ম জিয়নকাঠিতে অভিনয় করে দরাজ প্রশংসা পেয়েছেন। দাদাভাই  সমেত তিনটি সিনেমায়ও অভিনয় করেছেন মধুমিতা। এন আর সি- র প্রেক্ষাপটে ত্রিপুরায় শুটিং হওয়া বলিউডের ছবি - নয়েস অফ সাইলেন্স নামক সিনেমাতেও অভিনয় করেছেন। খুব শীঘ্রই সিনেমাটি রিলিজ হবে বলেও জানান তিনি। মধুমিতার আক্ষেপ- মেয়েরা পুরুষের চেয়ে বেশী, সমাজ ও পরিবার বারবার মেয়েদের নীচে টেনে নামিয়ে আনতে চায়। কেন হবে এমনটা প্রশ্ন মধুমিতার। নিজের জীবনেও প্রত্যক্ষ, অ -প্রত্যক্ষ বহু বাধার সম্মুখীন হয়েছেন তিনি। দমবার পাত্রী নন মধুমিতা। নিজের লক্ষ্যে অবিচল মধুমিতা চান,মহিলা ক্ষমতায়ন, সমানাধিকার নিয়ে লোকদেখানো ভান না করে বাস্তবায়িত হোক কথাগুলি। কবিতার বইটি আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করে কবি জোৎস্না বেগম বলেন, কবি আশিস ভট্টাচার্য্য, তাঁর কর্মে,সাধনায় নিজেই নিজের স্থান করে নিয়েছেন মানুষের হৃদয়ে। সমস্ত শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে, মানসিক প্রতিবন্ধী সাহিত্যিকদের সৎ সাহসের সাথে দেখাতে পেরেছেন স্বচ্ছতা কি এবং কাকে বলে।  শুধু তোমাকেই মধুমিতা -  কাব‍িতার বইটিতে পঁচিশটি কবিতার বন্ধন পেয়েছি আমরা। কবিতাগুলিতে প্রেম আছে, ভালোবাসা আছে, দ্রোহ আছে, আছে নির্মম বাস্তবতার রক্তাক্ত আঁচরের দাগও। তাঁর বলিষ্ঠ উচ্চারণ, স্পর্ধা ও স্বচ্ছতায় কবিতাগুলি  অনন্য হয়েছে। এই পৃথিবীতে প্রতিটি বীণার তারে গুণীজনেরা আঘাত করেন বলেই  শ্রুতিমধুর শব্দ শোনা যায়। কবি আশিস ভট্টাচার্যের হৃদয় -বীণার তারে অনেক গুণীজনই আঘাত করেন বলেই আমরা তাঁর কাছ থেকে অসাধারণ শব্দের কাব‍্যগ্রন্থ উপহার পাই। অনেকের কাছেই তিনি নারীবাদী কবি, তাঁর লেখায় নারীর ছোঁয়া, যৌনতা প্রকট। পৃথিবীতে এমন কোনও মহাসাধু নেই, যিনি যৌনতা উপভোগ করেন না? তাঁরা গোপনে, মুখোশ পরে সেগুলো করেন, আর আশিস ভট্টাচার্য্য তা শৈল্পিক বিনির্মান  করেন অনুভবে। এখানেই ফারাক মননের। সুন্দর এবং সত‍্যের স্তবগান করাই একজন কবির ধ‍্যান ও সাধনা। কারণ, সত‍্য, সুন্দর সুর হলো কবির ঐতিহ্য। যেখানেই অসুন্দর, অ-সুর, সেখানেই ধ্বংস, বিনাশ ও শ্মশানচারী প্রলয় নৃত্য তাণ্ডব! দুঃখজনক হলেও সত‍্য যে, কবি আশিস ভট্টাচার্যের সামুদ্রিক হৃদয়ের গভীরতা অনুধাবন করা কোনও পরশ্রীকাতর, অসুন্দরের পূজারী ও আঁধারবিলাসীদের পক্ষে সম্ভব নয়। এই পৃথিবীতে ফুল ফুটে, ঝরে যায়।  কিছু ফুল পুজোর অর্ঘ‍্যে লাগে, কিছু খোঁপায় গুঁজে মানবী আর কিছু ফুল পায়ে পিষে পৈশাচিক আনন্দ উপভোগ করে অসুরের দল। ফুলের মতো নারীকে সম্মানে পুজো দিতে জানে সেই পুজারী, তিনিই তো সুন্দরের সাধক। মধুমিতার মতো মিষ্টি ফুলকে তাঁরই জন্মদিনে প্রেমের বেদীতে বসিয়ে প্রেমাঞ্জলী দিলেন কবি।  পৃথিবীর সকল নারীদের পক্ষে কবি আশিস ভট্টাচার্যকে বিনম্র ভালোবাসা। তাঁর কাছে আমাদের আজন্মের ঋণ রয়ে গেল।কবিতার বইটির দারুন প্রচ্ছদ এঁকেছেন চিত্রশিল্পী অভিজিত পুরকায়স্থ।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.