Header Ads

১৯৫১- এক আত্মঘাতী নাগরিকত্বের ভিত্তিবর্ষ

    


মৃণাল তালুকদার 

  আচ্ছা, মানব সভ্যতার ইতিহাসে অসমিয়ারাই কি সবচেয়ে বেশি আশাবাদী জনগোষ্ঠী? না কি তারা সবচেয়ে নির্বোধ মানুষ? দ্য গ্রেটেস্ট ইডিয়ট? আসলে তারা দুটোই। অন্তত আমার তো তাই মনে হয়। না হলে ভাবুন দীর্ঘ চার দশকেরও বেশি সময় ধরে অনুপ্রবেশ ইস্যু অসমিয়া সমাজে নির্ণায়ক ভূমিকা নিতে পারত? শুধু তাই নয়, আগামী চল্লিশ বছরও যে এই ইস্যুটি এমন অবস্থানে থাকবে, এর যাবতীয় ইঙ্গিত দিনের আলোর মতো স্পষ্ট। মজার কথা হল, এতে যে কিস্যুটি নেই এই ইস্যুর কারবারিরা এটা মোক্ষম জানেনই শুধু নয়, এটাও তাঁরা বিলক্ষণ বোঝেন যে, অনুপ্রবেশ ইস্যু  আসলেই  অসমিয়া মানুষের সঙ্গে সবচেয়ে বড় ধোঁকা, । দ্য বিগেস্ট ফ্রড। 

 অনুপ্রবেশের নামে এই জালিয়াতি ও প্রতারণার দীর্ঘ ইতিহাসের একটি অধ্যায় আপনাদের সামনে তুলে ধরব এবং এর ঠিক কেন্দ্রবিন্দুকেই আমরা টার্গেট করব।

অসমের যাবতীয় ন্যারেটিভে ১৯৫১ শুধু অতি গুরুত্বপূর্ণই নয়, রীতিমতো পবিত্র একটি বিষয়। যাবতীয় বিতর্ক, আলোচনা সংলাপ এই বছরটিকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয়।

সাধারণ বিচারে অসমের মানুষের কাছে ১৯৫১ সালটিকে সব কিছুর ভিত্তি হিসাবে গণ্য করা হয়। বিদেশি বাছাইয়ের ক্ষেত্রে এই বছরটিকে যেমন ভিত্তিবর্ষ ধরা উচিত, তেমনি ভূমিপুত্র বা খিলঞ্জিয়ার সংজ্ঞা নির্ধারণ এবং অতি অবশ্যই এনআরসি আপডেটেরও ভিত্তিবর্ষ ১৯৫১ সালকেই ধরা উচিত বলে দাবি রয়েছে। অবশ্য এমন মানুষও রয়েছেন যারা মনে করেন ১৯৭১ সালটি অপরিবর্তিত থাকুক, এবং এটাই হোক ভিত্তিবর্ষ, ঠিক যেমনটা অসম চুক্তিতে রয়েছে।

একটা কথা বলে রাখা ভালো যে এখানে আমরা ১৯৫১ বা ১৯৭১ নিয়ে তর্ক-বিতর্ক করতে বসিনি, আমরা শুধু এটাই দেখাতে চাই যে, ১৯৫১ সাল আসলেই কতটা ফাঁপা। অন্তসারশূন্য।

গত কয়েক বছর ধরে অসমের জনমানস এই বছরটিকে কেন্দ্র করে আলোড়িত হচ্ছে এবং বিজেপি তা আরও উচ্চকিত স্তরে নিয়ে গেছে। অসমের অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বাড়ির ছাদের ওপর দাঁড়িয়ে চিৎকার করে এ কথা মনে করাতে ভোলেন  না যে তিনি ও তাঁর দল কীভাবে ১৯৫১ সালকে ভিত্তিবর্ষ চান, ১৯৭১ আদৌ তাঁদের এজেন্ডায় নেই।

এমন একটি ধারণা আমাদের অনেকের মধ্যেই রয়েছে যে ১৯৫১ সালের একটি নথি (পড়ুন এনআরসি) বাস্তবে আছে। এবং ১৯৫১-র নথিটির  ঝাড়াই-পোছাই বা সংশোধন করে কিছু ক্লাসিফিকেশন করা যেতে পারে। সোজা ভাষায় ওই নথিটিকে ব্যবহার করে বা সেটির ভিত্তিতে আমরা নিম্নলিখিত বিষয়গুলোর সন্ধান পেতে পারি। যেমন ঃ

১. অসমের আদি বাসিন্দা বা খিলঞ্জিয়া কারা?

২. অসমে বসবাসকারী বিদেশি কারা?

কিন্তু এর পাশাপাশি আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উঠে আসে। যেমন ঃ

১. ১৯৫১ সালের এনআরসি কি বাস্তবে পূর্ণাঙ্গরূপে রয়েছে?

২.সেটি কি অসমের সব কয়টি জেলা ও গ্রামকে অন্তর্ভুক্ত করেছে?

সত্য ও বাস্তব হলো, অসমের বর্তমান জনসংখ্যার ৩৫ শতাংশই ১৯৫১-র এনআরসির আওতায় নেই। অর্থাৎ ওই এনআরসি আজকের অসমের ৩৫ শতাংশকেই কভার করছে না।   সংখ্যার হিসেবে যদি ধরি তাহলে ১৯৫১-র এনআরসিকে ভিত্তি ধরলে বর্তমান অসমের এক কোটি মানুষের নাম সরাসরি বাদ পড়ে যাবে। ফলে আদি বাসিন্দা বা বিদেশির সংজ্ঞা এদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্যই নয়।

এটাই বৃহত্তম জালিয়াতি যা দিয়ে অসমের সাধারণ নিরীহ মানুষকে খেলানো হচ্ছে।

একটা কথা স্পষ্ট করে নেওয়া যাক যে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য আদৌ মনগড়া নয় বা এটা দারুণ কোনও গোপন তথ্যও নয়। এমনও নয় যে আমি অসম সরকারের কোনও টপ সিক্রেট ডকুমেন্ট ফাঁস করে দিচ্ছি। আমি আসলে ৪০০ পৃষ্ঠার একটি বিশাল ডকুমেন্টের মাত্র চারটি পৃষ্ঠা আপনাদের সামনে তুলে ধরছি। এই ৪০০ পৃষ্ঠার ডকুমেন্টটি আসলে অসম  বিধানসভায় বিগত সরকারের তরফে পেশ করা একটি উত্তর। ২০১২ সালের ১৯ জুলাই এআইইউডিএফ বিধায়ক আবদুল রহিম খান এনআরসি ও একদম শুরুর দিকের ভোটার তালিকা যা এখনও লভ্য, সে বিষয়ে একটি বিস্তারিত প্রশ্ন উত্থাপন করেছিলেন।

অসমের শীর্ষ স্থানীয় আমলারা বিষয়টি পুরোপুরি জানেন। এনআরসি তৈরির দায়িত্বে যাঁরা ছিলেন, জানেন তাঁরাও।  কিন্তু অসমের বর্তমান রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান এটাই নিশ্চিত করতে চায় যে যাঁরা বিষয়টি জানেন তাঁরা হয় চুপ করে থাকবেন, না হলে অন্যদিকে চোখ ফিরিয়ে রাখবেন, যাতে ১৯৫১ সালকে ঘিরে যে মিথ তা থেকে আরও বেশি ফায়দা তোলা যায়।

ঘটনা হল অসমে ১৯৫১ সালের এনআরসি সম্পূর্ণ ও পূর্ণাঙ্গ নয়। ফলে আইনের দিক থেকে এবং টেকনিক্যাল দিক থেকেও শুধুমাত্র এই অসম্পূর্ণ এনআরসিকে সামনে রেখে কোনও ভিত্তিবর্ষ বা অসমিয়ার সংজ্ঞা নির্ধারণ  সম্ভব নয়। ১৯৫১ সালের নথিটির সঠিক অবস্থান সম্পর্কে যাঁরা ওয়াকিবহাল, তাঁরা অন্যদিকে নজর ঘুরিয়ে রাখেন যাতে হিমন্তবিশ্ব শর্মা ও তাঁর মতো আরও অনেকে ১৯৫১-এর ঢোল পেটাতে পারেন। অথচ বাস্তব হচ্ছে, আমাদের হাতে যেসব ভোটার তালিকা রয়েছে সেগুলোতে অসমের এক তৃতীয়াংশের নামগন্ধও নেই। যার ফলে ১৯৫১ সালকে ভিত্তিবর্ষ ধরে কোনও আইন প্রণয়নের সম্ভাবনাই নেই।

 ১৯৫১ - র নিখোঁজ এনআরসি

সবচেয়ে বড় বাস্তব হল, শিবসাগরের মতো ঐতিহ্যশালী জেলারও ১৯৫১ সালের এনআরসি নেই। শুধু তাই নয়, কাছাড়, কার্বি আংলং, বাক্সা ও চিরাং জেলারও ১৯৫১ সালের এনআরসি নেই। এখানেই শেষ নয়। রাজ্যের ২৭ জেলার মধ্যে মাত্র ১২টিতেই ১৯৫১-র সম্পূর্ণ এনআরসি রয়েছে। নিচের তালিকাটির দিকে তাকালেই অসমে ১৯৫১ সালের এনআরসির অসারতার চিত্রটি স্পষ্ট হয়ে যাবে।

 

 

রাজ্য বিধানসভায় সরকার পক্ষের যে জবাব রয়েছে সেটি সুবিশাল। কিছুটা অস্বাভাবিক ঠেকলেও এ ক্ষেত্রে অসমের প্রতিটি গ্রামের রাজস্ব সার্কল ভিত্তিক বিস্তারিত তথ্য  এতে সন্নিবিষ্ট রয়েছে। কিন্তু তা পুরোটা পড়ে দেখার প্রয়োজন কেউ বোধ করেননি। বিধানসভার মহাফেজখানায় ওই সুবিশাল নথির ওপর ধুলোর আস্তরণ জমছে। কিন্তু ধূলি-আকীর্ণ নথিটি চোখে আঙুল দিয়ে এই সত্যই সবার সামনে তুলে ধরছে যে আমাদের বৌদ্ধিক গভীরতা কত অন্তঃসারশূন্য।

আমরা একটি নির্দিষ্ট বছর অর্থাৎ ১৯৫১ সালকে নিয়ে তর্ক করছি । কিন্তু বাস্তব হল এই  বছরের কোন তালিকা আমাদের হাতে নেই। বিষয়টি অনেকটা এরকম যেন আমাদের হাতে আসলে কোন সম্পত্তি নেই, অথচ সেই সম্পত্তির ভাগবাটোয়ারা নিয়ে আমরা তর্ক করে যাচ্ছি।

সহজ সরল সত্যটা হচ্ছে এই যে, অসমে ১৯৫১ সালের এমন কোনো নথি নেই যেটাকে অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যেতে পারে। এসব ক্ষেত্রে পরবর্তী সময়ের ভোটার তালিকা ছাড়া গত্যন্তর নেই। আর সে গুড়েও বালি, কারণ অধিকাংশ জেলাতেই ভোটার তালিকা নেই।

রাজ্যের মাত্র দুটি জেলায় ১৯৫১ সালের ভোটার তালিকা রয়েছে। অসমের গরিষ্ঠ সংখ্যক জেলায় ১৯৬৬ সালের ভোটার তালিকাই মূলত পাওয়া যায় । এমনকি কিছু কিছু জেলায় তো ১৯৭১ সালের আগের কোনো ভোটার তালিকাই  নেই।

নিচের তালিকাটি দেখুন তাহলেই চিত্রটি স্পষ্ট হয়ে যাবে।
এ থেকে একটা বিষয় স্পষ্ট যে  যোরহাটের মত জেলাতেও ভূমিপুত্র সংজ্ঞা নির্ধারণের জন্য যদি  ১৯৫১ সালকে ভিত্তিবর্ষ ধরতে হয় তাহলে তা-ও পারা যাবে না, কারণ উজান অসমের এই জেলাতেও ১৯৬৬ সালের ভোটার তালিকাই শুধু পাওয়া যাচ্ছে। ৮৮৪টি গ্রামের মধ্যে ২৬৪টিতেই এনআরসি হয় হারিয়ে গেছে না হলে নষ্ট হয়ে গেছে। এবার ধরা যাক তিনসুকিয়ার কথা। ১৯৫১ সালকে ভিত্তিবর্ষ ধরে যদি বিদেশি সনাক্ত করতে হয় তাহলে ১১৬৮ গ্রামের মধ্যে ৬২৬টি গ্রামকে শুরুতেই বাদ দিতে হবে, কারণ এই গ্রামগুলোতে ১৯৫১ সালের এন আরসির নামগন্ধও নেই। জেলাগুলোতে সবচেয়ে সেরা বিকল্প হচ্ছে ১৯৬৬ সালের ভোটার তালিকা যা কিনা ১৯৫১  সাল থেকে ১৫ বছর পরের।

এটা কি অসমের মানুষের সঙ্গে বড় জালিয়াতি নয়?

নলবাড়ি জেলার উদাহরণ ধরা যাক। বিষয়টি এখনও সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চের আওতায় রয়েছে, তারপরও তর্কের খাতিরে যদি আমরা ধরেও নিই যে সুপ্রিম কোর্টের রায় ১৯৫১ সালের পক্ষেই গেছে, তা হলেও নলবাড়ির মত জেলায় ৫৫% গ্রামে কাজ শুরুই করতে পারবেন না জেলাশাসক, কারণ এই গ্রামগুলোতে ১৯৭১ সালের আগের কোনও ভোটার তালিকাই নেই। নলবাড়ি জেলার ৪৫৬টি গ্রামের মধ্যে ২৫১টিতেই ১৯৫১ সালের এনআরসি স্রেফ হারিয়ে গেছে। এক্ষেত্রে অসহায় জেলাশাসক কী করবেন? তার সামনে একটাই বিকল্প রয়েছে তা হলো ১৯৭১ সালের ভোটার তালিকা, কারণ এই জেলায় ১৯৫২ সাল থেকে ১৯৬৬ সালের মধ্যে কোন ভোটার তালিকা নেই।

তাহলে কী নিয়ে আমরা এতদিন ধরে শুধু কথাই বলে যাচ্ছি? আমাদের হাতে ১৯৫১-র এনআরসি নেই, আমাদের হাতে ১৯৫২ সালের ভোটার তালিকাও নেই, আমাদের ভরসা করতে হচ্ছে ১৯৬৬ ও ১৯৭১ সালের ভোটার তালিকার ওপর। তারপরও আমরা কী নিয়ে এত চিৎকার চেঁচামেচি করছি?

তাহলে আমরা সবাই কেন অসমের মানুষকে আরো একবার বোকা বানাতে চাইছি?

যখন আমাদের কোনো মূল  ভিতই  নেই , তখন আমরা কেন হাওয়ার ওপর প্রাসাদ বানাতে চাইছি?

মোদ্দা কথা হল, ১৯৫১ সালকে ধরে নিয়ে আমরা যখন অনুপ্রবেশ ও ভিত্তিবর্ষ নিয়ে কোনো আলোচনা আসলেই পুরোপুরি অর্থহীন কারণ আমাদের হাতে আলোচনা করার মতো পূর্ণাঙ্গ কোনো নথিই নেই।

ক্ষমতায় যারাই থাকুক না কেন তারা এই সত্যটা ভালোভাবেই জানে, কিন্তু অসমের সাধারণ মানুষকে এই ইস্যুতে বাঁদর  নাচাতেই তারা বেশি ভালোবাসেন।

মূলত  এই কারণেই সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন মুখ্য বিচারপতি রঞ্জন গগৈ বারবার সতর্ক করে দিয়েছেন যে ১৯৭১ সালকে ভিত্তিবর্ষ ধরার যে বিধি তাতে কোনো ধরনের  হস্তক্ষেপ বাঞ্ছনীয় নয়।
গগৈ বলেছেন, এনআরসি ভিত্তিবর্ষ ঠিক করার ক্ষেত্রে অসমিয়া জনগণ বারবারই উদারতা ও সিংহহৃদয়ের পরিচয় দিয়েছে।  অনুপ্রবেশের প্রথম পর্যায়ে  তাদের পূর্বপুরুষকে অস্তিত্বের সংকটে ফেলার পরও অসমিয়া মানুষ এই উদারতার পথ পরিহার করেনি। এই উদারতার মুলে রয়েছে অন্যকে  বরণ করে নেওয়ার মানসিকতা।  আজ যারা ভিত্তিবর্ষ নিয়ে আপত্তি তুলছে তাদের এটা স্মরণ করিয়ে দিয়ে এ কথা বুঝিয়ে বলার সময় এসেছে যে তারা আসলে আগুন নিয়ে খেলছে।

গত কয়েক বছর ধরে ১৯৫১ সালকে ভিত্তিবর্ষ করার দাবি বারবার যাঁরা তুলছেন, তাঁরা আসলে ওই আগুনকেই উস্কে দিতে চাইছেন। অথচ তাঁরা এটা খুব ভালো করেই জানেন যে ১৯৫১ সালকে পাকাপোক্তভাবে প্রতিষ্ঠা করার মতো কোনো তথ্য তাঁদের হাতে নেই। তা সত্ত্বেও ভূমিপুত্রের সংজ্ঞা  ও অনুপ্রবেশকারীর ভিত্তিবর্ষ নির্ধারণের নামে এই জালিয়াতি চলছে গত চার দশক ধরে।

নিজেদের নাগরিকত্ব প্রমাণ করার জন্য অসমের ৯০ লক্ষ মানুষ এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় ছুটে বেড়িয়েছেন, কবেকার হারিয়ে যাওয়া নথি উদ্ধারের জন্য বহু কষ্টে উপার্জিত অর্থ খোয়াতে হয়েছে তাঁদের, এই গোটা পর্বে হাজার হাজার পরিবার পথে বসেছে, শেষ হয়ে গেছে, বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।  এতো কিছুর পর দেড় হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে নাগরিকদের  এমন একটি  তালিকা তৈরি করা হয়েছে যে তালিকা নিয়ে এখন আর কারোর কোনো আগ্রহ নেই। আজকের ভারত এই সমস্যার গভীরতা কবে অনুধাবন করবে?  এবং যখন তা অনুধাবন করা হবে তখন গোটা দেশের কাছে অসমিয়া জনগণকে কী মনে করা হবে? পৃথিবীর সবচেয়ে আশাবাদী মানুষ , না কি মানব সভ্যতার সবচেয়ে বোকা জাতি? দ্য গ্রেটেস্ট ইডিয়টস ইন হিউম্যান হিস্ট্রি ?

বাংলাদেশি-মুক্ত অসম! এই স্বপ্নের পেছনে ছুটে আমি আমার কৈশোর-যৌবনের প্রায় গোটা সময়টাই ব্যয় করেছি।  সেসময় অসম আন্দোলনের একজন কর্মী হিসাবে।  তার পর গত ৩৫ বছর পেশাদার সাংবাদিক হিসাবেও ওই স্বপ্নকেই  বাস্তব করতে চেয়েছি।  এতো কিছুর পর আজ আমি মনে করি, আরো অনেকের মতো আমারও একথা বলার সময় এসেছে যে আমাদের জীবনের একটি বড় অংশ ও শক্তি আমরা একটি মিথ্যা স্বপ্নের পিছনে ছুটে নষ্ট করেছি।  মিথ্যা স্বপ্ন, অর্থাৎ বাংলাদেশি-মুক্ত, বিদেশি-মুক্ত অসম।

(লেখক গুয়াহাটির বিশিষ্ট সাংবাদিক, মতামত নিজস্ব। লেখাটি শিলচরের নিউজ পোর্টাল বার্তালিপি থেকে সংগৃহীত। )

 

 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.