Header Ads

অসম সরকারের মাদ্রাসা ও টোল শিক্ষা বিলুপ্তিকরন সিদ্ধান্ত নিয়ে সরব মাদ্রাসার সংগঠনগুলো

 


অনিন্দ্য ভট্টাচার্য, বদরপুর : মাদ্রাসার ছাত্রদের সাধারণ শিক্ষার মেন স্টিমে নিয়ে আসার যে প্রস্তাব সরকার দিয়েছে তা সম্পূর্ণ অসার ও গুরুত্বহীন। মাদ্রাসা শিক্ষা কোন বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। রিভাইজড সিলেবাস অনুযায়ী মোট ৯০০ নম্বরের মধ্যে ৫০০ নম্বরই এইচএসএলসি পরীক্ষার পাঠ্যক্রমের অন্তর্গত । বাকি চারশো নম্বর নির্ধারিত আরবি তথা ধর্মীয় বিষয়ের জন্য। কাজেই অসম সরকার মাদ্রাসা শিক্ষা বিলুপ্তিকরণের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা কতটুকু যুক্তিসঙ্গত। বুধবার বদরপুরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে উত্তর পূর্ব ভারত এমারতে শরয়ীয়াহ ও নদওয়াতুত তাতিরের আমিরে শরিয়ত মওলানা ইউসুফ আলি, উত্তর পূর্ব ভারতের নাইবে আমিরে শরিয়ত তথা অসম রাজ্যিক জমিয়ত উলামার উপ সভাপতি মওলানা ইয়াহইয়া , উত্তরপূর্বাঞ্চল  আহলে সুন্নত আল জামাতের মূখ্য উপদেষ্ঠা মওলানা ছরিমুল হক, নদওয়ার প্রসাশনিক সম্পাদক মওলানা ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী, জমিয়ত উলামার অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক মওলানা মহবুব হাছান, ধর্মীয় সংগঠন সমূহের সমন্বক এএইচ মহম্মদ লোকমান প্রমুখ সরকারের মাদ্রাসা ও সংস্কৃত টোল তুলে দেওয়ার ফরমানের মূল উদ্দেশ্য কী এনিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এই ফরমানের  সাংবিধানিক বৈধতা কোথায়। সংবিধানের ২৮,২৯ ও ৩০ নম্বর  ধারা, আসাম এডুকেশন্যাল রুলস অ্যান্ড ওর্ডার্স ১৯৫৪, দ্য আসাম মাদ্রাসা এডুকেশন  ( প্রভিনসিয়ালাইজেশন ) অ্যাক্ট ১৯৯৫ এবং দ্য আসাম ভেঞ্চার মাদ্রাসা এডুকেশন ইন্সটিটিউশন ( প্রভিনসিয়ালাইজেশন অব সার্ভিস ) অ্যাক্ট ২০১১ অনুযায়ী পরিচালিত মাদ্রাসাগুলি বন্ধ করা সম্পুর্ন সংবিধান বিরোধী বলে মন্তব্য করেন তাঁরা। প্রথম পদক্ষেপ হিসাবে ইতিমধ্যেই মাদ্রাসা সঞ্চালক পদের বিলুপ্তি ঘটানো হয়েছে। অথচ  দেশের অন্যান্য রাজ্যে সরকার পরিচালিত অনেক মাদ্রাসা বোর্ড রয়েছে। সেই সব রাজ্য সরকার বাজেটে অসম থেকে অনেক বেশি অনুদান মাদ্রাসার জন্য বরাদ্দ করে। ইতিমধ্যেই সমস্ত ইসলামিক ধর্মীয় সংগঠনের অসমের সরকারি মাদ্রাসাগুলিকে উন্নত করতে খালি পদ পূরণ এবং ৩০৬টি অপ্রাদেশিকৃত মাদ্রাসা কে প্রাদেশিকরণের দাবি জানানো হলেও সরকার কোন উত্তর দেয়নি। উপরন্তু কিছুদিন আগে এমটেট বাতিল করার সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। এই সব মাদ্রাসা ও টোল থেকে পাস করা হাজার হাজার ছাত্রের ভবিষ্যৎ আজ প্রশ্নের মুখে। অথচ এই সব মাদ্রাসা ও টোল থেকে পাস করা অনেক খ্যাতিমান ছাত্র দেশ ও জাতির সেবা করে গেছেন। ভারতের প্রথম শিক্ষা মন্ত্রীও মাদ্রাসা শিক্ষায় শিক্ষিত ছিলেন। আর অসমের বেশির ভাগ মাদ্রাসাই বর্তমান শিক্ষামন্ত্রীর হাত দিয়েই প্রাদেশিকরণ হয়েছে। ফ্যাসিবাদী সরকার এই তথ্যগুলি ভুলে গেছে।  বুধবারের সাংবাদিক সম্মেলনে  ধর্মীয় সংগঠনের নেতৃবৃন্দ মাদ্রাসাগুলির কোন প্রকার রদবদল ও পরিবর্তন না করার জোরাল আবেদন জানান। সরকার যদি এই নায্য দাবিগুলি পূরণ না করে একতরফা ভাবে মাদ্রাসা ও টোল সমূহ বন্ধ করে দেয় তবে উত্তর পূর্ব ভারতের মূখ্য পাঁচ সংগঠনের নেতৃবর্গ চুপ করে বসে থাকবেন না। বৃহত্তর গণতান্ত্রিক আন্দোলন গড়ে তোলা সহ আইনী লড়াইয়ের মাধ্যমে মাদ্রাসার অস্তিত্ব করতে বদ্ধ পরিকর বলে হুঁসিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.