Header Ads

বিক্রমপুর সমবায় সমিতিতে দুর্নীতির অভিযোগ

বি.এম.শুক্লবৈদ্য, বিহাড়াঃ বিক্রমপুর সমবায় সমিতির বিরুদ্ধে উঠল একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ। মঙ্গলবার বিহাড়া গড়েরভিতর জিপির মহিলা সমবায় সমিতির কার্যালয়ে বিক্রমপুর সমবায় সমিতিতে চলা দুর্নীতির বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদী সভা আয়োজিত হয়। এর আগে আয়োজিত হয় এ সংক্রান্ত এক সাংবাদিক সম্মেলন। সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বক্তারা বলেন বিক্রমপুর সমবায় সমিতি এখন দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়ে, সমিতির ঐতিহ্য  হারিয়েছে। সমিতিতে গ্রাহকদের মধ্যে জিনিসপত্র বন্টনে চলছে চরম নৈরাজ্য। চাল বন্টনে গ্রাহকদের এক কেজি দুই কেজি করে কম দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করা হয়। সমিতির সম্পাদক সমিতিতে বছরের পর বছর অনুপস্থিত থাকেন। সমিতির সম্পাদক সঞ্জয় বর্মণকে গ্রাহকরা চিনবেন না বলে বক্তারা অভিযোগ জানিয়েছেন। সম্পাদকের স্থলে মাসিক বেতন দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। সমিতির নীতি নির্দেশিকা মতে ১৫ জন নির্বাচিত বোর্ড অব ডিরেক্টর দ্বারা সমিতি পরিচালিত হওয়ার কথা, কিন্তু বিক্রমপুর সমবায় সমিতি ২০১৮ সাল থেকে ১৩ জন বোর্ড অব ডিরেক্টর দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। ১৩ জনের মধ্যে কোনো কারণ ছাড়াই বিশাল সরকার, সফিক উদ্দিন, বাপন ঘোষ ও সত্যেন্দ্র দাসকে সমিতির সম্পাদক সঞ্জয় বর্মণ অবৈধ ভাবে বহিষ্কার করেন বলে বক্তাদের অভিযোগ। সঞ্জয় বর্মণ কর্তৃক নিয়োজিত সমিতির কর্মীরা গ্রাহকদের সাথে সব সময় দুর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ করা হয়। প্রতি মাসে সমিতির ডিলারদের নায্য মূল্যের সামগ্রী সঠিক ভাবে বন্টন না হওয়ায় গ্রাহকরা সঠিক জিনিস পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে 

সাংবাদিকদের জানান উপস্থিত বক্তারা। বন্টনকৃত চাল পাথর কাঁচে ভরপুর থাকে বলে বক্তাদের অভিযোগ। সমিতির চেয়ারম্যান হুরমত আলী সব সময়ই সমিতিতে অনুপস্থিত থাকেন ও ওনার মোবাইল সব সময় সুইচ অফ থাকে তাই গ্রাহকরা প্রযোজনে ওনার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন না। গত ২৭ শে সেপ্টেম্বর মাত্র ১৪-১৫ জন সভ্যদের নিয়ে সমিতির সাধারণ সভা আয়োজিত হয়। বৃহত্তর গ্রাহকরা সাধারণ সভার কথা জানেন না। এই সাধারণ সভার বিষয়ে মাইকযোগে বা চিঠি দিয়ে গ্রাহকদের জানানো হয়নি বলে অভিযোগ করা হয়। আভ্যন্তরীণ হিসাব পরীক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রেও সমিতির নিয়ম নীতি মানা হয়নি বলে অভিযোগ জানিয়েছেন বক্তারা। সমিতিতে সিন্ডিকেট রাজ চলছে, এর মাধ্যমে গ্রাহকদের চরম হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠে। সম্পাদক সঞ্জয় বর্মণের অদৃশ্য অঙ্গুলি হেলনে এই সিন্ডিকেট রাজ চলছে বলে বক্তারা অভিযোগ করেন। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সরকারী কর্মী সহ প্রতারকদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবিতে বক্তারা সমবায় বিভাগ আসামের মূখ্য পঞ্জিয়কের কাছে অভিযোগ জানাবেন বলে বক্তারা সাংবাদিকদের জানান।গড়েরভিতর মহিলা সমবায় সমিতির সম্পাদিকা নীলা পাল বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে তাকে বিক্রমপুর সমবায় সমিতির কর্মীরা জিনিস ওজনে কম দিয়ে থাকেন। যার ফল স্বরূপ গড়েরভিতর মহিলা সমবায় সমিতি বর্তমানে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন। কমিশনের টাকা নীলা পাল পাননি বলে অভিযোগ করেন। ২৭ সেপ্টেম্বরের বিক্রমপুর সমবায় সমিতির সাধারণ সভায় তার বিরুদ্ধে আনা সঞ্জয় বর্মণের সকল অভিযোগ খণ্ডন করেন গড়েরভিতর মহিলা সমবায় সমিতির সম্পাদিকা নীলা পাল। তিনি বলেন ওনার ও বিশাল সরকারের শেয়ার কার্ড বাতিল করার যে চক্রান্ত বিক্রমপুর সমবায় সমিতি কর্তৃপক্ষ করছেন তা অতী নিন্দনীয়। ২০১৮ সনের বোর্ড অব ডিরেক্টর নির্বাচনের সময় ওনার জামানতের টাকা বিক্রমপুর সমবায় সমিতি কর্তৃপক্ষ আজও ফেরত দেয়নি বলে নীলা পালের অভিযোগ। কালাইন ব্লক কংগ্রেস সভাপতি তথা বিক্রমপুর সমবায় সমিতির বোর্ড অব ডিরেক্টর বিশাল সরকার বলেন সমিতির তিন মাসের চানা নিয়ে তিনি প্রশ্ন তুললে তার বিরুদ্ধে বিক্রমপুর সমবায় সমিতি কর্তৃপক্ষ তাদের কর্মীর সাথে মিথ্যা দুর্ব্যবহারের অভিযোগ আনে যা অত্যন্ত নিন্দনীয়। কাটিগড়ার সার্কল অফিসারের কাছে বিক্রমপুর সমবায় সমিতির চানা না আসার অভিযোগ করার সাথে সাথে কিভাবে একসাথে তিন মাসের চানা চলে এল ? এর পেছনে কি রহস্য আছে ? এ নিয়ে  বিশাল  প্রশ্ন তোলেন। বিশাল সরকার বলেন গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত সফিক উদ্দিনের নেতৃত্বে সমিতির বোর্ড গঠিত হলেও কলকাঠি নেড়ে সঞ্জয় বর্মণ তা বাতিল করেন। কারণ সফিক উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন বোর্ড সঞ্জয় বর্মণের নিহিত স্বার্থ চরিতার্থ হচ্ছিল না বলে বিশাল সরকারের অভিযোগ। তাদের চারজনকে অবৈধ ভাবে বহিষ্কারের বিরুদ্ধে বিক্রমপুর সমবায় কর্তৃপক্ষের উপর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান বিশাল সরকার।অন্যান্যদের মধ্যে সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন হবিবুর রহমান বড়ভূইয়া, বিক্রমপুর সমবায় সমিতির পুরাতন শেয়ার হোল্ডার মশিউর রহমান, লক্ষী সূত্রধর, বুরুঙ্গা জিপির সভাপতি নজমূল হোসেন, মুসলিম উদ্দিন বড়ভূইয়া প্রমূখ। এদিন মশিউর রহমান এর সভাপতিত্বে আয়োজিত প্রতিবাদী সভায় সদ্য প্রয়াত সমিতির দীর্ঘদিনের কর্মী নবেন্দু ভট্টাচার্যের স্মৃতিতে শোক জ্ঞাপন করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সভায় বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী সহ অন্য বক্তারা বক্তব্য রাখেন।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.