আজকের শিক্ষা ব্যবস্থার প্রেক্ষিতে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
দ্রুত পৃথিবীর পরিবেশ ও জীবন যাপন বদলে যাচ্ছে, এই সময়ে নিজেদের টিকিয়ে রাখতে হলে সংস্কার মুক্ত খোলা মনের উপযুক্ত সময় উপযোগী বাস্তব সম্মত শিক্ষা চাই, এই ভাবনার জনক ছিলেন পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। অতি সংক্ষেপে তাঁর সর্ম্পকে একটুখানি আলোচনা করা যাক। ১৮২০খ্রিষ্টাব্দের ২৬ শে সেপ্টেম্বরে মেদিনীপুর জেলায় বীর সিংহ গ্রামে বিদ্যাসাগরের জন্ম হয়। তাঁরই মাতার নাম ভগবতী দেবী, বিদ্যাসাগরের স্ত্রীর নাম দীনমনি দেবী। বাবার নাম ঠাকুরদাস বন্দ্যোপাধ্যায়। আধুনিক মানসিকতার অগ্রণী ব্যক্তিত্বের অধিকারী ছিলেন।
নারীশিক্ষা প্রচার ও প্রসারে তাঁর সদর্থক ভূমিকার কথা অবশ্যই স্মরণীয় হয়ে রয়েছে। বিদ্যাসাগরের হৃদয় বৃত্তির নানান গল্প আজও গ্রামগঞ্জে ছড়িয়ে রয়েছ। মহামারী কলেরার সময় গ্রামে গঞ্জে তাঁর সেবাদান গল্প গাথা হয়ে রয়েছে। আবার অভদ্র যে কোন আচরণের ও বিরুদ্ধে প্রতিবাদে গর্জে ওঠার কথা কে না জানে, কি ইংরেজ হোক কিংবা হিন্দু মাতব্বর হোক। বিদ্যাসাগর সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ থেকে মাইকেল সকলেই তাঁর বিদ্যাবত্তার কথা স্বীকার করেছেন। মাইকেল তাঁর বক্তব্যে তাঁর অর্থ কষ্টের দিনে বিদ্যাসাগরের সাহায্যের কথা স্বীকার করে দয়ার সাগর বলে আখ্যায়িত করেছেন। তাঁকে কেউ করুণা সাগর, দয়ার সাগর নানা নামে আখ্যায়িত করা হয়। তিনি অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন। সেই নিয়ে অনেক কিংবদন্তী আছে। বর্ণমালা তৈরিতে যেমনি তাঁর অবিস্মরণীয় পদক্ষেপ তেমনি বাংলা গদ্যসাহিত্যের অবদান আমাদেরে আজও বিস্ময়ে অবাক করে রাখে। আজও আমরা বলে থাকি বিদ্যাসাগরের বর্ণমালা। ফোর্ট উইলিয়ম কলেজে বিদ্যাসাগর বাংলাবিভাগের কাজ দক্ষতার সঙ্গে করেছেন, সেই সময় সৃজনী কাজ ছাড়াও অনুবাদের কাজ ও করেছেন। তাঁর জীবনধারা আমাদের আজও ভাবায়। প্রায়ই শোনা যায় বিদ্যাসাগরীয় চটি। একজন পূর্ণাঙ্গ ব্যক্তিত্ব পূর্ণ হিতবাদী মানুষ আজও তিনি সমাজের কাছে স্বীকৃত।
বিশ্বায়নে পরিস্থিতি সময় পালটে গেলেও ভারতের চিরন্তন শাশ্বত ভারতীয় জীবনবোধ পাল্টে যায়নি। ভারতবর্ষের চিরায়ত ধারা ভোগবাদ নয়, ত্যাগ সহমর্মিতায় সবার পরশে তীর্থ হয়ে ওঠার আহ্বানের বোধে গড়ে ওঠা শিক্ষা ও ভারতীয় জীবনবেদ। আসুন আবার বিদ্যাসাগরের দর্শনের অধ্যবসায়ে আমাদের জীবনধারা পাল্টে ফেলি, আর মানুষের পাশে আমরা সবাই দাঁড়াই।
কোন মন্তব্য নেই