পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ, বলে গেলেন রাম মাধব, রিপুণের চেয়ার সরবে না, হিমন্ত লবির অপপ্রচার, সঙ্গে ২-৩ জন কংগ্রেসও পিছনে আছে
অমল গুপ্ত, গুয়াহাটি
নিবার্চন আসন্ন। রাজ্যের সব রাজনৈতিক দল দৌড় ঝাঁপ শুরু করে দিয়েছে। তবে ভবিষ্যৎ মুখ্যমন্ত্রী প্রোজেক্ট করার ক্ষেত্রে কোনো দলই এগিয়ে নেই। দলগুলোর আভ্যন্তরীণ কোন্দল চরমে। প্রধান বিরোধী কংগ্রেস দল দু-তিন গোষ্ঠীতে বিভক্ত। নির্বাচনের আগে রাজ্য সভাপতি বদলের কুচকাওয়াজ চলছে কংগ্রেস দলে। বর্তমান সভাপতি রিপুণ বরা ভালো কাজ করছেন। সারা রাজ্যে ঘুরে ঘুরে প্রচার চলাচ্ছেন, পেপার মিলের দুর্দশা নিয়ে সংসদে জোরালো ভাষন দেন, প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি রাহুল গান্ধী অসমের বর্তমান সরকারের সেকেন্ড কমান্ডার ইন চিফ হিমন্ত বিশ্ব শর্মাকে নানাভাবে অপদস্ত করেছিলেন। আজ অসমে বিজেপি সরকার আসতো না। যদি হিমন্ত বাহিনী কংগ্রেস দল ভেঙে বিজেপিতে না আসতো। সেই নেহরু পরিবারের এক চেটিয়া সিদ্ধান্তে আবার ভুল করা হল। হিমাচল প্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হরিশ রাওয়াত অসমের পর্যবেক্ষক হিসাবে ভালোই কাজ করছিলেন। তাকে সরিয়ে জিতেন্দ্র সিং ভোওরকে দায়িত্ব দেওয়া হল। বিরোধী দলপতি দেবব্রত শইকিয়া, সাংসদ আব্দুল খালেক, রকিবুল হোসেন, প্রদ্যুত বরদলৈ প্রমুখ রিপুণ বরাকে সরাতে চাইছেন বলে দলের মধ্যেই অভিযোগ উঠেছে। অপরদিকে, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ সাংসদ পুত্র গৌরব গগৈকে ভবিষ্যৎ মুখ্যমন্ত্রীর রাস্তা খোলা রাখতে নিজের আস্থা ভাজন কাউকে সভাপতি পদে বসাতে চাইছেন। তাই স্বাভাবিকভাবে কংগ্রেস দলের গোষ্ঠীগত কোন্দল মেটার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এআইইউডিএফের সঙ্গে কংগ্রেস দলের মৌখিক সমঝোতা হওয়ার ফলে বিজেপি স্থিতি অনেক ক্ষেত্রে দুর্বল হয়ে গেছে। বিশেষ করে বরাক উপত্যকার বিজেপি তাদের আর ৮টি আসন ধরে রাখতে পারবে না।
দুর্নীতির সঙ্গে আপস করবেন না বলে হুঙ্কার দেওয়া মুখ্যমন্ত্রী জানেন কি বরাকে কাছার বিজেপি সভাপতি, বিধায়কদের কাজকর্ম সম্পর্কে মানুষ কি বলছেন? কয়লা সিন্ডিকেটের সি বি আই তদন্তের কি হল? উজ্জ্বল ভাবমূর্তির সাংসদ ডাক্তার রাজদীপ রায়, প্রাক্তন বিধায়ক মিশন রঞ্জন দাস, বিধায়ক দিলীপ পালরা তো বিজেপিকে জেতানোর জন্যে যান প্রাণ দিয়ে লড়ছেন। কিন্তু দলের অধিকাংশ নেতা, জন প্রাণিনিধির গ্রহণযোগ্যতা তলানিতে নেমেছে। সরকারের শরিক দল অগপর যে অবস্থা হয়েছে, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্ল কুমার মহন্ততের গ্রহণ যোগ্যতা আজও আছে। আজ রাতে দিল্লির এক কংগ্রেস সূত্র জানান, এআইইউডিএফ কংগ্রেস দলের সমঝোতার ফলে বিজেপি বিপদে পড়েছে। রিপুণ বরা ভালো কাজ করছেন বলে আজ দিল্লিতে সোনিয়া গান্ধীর সমর্থন আছে। তাকে সরানোর প্রশ্নই উঠছে না। তবে প্রদেশ কংগ্রেসের ২,৩ জন নেতা দিল্লিতে সোনিয়া, রাহুলদের কান ভারি করছে। রাজীব ভবনের এক সূত্রে জানা গেছে, হিমন্ত বিশ্ব শর্মা
সংবাদ মাধ্যমের কাছে লাগাতার অপপ্রচার চালাচ্ছেন জাত শত্রু রিপুণ বরার
বিরুদ্ধে। এর মধ্যে কংগ্রেস দলের দু-এক জন নেতাও জড়িয়ে
আছেন। বিজেপি দলেই মুখ্যমন্ত্রীর পদ নিয়ে নানা মুখকে প্রজেক্ট করা হচ্ছে। হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বিভিন্নভাবে নিজেকে মুখ্যমন্ত্রীর
পদের প্রতি আগ্রহের কথা লুকোননি। বিজেপির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাম মাধব হিমন্তের
ইচ্ছার মূলে জল ঢেলে দিয়েছেন। তিনি গুয়াহাটিতে বলে গেলেন, ২০২১ সালে ফের মুখ্যমন্ত্রীর
পদে বসবেন সর্বানন্দ সনোয়াল। প্রধানমন্ত্রীর কাছের মানুষ রাম মাধব বললেন,
অসমের জনগণ আবার বিপুল
ভোটে জিতিয়ে সর্বানন্দের টিমকে দিসপুরে বসাবেন। কয়েকদিন আগে আর এক কেন্দ্রীয় নেতা
বি এল সন্তোষ বিজেপি নেতা-কর্মীদের প্রায় ধমকের সুরে বলে গেছেন, মুখ্যমন্ত্রীর পদ
নিয়ে যেন কোনো বিবাদের সূত্রপাত না হয়। হিমন্ত লবিকে লক্ষ্য করেই তার এই বার্তা মনে
করা হচ্ছে।
কোন মন্তব্য নেই