Header Ads

৬ নম্বর দফার প্রতিবেদনের কপি রাজ্যে পরে আছে, অবাক হওয়ার কিছু নেই, এনআরসি-র ভাগ্যেও হিমঘর আছে, অনন্তকাল ঝুলে থাকবে

 


অমল গুপ্ত, গুয়াহাটি : নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বা কা নিয়ে রাজ্যের আসু থেকে শুরু করে কংগ্রেস, কৃষক মুক্তি প্রভৃতি দল রাজ্যকে উত্তাল করে তোলে বাংলাদেশ থেকে লক্ষ লক্ষ বাঙালি হিন্দু এসে অসমের অস্তিত্ব বিপন্ন করে তুলবে ইত্যাদি অবাস্তব আশঙ্কার প্রেক্ষিতে কা বিরোধী আন্দোলনকে প্রতিহত করার জন্যে সরকার আন্দোলনকারী আসুকে সঙ্গে নিয়ে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি বিপ্লব কুমার শর্মার নেতৃত্বে অসম চুক্তির নম্বর কমিটি রূপায়ণ কমিটি গড়ে দেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মন্ত্রী অমিত শাহ দিল্লিতে জানান, এই কমিটির প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কমিটির সুপারিশ দাড়ি, কমা সহ পুরোটা গ্রহণ করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল নিজে হাতে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেদনটি গ্রহণ করেছিলেন। ১৯৫১ সালকে ভিত্তি বছর করে সুপারিশ করা গোপন প্রতিবেদনটি আসু প্রকাশ করে দেয়। সবাই জানত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। প্রতিবেদনটি পরীক্ষা করছে। অবাক করা কথা আজ সংসদে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিষান রেড্ডি লিখিতভাবে জানিয়েছেন, প্রতিবেদনটি এখনও মাস পর রাজ্য সরকার পরীক্ষা করছেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের হাতে আসেনি। এই জবাবের খবর রাজ্যে এসে পৌঁছলে রাজ্য রাজনীতি উত্তাল হয়ে উঠে। শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীকে জবাব দিতে হয়। তিনি বলেন,  অসম চুক্তি রূপায়ণ করার দায়িত্ব সরকারের সরকার অক্ষরে অক্ষরে পালন করবে কেন এখনো রাজ্যের হাতে আছে সে ব্যাপারে তিনি কিছু বলেননি। আসু নেতা লুরিনজ্যোতি গগৈ প্রশ্ন তোলেন, এই প্রতিবেদন নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক, রাজ্যের কিছু করার নেই তবে কেন আটকে রেখেছে? কংগ্রেস সভাপতি রিপুন বরা বলেন, কেন্দ্রীয় সারাষ্ট্র অমিত শাহ যেখানে বলেছেন, প্রতিবেদন পেলেই দাড়ি-কমা সহ সব সুপারিশ গ্রহণ করা হবে সে ক্ষেত্রে রাজ্য প্রতিবেদনটি আটকে রাখার কি উদ্দেশ্য?  সাংসদ প্রদ্যুত বরদলৈ বলেন, বিজেপি সরকার প্রতিটি ক্ষেত্রে ভুয়া আশ্বাস দিয়ে আসছে। এই সরকার যে কোনও সময় যে কোনো জনবিরোধী কাজ করতে পারে। রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, বিজেপি সরকার ১৯৫১ সালকে ভিত্তি বছর করার সুপারিশ যুক্ত প্রতিবেদন আদৌ গ্রহণ করতে রাজি নন। তা গ্রহণ করা হলে হিন্দু বাঙলি যারা ১৯৫১ সালের পর দেশ বিভাজনের বলি হয়ে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ মুক্তি যুদ্ধের সময় নির্যাতিত হয়ে যারা এসেছে, তাদের ভাগ্যে কি হবে? এই এক বড় প্রশ্ন। অসমে স্বাধীনতার আগে থেকে প্রবজন হয়ে আসছে শুধু হিন্দু নয়, বাঙালি মুসলিমদেরও আগমণ ঘটেছে এ এক ঐতিহাসিক সত্য। বিজেপি সরকার যেমন অসম চুক্তির এই সুপারিশ মানতে পারবে না, ঠিক তেমনি জাতীয় নাগরিকপঞ্জীর অশুদ্ধ তালিকা মানবে না। পাবলিক ওয়ার্ক-এর প্রধান অভিজিৎ শর্মা গুরুতর অভিযোগ করেছেন প্রায় ৮০ লক্ষ অবৈধ নাগরিকের নাম এন আর সি-তে অর্ন্তভুক্ত হয়েছে। আজ বিজেপি সভাপতি রঞ্জিত দাস বাজালিতে স্পষ্ট করে বলেছেন, অশুদ্ধ তালিকা থাকা এনআরসি তারা মানবে না। সুপ্রিম কোর্ট এবং কেন্দ্রীয় সরকার তাদেরকে দায়িত্ব দিলে নতুন করে এন আর সি প্রস্তুত করতে রাজি। তিনি বলেন, ১২০০ কোটি টাকা ক্ষতি বড় কথা নয়। অতি দরকার এক শুদ্ধ তালিকা থাকা এন আর সি-র। তাই অসম চুক্তির ১৯৫১ সালের ভিত্তি বছরের সুপারিশ এবং এক অশুদ্ধ তালিকা বিশিষ্ট এন আর সি বিজেপি কোনো দিন মানবে বলে মনে হয় না। কারণ সামনেই নির্বাচন।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.