বেঙ্গালুরুর কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারদের তৈরি অ্যাপস কাজিরঙার গণ্ডার বাঁচাবে : পিটারসন
অমল গুপ্ত, গুয়াহাটি : ভারতের অধিকাংশ এক খড়্গ বিশিষ্ট গন্ডারের আবাসভূমি
অসমের কাজিরঙা রাষ্ট্রীয় উদ্যানে। প্রতিবছর বন্যার ফলে বিপন্ন প্রজাতির গণ্ডার
মারা যাচ্ছে। ৩৭ নম্বর জাতীয় সড়কে
গাড়ির চাপায় পিষ্ট হয়ে মারা পরে এক বৃহৎ সংখ্যক গণ্ডার। সারা বিশ্বে বিশেষ করে আফ্রিকা মহাদেশে দু-খড়্গ
বিশিষ্ট গণ্ডার দেখা যায়। ব্যতিক্রম কেবল ভারত। সেই কাজিরঙার দিকে বিশ্বের পর্যটকদের নজর। সারা বিশ্ব তাকিয়ে থাকে। এক খড়্গ বিশিষ্ট গণ্ডারের গতিবিধি চাল-চলন
লক্ষ্য করে। আর্ন্তজাতিক স্তরের চোরা শিকারিরা ওত পেতে থাকে। হত্যা করে
আর্ন্তজাতিক বাজারে খড়্গ বিক্রি করার জন্যে, ক্যান্সারের মত দুরারোগ্য ব্যাধি, এইডসের মত মারাত্বক রোগ প্রতিরোধে বা যৌন
ক্ষমতা বাড়াতে এমন কি প্রসাধন সামগ্রী হিসাবে গণ্ডারের খড়্গের গুঁড়ো বা পাউডার বিক্রি
হয় বলে অভিযোগ আছে। এই দুর্লভ প্রাণী গণ্ডার রক্ষা করতে বেঙ্গালুরুর শতাধিক পরিবেশবিদ,
কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়াররা এক মোবাইল অ্যাপস
তৈরি করেছেন। সেই অ্যাপসের কথা জানালেন ‘সেভ দ্য রাইনো
ইন্ডিয়া’ শীর্ষক তথ্যচিত্র নির্মাতা ইংল্যান্ডের প্ৰাক্তন ক্রিকেটার কেভিন পিটারসন। গতকাল বিশ্ব গণ্ডার দিবসে তথ্যচিত্রটি প্রকাশ করে একথা জানান। তিনি প্রতিবছর বন্যার ফলে গণ্ডার মারা যাওয়ার খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। ৩৭ নম্বর জাতীয় সড়কে
গাড়ি চাপায় গণ্ডার হত্যার খবরে তিনি বিচলিত হয়ে পড়েন। কাজিরঙা কর্তৃপক্ষ জানান, তিন লেনের উড়াল পুল
নির্মাণ করা হবে জন্তু জানোয়াদের গতিবিধি হবে তল দিয়ে। এও জানানো হয়, কাজিরঙা প্রতিবছর ডুবে যায়। তার জন্যে
ভবিষ্যতে মানস অভয়ারণ্যে গণ্ডারগুলিকে স্থানান্তরিত করার চিন্তা ভাবনা চলছে।
কাজিরাঙ্গার ওপর এই তথ্যচিত্রে পিটারসন, গুয়াহাটির এক বিদ্যালয়ের শিশু ছাত্রদের সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন। সঙ্গে ছিলেন পরিবেশবিদ কৃতি করণ, কাজিরঙ্গার নানা সমস্যা দেখার পর পিটারসন গণ্ডার
বাঁচাতে মোবাইল অ্যাপসের কথা জানান। এই অ্যাপসের মাধ্যমে কাজিরঙা অভয়ারণ্যে গণ্ডারের
চলা ফেরা গতি বিধির ওপর খবর রাখবে। গ্রামবাসীকে আগাম গণ্ডারের গতি বিধি জানিয়ে সতর্ক
করে দেবে। আগাম বন্যার খবর দেবে। অরুনাচলে ব্রহ্মপুত্র নদ প্লাবিত হওয়ার পরই
কাজিরঙা কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করবে।
গ্রামবাসীরা যাতে গণ্ডারকে নিরাপদ পরিবেশ দিতে পারে তা সুনিশ্চিত করা হবে। পিটারসনকে
জানানো হল প্রতিবছর নতুন ঘাস জন্মানোর জন্যে বন্যার প্রয়োজন আছে। গ্রামবাসীরাও একই
কথা জানালেন, প্রায় এক লক্ষ মানুষ কাজিরঙ্গার আশপাশে বসবাস করে। বন্যার জল সরে গেলে উর্বর মাটি থেকে যায় চাষ
আবাদ করা যায়। নতুন ঘাস জন্মায় গণ্ডারের খাবার কচি কচি ঘাস, জীবন ফিরে পায়, বন্যার সব
যন্ত্রনা ভুলে যায়।
কোন মন্তব্য নেই