Header Ads

বিয়ের পিঁড়িতে বসার আগেই তাদের স্বপ্ন পূরণের সুযোগ দেওয়া উচিত

পিয়ালী ঘোষ দে

বাড়তে চলেছে মেয়েদের বিয়ের বয়স সীমা। প্রসবকালীন, জন্মকালীন মৃত্যু ঠেকাতে নতুন উদ্যোগ নিতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। পাখী যেমন এক ডানায় ভর করে উড়তে পারে না তেমনি নারী জাতির অবস্থার উন্নতি না হলে জগতের উন্নতি সম্ভব নয়। কোনো জাতির উন্নতির মাপকাঠি হল সেই জাতিতে নারীর মর্যাদার স্থান। নারীকে অর্ধাকাশ হিসেবে গণ্য করা হয়। উনবিংশ শতাব্দীতে স্বামী বিবেকানন্দ বলে গেছেন, ভারত নারীদের উন্নতি করেছে। আজ স্বাধীন ভারতের জয়যাত্রা শুরু হয়েছে একজন মহিলার হাত ধরেই। তিনি ইন্দিরা গান্ধী। একবিংশ শতকের উন্নয়নের মশাল বয়ে নিয়ে যান। লক্ষ লক্ষ নারী স্বাস্থ্য, শিক্ষা থেকে শুরু করে সামরিক বাহিনী সর্বত্রই নারী ক্ষমতায়নের জয়গান। স্বামী বিবেকানন্দের চোখে যা ছিল উন্নতি। সেই লক্ষেই যাত্রা শুরু করে দিয়েছে বর্তমান ভারত। নারী ক্ষমতায়নের এই যুগে একটি প্রশ্ন বড় হয়ে সামনে আসছে। বিয়েই কি একটি মেয়ের ভবিতব্য, তার জীবনে কী আর কোনো লক্ষ্য থাকতে পারে না? লালকেল্লার স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে বিষয়টি নিয়ে উল্লেখ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, ১৯২৯ সালে শারদা আইনে মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৫ বছর করা হয়। ১৯৭৮ সালে আইন সংশোধন করে মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৮ করা হয়। এই ১৮ বছর বয়সের সীমাটিও সর্বত্র কঠোরভাবে মানা হয় না। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে দেখা যায়, মেয়েদের ১৬ বছর বয়স হলেই তাকে বিয়ে দিয়ে পাড় করার প্রবণতা রয়েছে। একটি মেয়ে শারীরিকভাবে ও মানসিকভাবে সম্পূর্ণ তৈরি হওয়ার আগেই তার কাঁধে সংসার ও কোলে সন্তানের দায়িত্ব চাপিয়ে দেওয়া হয়। অপুষ্ট গর্ভাবস্থা পরিণতি প্রসবকালীন মৃত্যু, দুর্বল শিশু, সদ্যজাতের মৃত্যু। তাই সমস্যার গোঁড়ার আঘাত হানতে চায় কেন্দ্রীয় সরকার। সমাজকর্মী জয়া জেটলির নেতৃত্বে টাস্ক ফোর্স গড়ে দিয়েছে কেন্দ্র। মেয়েদের বিয়ের বয়স সংক্রান্ত প্রস্তাবগুলি খতিয়ে দেখবে। এই টাস্ক ফোর্সের অভিমত, ১৮ বছর বয়স বিশ্বজুড়ে সাবালকত্তের প্রতীক। 
১৪৩টি দেশে মেয়েদের বিয়ের বয়স সেটাই। কিন্তু, সব জাতির মেয়েদের দৈহিক গঠন ও সামাজিক পরিস্থিত এক হয়না। নিয়ম ও দেশ ভেদে আলাদা। সৌদি আরব এবং ইয়েমেনে মেয়েদের বিয়ের কোনও বয়স নেই। ইরানে ১৩, লেবাননে ১৪ বছরের নিচে মেয়েদের বিয়ে দেওয়া যায় না। চাদ ও কুয়েতে মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৫ বছর রাখা হয়েছে। আফগানিস্তান, পাকিস্তান সহ ৭ দেশে মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৬। ভারত সহ ১৪৩টি দেশে মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৮ বছর রাখা হয়েছে। চীন সহ ৬ দেশে মেয়েদের বিয়ের সবচেয়ে কম বয়স ২০ বছর। কেন্দ্রীয় সরকার চায় সবদিক বিবেচনা করে ভারতেও মেয়েদের বিয়ের বয়সে বদল আসুক। যাতে উচ্চশিক্ষায় আগ্রহী কোনো মেয়ের স্বপ্ন বেঁচে থাকে। সাবালিকা হলেই তার হাতে শিকল পড়িয়ে না দেওয়াই ভালো। বিয়ের পিঁড়িতে বসার আগেই তাদের স্বপ্ন পূরণের সুযোগ দেওয়া উচিত।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.