Header Ads

অমানবিক হত্যাকান্ডে গ্রেফতার ৩ জন, চোখের জলে কঠোর নিরাপত্তা বলয়ে শেষ কৃত্য সম্পন্ন সুমনের


সানি রায়, আলগাপুর : গত সোমবার হাইলাকান্দি জিলার জানকীবাজার এলাকায় মধ্যরাতে অতর্কিত মারধরের ঘটনায় সুমন দাস নামের এক যুবককে হাত পা বেঁধে রাখা অবস্থায় উদ্ধার করে পাঁচগ্ৰাম পুলিশ। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে উন্নত ও আধুনিকতার ছোঁয়া পেয়ে মানুষ ডিজিটাল দুনিয়ায় পৌঁছলেও মানুষের মানবিকতার যে চরম অবক্ষয় ঘটেছে,, তারই ফলশ্রুতিতে ফের এক লোমহর্ষক ঘটনার সাক্ষী হলেন হাইলাকান্দির জানকীবাজার এলাকার জনগণ এবং রীতিমতো ঘটনাটি এখন  সংবাদ মাধ্যমের শিরোনামে। জানা যায়, গণধোলাই খেয়ে শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শেষমেশ শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করে বয়স ২৭ এর তরতাজা যুবক সুমন দাস। মঙ্গলবার সকালে কালিনগর সরোজিনী প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় সুমনকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। টানা ২৪ ঘন্টা মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়েও শেষরক্ষা হয়নি। বুধবার দুপুর একটায় খবর আসে সুমন দাস মৃত। গতকাল 
বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্তের পর বিকেল তিনটায় সুমনের নিথর দেহ জানকীবাজারে পৌঁছতেই এক শোকস্তব্ধ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সেইসঙ্গে মরদেহ পৌঁছতেই পুলিশ প্রশাসনের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে ও শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে জাতীয় সড়ক অবরোধ করার সিদ্ধান্ত থেকে বিরত থেকে সুমনের মরদেহ নিয়ে শান্তি মিছিলে যোগ দেন এলাকার জনসাধারণ। ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় টান টান উত্তেজনা বিরাজ করলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয় পুলিশ প্রশাসন।  এদিকে গোটা ঘটনার তদন্ত অব্যাহত রেখে গতকাল বিকেলেই সফলতা লাভ করে পাঁচগ্ৰাম পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে লক্ষনীয় ভূমিকায় ছিল হাইলাকান্দি পুলিশ প্রশাসনও। তাছাড়া, গতকালই  অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুলেন্দ্র নাথ ডেকার নেতৃত্বে উক্ত ঘটনায় জড়িত ৩ জন অপরাধীকে গ্ৰেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এদিকে সুমনের পরিবারের অভিযোগ মতে,, সোমবার রাতে জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সুমনকে টেলিফোনে নেমতন্ন করে নিশিকান্ত দাসের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করার অভিযোগ এনে সোচ্চার হন এলাকার জনসাধারণ সহ অভিভাবকরা।  তবে, সবমিলিয়ে উক্ত ঘটনায় কারো অভিযোগ দায়ের করা না হলেও পাঁচগ্ৰাম পুলিশ স্বেচ্ছায় পিএস কেইস নং-৬৭/২০২০ নং এ মামলা নথিভুক্ত করেছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ৩ জন আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানোর ফলস্বরূপ গতকালের সব আন্দোলনকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম পাঁচগ্ৰাম থানা সহ পুলিশ প্রশাসন। এদিকে উক্ত ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানিয়ে গতকাল উপস্থিত ছিলেন বিজেপি যুব মোর্চার সভাপতি সুরজ সেন, জিলা সভাপতি স্বপন ভট্টাচার্য, উত্তর কাঞ্চনপুর জিপি সভাপতি খসরু আহমেদ সহ অন্যান্যরা এবং পাশাপাশি তারা অভিযুক্তদের অনতিবিলম্বে গ্ৰেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান এবং এই মর্মান্তিক ঘটনায় নিহত সুমন দাসের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।  সবমিলিয়ে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রেখে ও পুলিশ প্রশাসনের কড়া নিরাপত্তার বেষ্টনীতে তথা আলগাপুরের সার্কল অফিসার পি গুপ্তা সহ স্থানীয় প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দদের উপস্থিতিতে সুমন দাসের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।  তবে, এটা পরিকল্পিত হত্যা? না খুন? না কি নারী সংক্রান্ত ঘটনা? না কি চুরি সংক্রান্ত? এনিয়ে চলছে জোর চর্চা। তবে ঘটনার আসল রহস্য উদঘাটনে যথাসক্রিয় ভূমিকায় রয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা সহ পুলিশ প্রশাসন ।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.