Header Ads

বাঙালিদের উপর অত‍্যাচারের ধারাবাহিকতা

সহদেব দাস, আইনজীবী

সারা আসাম বাঙালি যুব ছাত্র ফেডারেশনের উৎপত্তি, উদ্দেশ্য,জম্ম থেকে কার্যাবলী, যাদের অপরিসীম অবদান ছিল এবং এই সংগঠন করতে গিয়ে যারা প্রাণ আহুতি দিয়েছেন সেই সব নিয়ে ধারাবাহিক লেখা শুরু হচ্ছে। কারণ অনেকেই দাবি করেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা বলে তাই এই ধারাবাহিক টি বাঙালিরা জানা একান্ত প্রয়োজন আছে।
সারা আসাম বাঙালি যুব ছাত্র ফেডারেশন ১৯৯০ সালের ২০ এ এপ্রিল জম্ম গ্রহণ করেছিলেন বর্তমান উদালগুরি অতিত দরং জেলার কলাইগাও গেরুয়া গ্ৰামে।
_______________________________________
১৯৯০ সাল।
________________
১৯৯০ সালে আসামের অসমের পরিস্থিতি ছিল অগ্নিগর্ভা। তখন উগ্র জাতীয়তাবাদের উত্থান ঘটেছিল । আলফা নামে উগ্রপন্থীর জোরপূর্বক চাঁদা আদায় এবং অপহরণ, লুণ্ঠন প্রচুর পরিমাণে বৃদ্ধি হয়েছিল এবংবাঙালিরা সংকায় দিন কাটাচ্ছিল। সেই অবস্থায় বাঙালিরা সংগঠন করার কথা ভাবাটাই দুস্কর ছিলো। 
১৯৮৬ সালে ১৭ই মার্চ বাঙালির সংগঠন। "নাগরিক অধিকার সুরক্ষা সমিতির" সভাপতি গৌহাটি উচ্চ ন্যায়ালয় বরিষ্ঠ অধিবক্তা কালিপদ সেনের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর বাঙালিরা সংগঠন করা দুরের কথা বহু বাঙালি নিরাপদ স্থানে আশ্রয় গ্ৰহন করা পরিলক্ষিত হয়। এদিকে লক্ষ লক্ষ বিদেশীর জনগন কে আবেগের জোয়ারে ভাসানো আন্দোলন কারি সরকার তাদের ছাত্র সংগঠনকে দিয়ে বাঙালিকে ব্রহ্মপুত্র ভেলির বিভিন্ন স্থানে লক্ষ লক্ষ বাঙালির উপর বিদেশীর অভিযোগ দায়ের করেন এবং তদানীন্তন সরকার বাঙালিদেরকে লাইনে দাড় করিয়ে নথিপত্র পরিক্ষা করেন । তারমধ্যে অধিকাংশ নথিই বাতিল হতো নয়তো গুম করে দেওয়া হতো।কলাইগাও অঞ্চলের বাঙালি শ্বাধিনতার পুর্বথেকে এখানে বসবাস তবু তারা বার বার নাগরিকত্ব প্রামান দিতে হয়েছিলো। তাই উগ্ৰজাতীয়তা বাদ, উগ্ৰবাদীর ধারাবাহিক নির্যাতন,জাতিয়তাবাদী সরকারের বিদেশী ‌‌অভিযোগ নির্যাতনের বিরুদ্ধে একটি সংগঠন গড়ে তুলতে সংকল্পবদ্ধ হয়ে উঠে।
সংগঠন গড়ে তোলার অভিপ্রায়ে বিভিন্ন স্থানে যোগাযোগ করা হয়। ইতিমধ্যে জানা যায় যে মংগলদৈ ,টংলা,ঢেকীয়াজুলি অঞ্চলে ব্যপক হারে চাঁদা সংগ্রহ করছে উগ্রপন্থীরা। প্রসাশন নীরব দর্শক।, পুলিশকে অভিযোগ করলে পরামর্শ দেন কম্পম্রাইজ করার জন্য তাই যুব সমাজ, বুদ্ধিজীবী সারা আসাম ব্যপি একটি সংগঠন গঠনের প্রস্তাব দেন সাথে পুর্ণ সহযোগের মত ব্যক্ত করেন। 
সেই সহমত নিয়ে ১৯৯০ সাল ১৮ ফেব্রোয়ারী আমি,বীরেন সরকার, বৃন্দাবন দাস, মনিন্দ্র দাস ,টংলার সজল রায়,কুলেন দাস গেরুয়া গ্ৰামে বীরেন সরকার মহাশয়ের বাড়ি আলোচনা করি সংগঠনের নামাকরন,স্ংবিধান, উদ্দেশ্য লক্ষ্য নিয়ে এবং দায়িত্ব প্রদান করা হয় প্রতিজন ব্যক্তিকে নিজস্ব জ্ঞাত স্থানে যোগাযোগ করার জন্য । সজল রায়ের দায়িত্বে টংলা,গোরেশ্বর,ঢেকীয়াজুলি,তেজপুর, মনিন্দ্র দাস রাঙাপারা, বরপেটা,বঙ্গাইগাও, আমি মঙ্গলদে,হোজাই, গুয়াহাট,ধুবুরী সহ কিছু অঞ্চলে। সেখানে সিদ্ধান্ত হয় ২০ এপ্রিল অধিবেশন এবং ১৫ ই মার্চ একটি সাধারন সভা হবে সেই সভায় বিভিন্ন অঞ্চলের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে সংগঠনের নামাকরন, সংবিধান সহ যাবতীয় পেপার আদি ছাপানো হবে এবং একটি কমিটি গঠন করা হবে। সংবিধান তৈরি দায়িত্ব খগেন সরকার( শিক্ষক) নবকুমার দাস( ডি আই,ধুবরী)সহদেব দাস,
১৫ মার্চ সভায় সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতারা ছিলেন তারা ছিলেন ক্রমশ ( উপস্থিত সদস্যদের সাক্ষর সহ?কলাইগাও থেকে
বীরেন সরকার,সহদেব দাস ,মনিন্দ্র দাস,কুলেন ভা , নৃপেন সরকার,ধীরেন সরকার (প্রফেসর) বৃন্দাবন দাস,অজয় সাহা,মধু সাহা,গোপাল মণ্ডল,গিরিন বিশ্বাস, জয়চন্দ সিংহ, ধনঞ্জয় বিশ্বাস, সুভাষ ধর,অরুন বিশ্বাস,(রাঙ্গাপারা) বিমান চৌধুরী,বিজন নন্দী,সুনিল ঘোষ,বাদল বর্মন ,নারায়ন শীল , লালটু চ্যাটার্জী,(মঙ্গলদৈ) স্থপন সাহা, কৃষ্ণকান্ত সরকার, গোপাল মণ্ডল, বাসুদেব মণ্ডল,রতন দাস,সঞ্জীব দে,প্রভাত ভৌমিক, কামাখ্যা গোপ, অশোক সরকার,রুদ্রকান্ত রায়। সুব্রত রায়,সেবক মজুমদার, অখিল চৌধুরী।,(বরপটা)পলাস চৌধুরী(,নলবাড়ী) জগন্নাথ দে,মুকুল দাস(গোরেশ্বর) পংকজ বিশ্বাস, রনজিৎ কুমার মিত্র,সজল কুমার মজুমদার,(দুধনৈ) স্বপন কুমার দে,( টংলা) সজল রায়,প্রনব নন্দী, তপন দত্ত,দীলিপ কুমার দে,তারক চৌধুরী, (গুয়াহাটি) নকুল চৌধুরী, বিপ্লব বিশ্বাস, দুলাল সরকার,(তেজপুর)জীতু রায়।
সভার সভাপতি ছিলেন প্রফেসর ‌ধীরেন সরকার
১৯৯০ সালের ২০ই এপ্রিল। বাঙালির নতুন ইতিহাস গড়তে যাচ্ছিলো কলাইগাও বাসি। অধিবেশন শুরু হয়েছিলো গেরুয়া বীনাপানী এলপি স্কূলে।পরিবেশ উতপ্ত,। বাহিরে আর্মি অপারেশন, পুলিশ সতর্ক,উগ্ৰজাতীয়তাবাদির রাঙা চক্ষু বাঙালির সংগঠন হতে দিবে না।অনাড়ম্বর ভাবে সভা শুরু হয় রাত ৮ঘটিকা থেকে।
সভার উদ্ধোধনি সঙ্গীতের দ্বারা। সঙ্গীত পরিবেশন করেন আমার ভাগ্নি চন্দনা দাস ও সহযোগী। সঙ্গীত ছিলো "
সাম্য,মৈত্রী,ঐক্য প্রগতি,
শান্তির পথ ধরে
আমরা চলেছি চলবো
যুগ যুগান্ত ধরে।
আমাদের মাঝে নেই
ভেদাভেদ কিছু,
নেই ছোট, বড় নেই 
কোন উচূ নিচু
শান্তি মোরা আনবো‌ ফিরে
বিশ্বের ঘরে ঘরে।
সাম্য, মৈত্রী ,ঐক্য প্রগতি-----
(গানটি পরবর্তী তে মঙ্গলদৈ সাধারন সভায় রেখা রায় পরিবেশন করে স্ংগঠনে মুল সঙ্গীত হিসেবে গ্ৰহন করা হয়)
অধিবেশনে কমিটি গঠনের প্রস্তাব ‌আসে । সভার সভাপতি গুয়াহাটির দুলাল সরকার ( তিনি তখন বিজেপি দলের রাজ্য সম্পাদক)। বহু সময় অতিবাহিত হলেও সভাপতি কেউ হবার জন্য রাজি নয়। অগ্নিগর্ভা অসমে নেতৃত্বে কেউ আসতে রাজি নয়। অবশেষ ুউদ্ধোক্তা হিসেবে আমার উপর দায়িত্ব আসে। কিন্তু আমার পক্ষে অসম্ভব ছিল এইজন্যই যে আমি তখন একটি কলেজে মাত্র ঢুকছি যেখানে বাঙালি শুন্য এবং আলফা অধ্যেসিত অঞ্চল। 
(৪)
অবশেষে বীরেন সরকার আমাকে নির্ভয় দিলেন চাকরি সহ সংগঠনের সকল দায়িত্ব তিনি গ্ৰহন করবেন সভাপতি হতেই হবে। কমিটি গঠিত হলো সভাপতি আমি উপ সভাপতি পংকজ বিশ্বাস, স্বপন কুমার সাহা, বিমান চৌধুরী, সাধারন সম্পাদক সজল রায়,সহ সম্পাদক সুব্রত রায়,প্রনয় দাস প্রচার সম্পাদক বিমল দাস, কোষাধ্যক্ষ নৃপেন সরকার , বৃন্দাবন দাস, প্রধান উপদেষ্টা মনিন্দ্র দাস, বীরেন সরকার কে নিয়ে ৩২ জনের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠিত হয়।
ফেডারেশনের অস্থায়ী কার্যালয় বীরেন সরকার মহাশয়ের বাড়ি । কমিটি গঠন হবার পরেই বীরেন মহাশয়ের গাড়ি , সদস্য দের থাকা, খাবার ব্যবস্থা আদি নিজে গ্ৰহন করেন । (কারণ সেখানে হোটেল নেই)। সেখান থেকেই সংগঠনের কাজ চলে। নব গঠিত কমিটি সারা আসামে জেলা গুলি গঠন করেন এবং বিভিন্ন ‌‌ জেলার সদস্য দলে দলে কলাইগাও আগমন ঘটে। সদস্য দের থাকা খাবার ব্যবস্থা করেন বীরেন সরকারের সহধর্মিণী কিরন সরকার। ১৯৯০ থেকে ১৯৯৪ পর্যন্ত কার্যালয় থাকে কলাইগাওতে।
মঙ্গলদৈ সুব্রত রায় অখিল চৌধুরী,সেবক মজুমদারের নেতৃত্বে বিভিন্ন অঞ্চলের কমিটি গঠন। সজল রায় মনিদাসের নেতৃতে তেজপুর ধুবড়ি ,বঙ্গাইগাও, কমিটি গঠন করা হয়। পংকজ বিশ্বাসের নেতৃত্বে নলবাড়ী ধমধমা ,কামরুপ কমিটি হয়। 
পংকজ বিশ্বাসের নেতৃত্বে ধমধমা কমিটি গঠন হয় সাধন বৈশ্য এবং সুজিত বৈশ্য র নেতৃত্বে । সেই কমিটি নলবাড়ী জেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে একটি শক্তিশালী জেলা কমিটি প্রচেষ্টা চালায় । 
(৫)
সেই বৎসর ডিসেম্বর মাসে নলবাড়ী থেকে রবীন বিশ্বাস,অমর সরকার,ভুপেন বিশ্বাস ,অনকুল মিত্র সহ দশ জনের টিম কলাইগাও আসেন এবং জেলা অধিবেশন করে কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়।
এদিকে স্থানীয় অভিভাবক নন্দ কুমার সরকার, রায় মোহন অধিকারী,মাধব মণ্ডল,বিজন সাহা,পরেশ দাস, কল্যাণ দেবনাথ,বিমল দাস,উজ্জ্বল সিংহ,অনিল সরকার,নারায়ন দাস, গুয়াহাটি এডভোকেট অসিত সরকার , দুলাল সরকার আদিকে নিয়ে আলোচনা করি ভবিষ্যতে কার্যক্রম নিয়ে।
আর্থিক সহায়তা সবাই বর্ষা দেন। সাথে পরামর্শ দেন সকল রাজনৈতিক দলকে আমাদের দাবি সমুহ অবগত করার।
সেই পরামর্শ নিয়ে প্রথম যাই চিপিএম দলের কাছে। সেখানে কোন সমর্থন পাইনি। বরং উগ্ৰবাদীর ফোন আসে। অসমে বাঙালি সংগঠন করলে বিপদ হবে। বিজেপি র অসমে অস্তিত্ব নেই। তবু ‌ সাক্ষাৎ করি সাথে রাজ্যিক সম্পাদক দুলাল সরকার। কিন্তু সভাপতি জনৈকা প্রাক্তন আইজিপি। তিনি বলেন আমরা জাতির নাম দলকে সমর্থন করিনা। কংগ্রেস দলের নেতা হিতশ্বর শয়কীয়া মহাশয় নতুন হয়েছে । ইতিমধ্যে আলফা শয়কীয়ার ভাই, ভাতিজাকে হত্যা করেছে। তাকে সাক্ষাৎ করতে ভয়। তবু আমি মনি দাস,প্রনয় দাস, বৃন্দাবন, নৃপেন, শৈলেন দাস গুয়াহাটি গিয়ে দেখা করার চেষ্টা করি । তিনি ছিলেন না, পিএ ফোনে আমাদের কথা বলে । তিনি বলেন তাদের কে থাকতে দাও আমি কথা বলবো। তিনি রাত তিনটায় আসে।এসেই আমাদের সাথে কথা বলে। কি সংগঠন,উদ্বেশ্য লক্ষ জানতে চায়। সব জানার পর তিনি আস্থাস দেন মূখ্য মন্ত্রী হলে সম্পুর্ন ‌ সহযোগিতা করবে।
(৬)
(পরবর্তী অংশ)
শয়কীয়া এটাও বলেছেন যে অর্থের প্রয়োজন হলে বলবে। আমাদের প্রতিনিধি উত্তর দিয়েছেন আমাদের টাকা চাই না। আপনি মুখ্যমন্ত্রী হবার পর বাঙালির সমস্যা গুলো রাজনৈতিক ভাবে সমাধান করার অনুরোধ রইল। আমরা এখানেই রাজনৈতিক নেতাদের সাক্ষাৎ সমাপ্ত করে সাংগঠনিক কাজে নিয়োজিত হয়ে পরি।
১৯৯১ সাল। অসমে শয়কীয়া সরকার গঠন হয়।১১ই আগষ্ট মুখ্যমন্ত্রীকে সাক্ষাৎ করে সম্বর্ধনার সাথে বাঙালির সমস্যা নিয়ে একটি স্বারকলিপি প্রদান করি।স্মারক পত্রে দাবি ছিল উগ্ৰপন্থীর নির্যাতন বন্ধ করা। বাঙালির উপর বিদেশীর অভিযোগে বাঙালিকে নোমেনচ লেণ্ডে ছেড়ে দেওয়া বন্ধ করা। ভোটাধিকার হরণ বন্ধ করা। দরদর্শনে বাংলা প্রচার, বাংলা মাধ্যম স্কূল অক্ষুন্ন রাখার দাবি ১২টি বিষয়। মুখ্যমন্ত্রী পর্যায়ক্রমে মেনে নেবার আশ্বাস প্রদান করেন।
এদিকে হিতেশ্বর শয়কীয়া সরকার গঠন হবার পর থেকেই বিভিন্ন স্থানে বাঙালির উপর বর্ডার পুলিশ IMDT র নামে নির্যাতন তীব্রতর বৃদ্ধি করেন এবং বাঙালিকে ধরে নিয়ে বাংলাদেশের সীমান্তে ছেড়ে দেওয়া হয়। আমরা কথা বলার পর এই ঘটনায় আচার্য প্রকাশ করে বিধান সভার অধ্য্যক্ষ দেবেশ চক্রবর্তী এবং মন্ত্রী অর্দেন্দূ দে মহাশয়কে করি। সাথে একত্রে মুখ্যমন্ত্রীকে সাক্ষাৎ করার কথা বলি।
১৯৯২ সাল। জনসাধারণ থেকে অবগত ছিলাম যে বিদেশী ‌‌অভিযোগে বাঙালি নির্যাতন চলছে। ১১ই জানুয়ারি ভোর সকাল আমার বাড়ির সামনে কান্না।
জানলাম আমার ঘরের পাশের বীনদিনী দাস ছয় মাসের শিশুকে রেখে বর্ডার পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে বিদেশী অভিযোগে। এঁকে এঁকে জানতে পারলাম কলাইগাও টাউনের দুই যুবতী,বালিপারার পুরুষ, মহিলা সহ মুঠ ১২ জনকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে।
(৭)
শুধু কলাইগাও নয় সারা অসম থেকে প্রায় ৩৭ জন পুরুষ মহিলা বর্ডার পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। সাথে সাথে আমরা দিশপুর যাই এবং দুই জন মন্ত্রী কে অবগত করি। মন্ত্রী গন তাদের ছাড়ার নির্দেশ করে বর্ডার পুলিশ কে সাথে ‌মূখ্যমন্তীর সাক্ষাৎ চান কিন্তু মূখ্য মন্ত্রী দিল্লি থাকায় সাক্ষাৎ হয়নি । মূখ্য মন্ত্রী দিল্লি থেকে আসার পর ২/৯/৯১ তারিখ জনতা ভবনে আমাদের প্রতিনিধি র সাথে আলোচনার আমন্ত্রণ জানান। সাখ্যাতে আমরা বাঙালির হেনস্তা এবং নির্বাচনের পুর্বে প্রতিশ্রুতির কথা মনে করিয়ে দেওয়ার পর তিনি কোন উত্তর না দিয়ে বর্ডার ডি‌ আই জি ফোন করেন এবং বলেন এই সব কি হচ্ছে জানতে চায় এবং জনতা ভবনে ডাকেন। ডিআইজি আসার সাথে সাথে আমাদের মেমরেন্ডাম ওনার হাতে তুলে দেয় এবং এইসব কার নির্দ‌েশ, কে করেছেন ধমক দেন এবং অতি সত্বর সমস্যা মেটানোর নির্দেশ দেন। ডিআইজি কোন উত্তর না দিয়ে চলে যায় এবং পর দিন IMDT state Chairman Mr M.Ali কে নিয়ে কলাইগাও কার্যালয়ে ডিআইজি হাজির হয়।
ডিআইজি এবং আই এম ডিটি চেয়ারম্যান বললেন আমরা কি চাই, সমাধান কি,তা লিখিত দিতে বলেন। আমরা লিখিত দিলাম। ১/ বর্ডার পুলিশের অত্যাচার বন্ধ করা হোক।২/ আই এম ডিটি মামলা বন্ধ করা হোক। প্রায় ৩৭ হাজার বাঙালির উপর বিদেশী ‌‌অভিযোগে অগপ সরকার বিদেশী ঘোষণা হয়েছিল সেই সব উচ্ছন্যায়লয়ে সরকার লিগেল চেলের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হোক। ৩/বর্তমান যেসব নোটিশ চলছে বন্ধ হোক।
আমাদের লিখিত পত্র নিয়ে তারা মুখ্যমন্ত্রীকে দেন এবং মুখ্যমন্ত্রী এই মতেই কাজ করতে নির্দেশ দেন। এর পর থেক ই মুখ্যমন্ত্রী হিতেশ্বর শয়কীয়া সরকারের কা্র্যকালে বিদেশী সমস্যা জনিত কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। শুধু তাই নয় বিভিন্ন স্থানে গিয়ে ডিআইজি, আইএমডিটি চেয়ারম্যান এবং ফেডারেশনের কর্মকর্তা বিভিন্ন জনের উপর অভিযোগ আইনি ভাবে সমাধান করা হয়
( ৮)
৯২ সালের ১৫/২/৯২ তারিখ গুয়াহাটিতে কাচার করিগঞ্জ চাত্র সন্থার সভাপতি প্রদীপ দত্তরায় এবং রুপম নন্দী পুরকায়স্থ ও অন্যান্য। ম্যান চাত্র সন্থার সভাপতি সঞ্জীব সন্দীকৈ, ধ্রূবজোতি গগৈ এবং পশ্চিম বঙ্গের ছাত্র পরিষদের সভাপতি অশোক মুখার্জি, অঞ্জন সাহা সহ পাঁচ সদস্য দের সাথে বাঙালির সমস্যা, নিয়ে আলোচনা করা হয়।
২৮/২/৯২ শোনিতপুর জেলার তেজপুরে ২য় দ্বি বার্ষিকী অধিবেশন করা হয় বাঙালি থিয়েটার হলে। সেই অধিবেশনে ও আমি সভাপতি সজল রায় সাধারন সম্পাদক হয়।
৬ই ডিসেম্বর ৯২ বাবরি মসজিদ ঘটনা।ডবকায় সাম্প্রদায়িক সংঘাত কয়েকশ বাঙালির ঘরে জ্বালিয়ে দেয় দুস্কৃতিকারিরা। বহু নারী অপহৃত,লুন্ঠল , নির্যাতন চলে। ফেডারেশন থেকে সেখানে আমরা রিলিফ নিয়ে যাই। এই ঘটনায় বিভিন্ন সংগঠন তীব্য নিন্দা করলো ।কিন্তু আসু নিন্দার বিপরীতে বললো বাংলাদেশী বাংলাদেশী ঝ্গরা আমাদের বলার নেই। আমরা দুই খানা বাসে রিলিফ এবং পুলিশ নিয়ে কারণ কারফিউ ছিলো । ডবকায় জনসাধারণকে নিরাপত্তার কথা বলি সাথে রিলিফ প্রদান করি। সেখান থেকে যোগিজান যাই সহযোগ করেন হোজাই সভাপতি অজিত সরকার এবং সম্পাদক মতি দেবনাথ। গুয়াহাটি ফিরে মুখ্যমন্ত্রী সংখ্যায় করি নিরাপত্তার দাবি জানাই।
৫/৪/৯২ উদালগুরি উপদেষ্ট রনেন সুত্রধর ফেডারেশনের একটি সাধারন সভা অনুষ্ঠিত করায় স্থানীয় আসুর কর্মীরা সুত্রধরকে মারপিট করে মাথা ফাটিয়ে দেয়। অপরাধ বাঙালি সংগঠন করার। এই নিয়ে মামলা হয় আসুর সাথে। প্রায় ২০ জন বাঙালি যুবক পালিয়ে চলে আসে কলাইগাওতে তারা বীরেন মহাশয়ের ঘরে থাকে ৭দিন । পরিস্থিতি ঠিক হলে ঘরে যায়। 
২৫/৫/৯২ তারিখ নলবাড়ী জেলা অধিবেশন রবীন বিশ্বাসের নেতৃত্বে কাউলি হাইস্কুল প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হয় সে সভায় প্রায় পঁচিশ হাজার বাঙালি সমবেত হয়।
১৯৯২ সালে শকৃয় ভাবে যোগ দিয়েছেন শিক্ষক বাদল দে এবং মঙ্গলদৈর রতিশ চৌধুরী অভয়াপুরির রামদাস সরকার,ননী গোপাল রায়।কলাইগাও আঞ্চলিক গঠন হয় রতন ধরের নেতৃত্বে, টংলা আঞ্চলিক গঠন হয় অমল সরকারের নেতৃত্বে।
( ৯)
( ১৯৯৩ শুরু হবে)
____________________
১৯৯৩ সালের সাংগঠনিক কাজের সাথে সাথে অন্যান্য উল্লেখযোগ্য ঘটনা হচ্ছে 13 /11 /1993 দরং জেলার খয়রাবারি অঞ্চলের কসারি পাম গ্রামে ছয় জন বাঙ্গালীকে উগ্রপন্থী নৃশংসভাবে হত্যা করে। দরং জেলার সভাপতি জগদীশ সরকার এবং প্রেমানন্দ দাস একথা অবগত করেন সাথে সাথে উনারা বিধানসভার অধ্যক্ষ দেবেশ চক্রবর্তী মহাশয় কে ফোন করেন। দেবের চক্রবর্তী মহাশয় সাথে সাথে ডিআইজি সহ কাছাড় করিমগঞ্জ ছাত্রদলের সভাপতি প্রদীপ দত্ত রায় কে নিয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন এবং জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন।
অন্য একটি পদক্ষেপ ছিল তদানীন্তন নির্বাচন কমিশন কমিশনার টি এন সেশন এক নোটিফিকেশনে উল্লেখ করেন যে যেসব ব্যক্তির ভেলিড পাসপোর্ট নেই, ১৯৬৬ সালের ভোটার তালিকা নাম নেই ,যাদের ম্যাদি পাট্রা জমি নেই এবং ১৯৫১ সালের এনআরসি নেই তাদের নাম ভোটার তালিকা অন্তর্ভুক্ত হবে না। এই নির্দেশে সারা আসামে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। আমরাও প্রতিবাদ শুরু করি ।সাথে সাথে অসমের মুখ্য মন্ত্রী মহোদয় আমাদেরকে দিশপুরে ডাকেন এবং একটি মামলা করার পরামর্শ দেন । তিনি যে এই নির্দেশ কার্যকরী হলে অসমে বহু বাঙালি নাম ভোটাধিকার থেকে বাদ হবে এবং সাথে অন্যান্য জনগোষ্ঠীর ক্ষতি হবে তাই মামলা করা একান্ত প্রয়োজন।সেই হিসেবে আমরা গৌহাটি উচ্চ ন্যায়ালয় ফেডারেশন এর তরফ থেকে একটি রিট পিটিশন নির্বাচন কমিশনারের বিরুদ্ধে দায়ের করি রিট পিটিশনের নাম্বার ৮২১৪/১৯৯৩। ফেডারেশন সাধারণ সম্পাদক সজল রায় মহাশয় এই মামলা দায়ের করেন। মামলায় বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন সুপ্রিম কোর্টে এক আবেদন দায়ের করে বলেন যে আমি গোহাটি হাইকোর্টে যাবনা এই মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে আনা হোক । মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট আবেদনটি গ্রাহ্য করেন এবং মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে চলে। কিন্তু আমাদের অসুবিধা ছিল আর্থিক ।
সুপ্রিম কোর্টে মামলা চালানোর মত অবস্থা ছিল না। তাই মুখ্যমন্ত্রী কে অনুরোধ করলাম মামলাটি চালানোর জন্য। তিনি সুপ্রিম কোর্টের বরিষ্ট আইনজীবী অশোক মুখার্জী এবং হরিশ সালভেকে নিয়োগ করলেন আমাদের মামলাটি চালানোর জন্য । কিন্তু একটি হেয়ারিং এর পরেই সেই মামলাটি গোহাটি হাইকোর্টের ট্রানস্ফার করা হয় । বরিষ্ট আইনজীবী হরিশ সালভে এবং অশোক মুখার্জি মহাশয় গোহাটিতে এসে মামলাটির আরগুমেন্ট করেন এবং মামলায় আমাদের জিৎ হয়। অসমের জনসাধারণ অসাংবিধানিক নির্দেশ থেকে রক্ষা পায় ফেডারেশনের জন্য।
১৯৯৪ সাল। 
২১ জানুয়ারি ১৯৯৪ গুয়াহাটি রাজভবনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ডঃ নরসিংহ রাও কে সাক্ষাৎ করে একটি স্মারক পত্র প্রদান করি। সেই স্মারকপত্র দাবিগুলো ছিল অসমে উগ্রবাদির ধন দাবি ,বাঙ্গালীদের প্রতি বিদেশী র অভিযোগ সহ অন্যান্য । প্রতিনিধি দলে ছিল এডভোকেট অসিত সরকার, বাদল দে, মনি দাস, সজল রায় ও কার্তিক সরকার এবং আমি। 
১০/৩/৯৪ তারিখে পুনর নির্বাচন কমিশন অ্যাক্ট নোটিফিকেশন জারি করে যে পঞ্চায়েতের ,গাওবুড়ার,মিউনিসিপাল নথি লিংক প্রোফ হিসেবে ভোটর তালিকার ক্ষেত্রে গ্রাহ্য করা হবে না। তার প্রতিবাদে আমাদের প্রতিনিধি দল বাদল দে, মনি দাস, এবং আমি দিল্লিতে রওনা হৈ এবং সেখানে গিয়ে নির্বাচন কমিশনার কে সাক্ষাতে মেমোরেন্ডাম প্রদান করার চেষ্টা করি। কিন্তু নির্বাচন কমিশনার টি এন সেশন আমাদেরকে দেখা করতে রাজি হলেন না। উপায়ন্তর হয়ে আমরা অসমের এমপি মাননীয় কবীন্দ্র পুরকায়স্থ মহাশয় কে সাক্ষাৎ করি এবং নির্বাচন কমিশনের সাথে সাক্ষাৎ করার ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানাই । তিনি আমাদেরকে আদবানির মহাশয়ের কাছে নিয়ে যায় এবং আদয়ানি মহাশয় আমাদের এবং এমপি মহোদয়ের কথায় রাজি হয়ে নির্বাচন কমিশনার কে সাক্ষাতের ব্যবস্থা করেন । নির্বাচন কমিশন আমাদের স্মারক পত্র গ্রহণ করেন এবং সাথে সাথে এই ধারার পরিবর্তন করে উপরোক্ত নথি কার্যক্রমকার্যকর করার নির্দেশ দেন।
১৯৯৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর নলবাড়ীর বর্তমান বাকসা কাউলিতে রবীন বিশ্বাসের নেতৃত্বে বিশাল জনসভা হয়। উক্ত সভায় বিধানসভার অধ্যক্ষ দেবেশ চক্রবর্তী , মন্ত্রী নকুল দাস , মন্ত্রী গৌতম রায় উপস্থিত থাকেন । সেই সভায় প্রায় প্রায় 40000 লোকের সমাগম ঘটে । মন্ত্রী গৌতম রায় মহাশয় কাউলিতে একটি মতুয়া মন্দির ও লতি বাড়ি অঞ্চলে একটি সুপার মার্কেট অনুমোদন করেন।
(১০)
নলবাড়ী অঞ্চলের আঙ্গারকাটায় দীর্ঘ সময় ধরে বাঙ্গালীদের বসবাস। সেই অঞ্চলটির জমি সম্পুন্ন পিজিআর /ভিজিআর ।সেই জমি দখল করার জন্য স্থানীয় মেনোকা বাগানের মালিক মরিয়া হয়ে পড়ে এবং সরকারের কিছু মন্ত্রীর সাথে সহযোগিতা করে জমিটুকু দখল করার চেষ্টা করে। সাথে সেখানে বসবাসকারী বাঙালি উচ্ছেদ করার এক পরিকল্পনা ও করেন । কিছুদিন পর বাগান মালিক প্রায় 100 বিঘা জমি দখল করে নতুন বাগান শুরু করেন এবং অন্য জমিটুকু বাগানের নামে করার চেষ্টা করেন। এই কথা অবগত হয়ে আমরা সরকার কে জানাই কিন্তু কোনো ফল হয়নি। আমরা উচ্ছন্যায়লয়ে মামলাও করি । কিন্তু ফল হয়নি । তাই উপায় অন্তর হয় জুরপুর্বক সদল বলে জমি দখল করে। , সংঘর্ষ হয় বাগান নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে । অনেক সদস্য জেল ও খেটেছে এবং জমি ফিরিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে ফেডারেশন। মুখ্য ভূমিকা ছিল গৌরাঙ্গ মণ্ডলের। গৌরাঙ্গ মণ্ডলে নলবাড়ী জেলা সাধারণ সম্পাদক এবং অবং দাস সভাপতি ছিলেন দুই জনেই নিহত হয়েছেন উগ্ৰপন্থির দ্বারা।
(মুখ্য বিষয় শুধু)
১৯৯৫ সাল বাঙালি হত্যা শুরু হয়।২০ আগষ্ট ৯৫ গুয়াহাটি রবীন্দ্র ভবনে সাড়ম্বরে ফেডারেশন প্রতিষ্ঠা দিবস পালন করার পরেই একটি গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় কলাইগাওঁ তে । তাই দিন ধার্য করা হয় ১১ ই অক্টোবর ৯৫ কলাইগাওঁ বেলতলী খেলার মাঠে ।সেজন্য একটি শক্তিশালী অভ্যর্থনা কমিটি গঠন করা হয়। অভ্যর্থনা কমিটির সভাপতি নিয়োগ করা হয় নারায়ন দাস এবং কার্যকরী সভাপতি অনিল সরকার মহাশয় কে সাধারণ সম্পাদক শম্ভুনাথ দেব সহ-সম্পাদক দুলাল মন্ডল ,রবিন বিশ্বাস , জগদীশ সরকার,হেমচন্দ্র দাস ,রিবল দাসকে। সভার মুখ্য অতিথি ছিল মুখ্যমন্ত্রী হিতেশ্বর শয়কীয়া, বিশিষ্ট অতিথি বি এ চি চিফ প্রেমশিং ব্রম্য, দেবের চক্রবর্তী অর্ধেন্দু দে মহাশয়।
এই সভা কলাইগাও অনুষ্ঠিত হোক সেটা মেনে নিতে পারেনি উগ্র জাতীয়তাবাদী সংগঠন তথা উগ্রপন্থী দল ।তাই বারবার হুমকি দিয়ে যাচ্ছিল এই সভা বন্ধ করার জন্য। কিন্তু কলাইগাও বাসির দাবি যেহেতু সংগঠন জন্ম হয়েছে এখানে তাই এই সভা হবেই কোন শক্তির কাছে আমরা নতি স্বীকার করবো না । তাই পূর্ণদমে চলছিল সভার আয়োজন। এদিকে বার বার হুমকি দিয়েছে সভা অনুষ্ঠিত হলে পরিস্থিতি বিষয় হবে। আমরা প্রশাসনকে জানালাম এবং প্রশাসন সিআরপির ব্যবস্থা করে দিলেন।
ইতিমধ্যে আমাদের সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে জনমত গঠন ও চাঁদা সংগ্রহের জন্য যাওয়ায় বিভিন্নস্থানে আসুর সদস্যগণ আমাদের কর্মকর্তাকে মারপিট করে। আভ্যায়ক কমিটির সভাপতি অনিল সরকার ,রিবল দাস এবং কুলেন দাস মহাশয় কে টংলা সহরে একদল উগ্র জাতীয়তাবাদী প্রানে মারার চেষ্টা চালায় কিন্তু পাবলিকের সহযোগিতায় বাঁচতে সক্ষম হয় যদিও অবস্থা মুমুর্ষ ছিল।
(১১)
আমি হতাস হয়ে পরি সিদ্ধান্ত নিতে । কারণ ইতিমধ্যে সজল রায় এবং রবিন বিশ্বাস কে ডেকে পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সন্তোষ মোহন দেব নাগরিকত্ব বিষয় কিছু নথিপত্র চেয়ে। তাই তারা কাছারে রয়েছে। অভ্যর্থনা কমিটি বললো সভা হবেই। তাই সভার কাজ চালানো হয়। আমাদের আঞ্চলিক কার্যালয় ছিলো সুভাষ পল্লিতে। আমরা সভার পূর্ব দিন কার্যালয়ে সন্ধ্যায় হাজির হলাম এবং সভার কার্যাবলী সম্পর্কে বিভিন্ন সদস্যকে নিয়ে আলোচনায় মিলিত হলাম ।ইতিমধ্যে বেলতলী মাঠে আমাদের সভার কাছ করছে স্থানীয় সদস্যরা ।রাত্রি ৭ ঘটিকায় হঠাৎ একদল উগ্রপন্থী হাতে এ কে ফরটিসেভেন নিয়ে অফিস ঘেরাও করে এবং বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে , ধারাবাহিক গুলি চালায় । সাথে পার্শ্ববর্তী এলাকার বাঙালির বাড়িতেও গুলি করে , মুঠ ১১জন নিহত হয় আহত হয় বহু সংখ্যক। নিহতদের মধ্যে উমশ দেবনাথ, অধির দেবনাথ, কুস দেবনাথ, বিশ্বনাথ মোদক ,অহিরা বড় ৪ বছরের ইতি দেবনাথ এবং দুই বছরের বোন আরও কয়েকজন।
এই হত্যাকাণ্ডের পর উগ্র জাতীয়তাবাদের ধারণা ছিল সভা বন্ধ হয়ে যাবে এবং বাঙালিরা ভয় পাবে ।কিন্তু পরদিন একদিকে সৎকার এবং অন্যদিকে সভা ও প্রতিবাদ করা হয় । সাথে সদস্য গন প্রতিজ্ঞা করেন এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ নেবে। তার পরেই গঠন হয় বিটিএফ ।
সভায় মুখ্যমন্ত্রী , বিএচি চীফ অর্ধেন্দু দে উপস্থিত হয়ে ঘটনা অবগত হন এবং পরামর্শ দেন আমাদের কার্যালয় গোহাটিতে বদলি করার জন্য এবং আমাদেরকেও সাথে নিয়ে যায় এবং আমাদের নিরাপত্তার জন্য। দিসপুর এমএলএ হোস্টেল এর 112 আমাদের জন্য থাকার জায়গা নির্ধারণ করে এবং সেখান থেকেই আমাদের সংগঠনের কার্যাবলী চলে।
( ১২)
১৯৯৬ সাল । রাজনৈতিক, সামাজিক বহু পরিবর্তন ঘটে। হিতেশ্বর শয়কীয়া অসুস্থ হয়ে চিকিৎসা করাতে দিল্লি যান এবং সেখানেই মারা যান। নির্বাচনে অগপ এবং পিডিএফ,চিপিএম যৌথ সরকার গঠন হয়। জাতীয়তাবাদের পুনর উত্থান ঘটে। বিভিন্ন স্থানে ফেডারেশনের সদস্য গন গা ঢাকা দেয়। অনেক সদস্য হুমকি পায় সংগঠন ছেড়ে দেওয়ার। এমন এল এ হোষ্টেল ত্যাগ করে উদালবাক্রায় ভাড়া ঘরে আসি সেখানেই কার্যালয় পুর্বে ও ছিলো। দুর্দিনে সদস্য কমে যায় । কার্যালয়ে শুধু আমি রবিন বিশ্বাস। দুই জনে পরামর্শ করি কিভাবে সংগঠন বাঁচাবো।
শেষ ভরসা প্রেম সিং ব্রহ্মা ।কারণ ইতিমধ্যে বড়োদের মধ্যেও ফ্রেকসন হয়েছে। আলফার সাথে একদল এনডিএফবি রয়েছে যারা আবসুকে এবং প্রেম সিংয়ের দলকে পছন্দ করে না। সেহেতু তাদের মধ্যে ভাতৃঘাতী সংঘর্ষ সৃষ্টি হয় । বড়োরা তখন দিশাহারা ইতিমধ্যে এক দল এনডিএফবি সদস্য টার্গেট করে নিয়েছে আবসু এবং প্রেম শিং এর শাসক নেতা দেরকে, হত্যাও করছে কয়েক জন জিএম,ইএম। এর অন্তরালে পিডিএফ রাজনৈতিক দল প্রত্যক্ষ ভাবে জরিত ধারনা ছিল প্রেমশিং ব্রম্মের। এই সংগঠন ইতিমধ্যে সামলা বসুমাতারি হত্যা করেছে ।সামলা বসুমাতারি ছিলেন আবসুর সভাপতি। তাই সৃষ্টি করেন বিএলটি নামের সংগঠন।
আমি,রবীন বিশ্বাস গিয়ে প্রেম সিং ব্রহ্মা এবং ABSU নবনির্বাচিত সভাপতি ঔরখাও গৌরা ব্রহ্মার সাথে উগ্র জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে একত্রিত ভাবে লড়াই করার জন্য আলোচনা করি। আমাদের আলোচনায় তারা সম্মত হয় এবং একত্রে একটি যৌথ সংগঠন গঠন করে উভয় জাতির সমস্যাগুলি তুলে ধরার জন্য সহমত প্রকাশ করেন। তারপরেই গঠন হয় বোড়োল্যান্ড ক- অপারেশন মুভমেন্ট (CCBM.) সংগঠনের মুখ্য উপদেষ্টা প্রেম সিংহ ব্রহ্মা সহ আব্যায়ক ঔরখাগৌরা ব্রহ্ম এবং আমি। বড়োদের সাথে সহযোগিতা এবং জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক আন্দোলন করায় বাঙালি দের সাহস বৃদ্ধি পায় এবং সংগঠন পুনরায় শক্তিশালী রুপে গড়ে উঠে।
১৯৯৬ সাল রাজনীতির পরিবর্তন ঘটে এবং অসমে কংগ্রেস সরকারের পতন হয়ে অগপ নেতৃত্বে পিডিএফ,চিপিএম সরকার গঠন হয়। সাথে সাথে উগ্র জাতীয়তাবাদের উথান ঘটে এবং বাঙ্গালীদের কে সংগঠন ত্যাগ করার জন্য বিভিন্ন তরফ থেকে হুমকি আসে এবং বহু বাঙালি নেতাকর্মী ফেডারেশন ত্যাগ করেন। এদিকে আসুর নেতৃত্বে ২৭ টি সংগঠন মিলে অসম চুক্তি রুপায়ন ও বিদেশি বহিষ্করণ , ভোটার তালিকা থেকে নাম কর্তন ইত্যাদি ইস্যু নিয়ে দিল্লিতে ধরনা দিতে শুরু করুন। 
এর বিপরীতে আবসু র সাথ মিলে কয়েকটি বড়ো সংগঠন এবং অন্যান্য যেমন , কোচ রাজবংশী সম্মিলনী, মাইনোরিটি কাউন্সিল ,আদিবাসী কাউন্সিল ,নেপালি ছাত্র-সন্থা, মিলে আঠারোটি সংগঠনের একটি ক- অরডনেশন কমিটি বড়োলেন্ড মুভমেন্ট নামে গঠন করা হয় এবং দিল্লিতে গিয়ে আমাদের চারটি দাবি সহ অন্যান্য জনগণের দাবির সাথে একটি পত্র কেন্দ্রীয় গৃহ মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী কে প্রদান করা হয়।
নতুন দিল্লিতে আমাদের সাথে সহযোগ করেন তেলেঙ্গানা স্টুডেন্ট ইউনিয়ন নেতা রামকষ্ণ তোমার, ঝারখন স্টুডেন্ট ইউনিয়ন সুরশ মাহাতু, অল ইন্ডিয়া গ্রুখ্রা স্টুডেন্ট ইউনিয়ন নেতা দার্জিলিং এর রৌসন গিরি এবং গঠন হয় ন্যাশনাল স্টুডেন্ট এই সংগঠনে অসম থেকে আবসু এবং ফেডারেশন অংশ নেন। এই সংগঠন নতুন দিল্লি অসম, দার্জিলিং , ঝারখান্ড, আদি বিভিন্ন অঞ্চলে এই ন্যাশনাল ইউনিয়ন বহু সভা যৌথভাবে করেন। সেই সময় সাধারন সম্পাদক হয়েছিলো সম্ভু নাথ দেব, যুগ্ম সম্পাদক অনকুল মিত্র, উপ সভাপতি দেবাশীষ গাঙ্গুলি সহ সম্পাদক তাপশ দে , সাংগঠনিক সম্পাদক রবীন বিশ্বাস।
( 23)
১৯৯৭ সালে।প্রাশাসনিক নির্যাতনের সাথে সাথে আলফা এবং এনডিএফবি হত্যাযজ্ঞ শুরু করে এই হত্যাযজ্ঞ প্রশাসন জ্ঞাত থাকার পরও কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় দেখা যায়। প্রথম অর্থাৎ ৫ জুন ৯৫ ,প্রশাসনিক নির্যাতনের শুরু হয় আমার বাড়িতে। আমার ভাই নারায়ন কে বিনা দোষে উগ্রপন্থী বলে পুলিশ ধরে নিয়ে অমানবিক নির্যাতন এবং জেলহাজতে রাখেন। ৩ ফেব্রুয়ারি ৯৭, ফেডারেশন এর জন্মস্থান কলাইগাও সহরে সন্ধ্যা একদল সুসজ্জিত উগ্রপন্থী এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়ে নিহত করেন উদীয়মান যুবনেতা বিজন সাহা, তার কাকা ভবেশ সাহা এবং ফেডারেশন এর একনিষ্ঠ কর্মী নকুল দত্ত ও ব্যবসায়ী রাজু সাহাকে।
বাঙালি সংগঠন বাঙ্গালীদের মধ্যে প্রসার বিস্তার করেছে দেখে একদল স্বার্থলোভী বাঙালি দালাল সরকারের চামচাগির করে উদীয়মান যুবক সারা আসামে সংগঠন শ্রীবৃদ্ধি করা ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সদস্য গৌরাঙ্গ মন্ডল মহাশয় কে নিঃসংশ ভাবে হত্যা করুন । এই হত্যাকাণ্ড বাঙালিরা জড়িত ছিল।
৫/৪/৯৭ নলবাড়ী র নাগ্ৰিজুলি বাজারে লাউপাড়ার ডাক্তার, সমাজসেবী, ফেডারেশন সমর্থক, প্রফুল্ল দাস কে নৃশংসভাবে হত্যা করেন 
উগ্রন্থিরা।
১৬/৪/৯৭ তারিখ খৈরাবারি অঞ্চলের জালুক বাড়ির বাসিন্দা তথা ফেডারেশন একনিষ্ঠ কর্মী চিত্ত দাস, রতন দাস ,রতন দেবনাথ অন্যজনকে নিশংস ভাবে হত্যা করে পিডিএফ রাজনৈতিক দলের সমর্থক উগ্রুপন্থিরা। ৪/৫/৯৭ গোরশ্বরের বাসিন্দা, ফেডারেশনের কর্মী সুনিল দেবনাথ, এবং নলবাড়ীর মুরমেলা বাসিন্দা ‌ মহেন্দ্র দাসকে হত্যা করে উগ্ৰপন্থি।৪/৫/৯৭ নলবাড়ী লাউপালা ফেডারেশন সকৃয় সদস্য সুভাষ দাস কে হত্যা করে আলফা।২৫/৬/৯৭ কামরুপ জেলার বকুলগুড়ি বাসিন্দা দুলাল দেবনাথ কে হত্যা করলেন আলফা।
১৩/৮/৯৭ রঙ্গিয়া নিকট লাহাপারা এবং হালিমোরা গ্ৰামে উগ্ৰপন্থি নির্বিচারে গণহত্যা চালায়, ঘটনাস্থলে নিহত বলরাম বর্মন, নারায়ন বর্মন, চিত্ত রঞ্জন পাল, বলরাম বর্মন ,বীরেন পাল ,শিবু পাল
হালিমোরা গ্রামে রিনা পাল, মাধব বিশ্বাস, পবিত্র বিশ্বাস ,গোপাল সরকার ,প্রীতিশ সরকার, আমরা সাথে সাথে ঘটনা স্থলে যাই।
(24)
১৪/আগষ্ট ১৯৯৭ । নলবাড়ী জেলার মেছগুরি গ্ৰাম। যেহেতু বাঙালি যুব ছাত্র ফেডারেশন নলবারী জেলার কয়েকটি স্থানে বিশেষভাবে সক্রিয় এবং তার একটি স্থান হয়েছে মেছগুরি অর্থাৎ রবীন্দ্র বিশ্বাসের বাড়ি সেহেতু আলফা এনডিএফবি 14 আগস্ট রাত্রে ভুরে সুসজ্জিত হয়ে গণহত্যা চালায় মেছগুড়ি গ্রামে । বাঙালি সংগঠনকে নিঃশেষ করার জন্য। নিহত করেছেন মদন বৈশ্য, গোপাল বৈশ্য, অনুকুল দাস, নির্মলা দাস,, দীপিকা সরকার( অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী )রঞ্জিত দাস, পু পুষ্প মিত্র,অনিতা মিত্র, যজ্ঞেশ্বর, অজিত বৈশ্য,,জগন্নাথ দাস ,শৈলবালা সরকার , অমরা সরকার,বিজয় সরকার প্রদীপ মিত্র।
কলাইগাও হত্যা কাণ্ডের পর গঠন হয়েছিল ১৯৯৬ সাল গঠন হয়েছিল"বেঙ্গলি টাইগার ফোর্স"। মূখ্য সেনাধক্ষ নিয়োগ করা হয়েছিল রবীন বিশ্বাস মহাশয় কে। রবীন বিশ্বাস ফেডারেশন নেতৃত্ব থেকে পদত্যাগ করে মূখ্য সেনাধক্ষ পদ নিয়ে বড়োদের উগ্ৰপন্থি বিএলটির সাথে যৌথ ভাবে প্রশিক্ষণ নিতে চলে যায়। ( বিটিএফর আলাদা কাহিনীতে বিস্তারিত থাকবে) তাই বাঙালি বিরোধী রাজনৈতিক দল এবং বাঙালি বিরোধী উগ্রপন্থী সংগঠন বাঙালি গণহত্যা শুরু করে। বাঙালি যুব ছাত্র ফেডারেশন এবং বেঙ্গলি টাইগার ফোর্স যাতে বাঙালিরা সমর্থন না করে। অতীতে বাঙালিরা মুক্তভাবে কথা বলতে পারতেন না। বাংলা ভাষা প্রয়োগ হতো না। কিন্তু এই সংগঠন করার পরে সবাই বাংলা ভাষা এবং বাংলা কালসারের সৃষ্টি হয় বাঙ্গালীদের মনে। বৃদ্ধি করে সাহস । তাই উগ্রপন্থী গণহত্যাকে তোয়াক্কা না করে বাঙালিরা বেরিয়ে আসে রাজপথে।
১৯৯৭ সালের১৫ ই আগষ্ট রাত্র সারাদেশে যখন স্বাধীনতা দিবসে আয়োজন চলছে তখন কালরাত্রি অপেক্ষা করছিল খয়রামবারি অঞ্চলের দুটি গ্রামে। সেইগ্ৰাম দুটি হয়েছে জগন্নাথ ঝাড় এবং নিছিলামারি। জগন্নাথ ঝারে ৭ জন এবং নিছিলা মারিয়ে ১২ জন বাঙালি হত্যা করে উগ্ৰপন্থিরা
২৩/১০/৯৭ কোকরাঝাড় রামফল বিলের যুব ব্যবসায়ী সুকুমার সরকার, গনেশ‌ সেনকে হত্যা করে।
৯৭ সালেই একদল উগ্ৰপন্থি চাঁদা সংগ্রহের আঁচলায় দরং জেলার ওরাংএর বাসিন্দা রাজমোহন দত্ত, তার স্ত্রী গীতা দত্তকে হত্যা করে। 
( ১৬)
এই বাঙালি যুব ছাত্র ফেডারেশন করতে গিয়ে সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নলবারী, বর্তমান বাস্কা জেলার লতিবারী,লাউপালা,নাগ্ৰিজুলি, উদালগুড়ির কলাইগাও, টংলা, খৈরাবাড়ি অঞ্চল।বাস্কা অর্থাৎ নলবাড়ীর যারা ফেডারেশন কে পুর্ণতা দিয়েছেন অভিভাবক ছিলেন সমাজসেবী জ্ঞানেন্দ্র দাস , শিক্ষক রবীন্দ্র বিশ্বাস,বিভুতি চক্রবর্তী, চন্দ্র কান্ত দাস, নৃপেন দাস, ফেডারেশনের ১৯৯২ থেকে সদস্য সাধন বৈশ্য মুকুল দাস, আরও বহু যুবক, অভিভাবক আদি(বইয়ে সবার নাম)। ইতিমধ্যে উল্লেখ করেছি নিহতদের কথা। এবার ডাইরেক্ট ফেডারেশন জেলা সভাপতি অবং দাসকে টার্গেট করে নিয়েছে ১১ই জুন ১৯৯৮ উগ্ৰপন্থি। লতিবাড়িতে হত্যা করেছে এনডিএফবি। 
১৪ আগষ্ট ৯৮ নাগ্ৰিজুল বাড়িতে অন্ধকারে এসে গুলি করে হত্যা করেছে ফেডারেশনের সকৃয় সদস্য সুরেন শিংহকে।
২০ জুলাই ৯৮ , কোকরাঝাড় জেলার ডিংডিঙায় ৪ জন বাঙালি ক্রমে কালি ভৌমিক,পুলক ভৌমিক,সেবক ভৌমিক , যোগেশ ভৌমিক উগ্ৰপন্থিরা হত্যা করে।
১১ অক্টোবর ৯৮ নলবাড়ীর লাউপারা গ্ৰামের দুই যুবক নৃপেন্দ নাথ দাস এবং ইন্দ্রজীৎ দাসকে হত্যা করে উগ্ৰপন্থিরা। 
শুধু উগ্ৰপন্থির বাঙালি হত্যা সীমাবদ্ধ ছিলো না। প্রসাশনিক ভাবেও নিঃশেষ করার চেষ্টা চলে।
১০ ডিসেম্বর ১৯৯৮ এক প্রতিনিধি দল দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী, গৃহ মন্ত্রীকে সাক্ষাৎ করে স্বারকলিপি প্রদান করি অত্যাচারী মহন্ত সরকারের অবসান চেয়ে। বৃস্থীত অবগত করি প্রধানমন্ত্রী কে । সেই স্মারক পত্র দিয়ে অ্সম পা ফেলতেই কোকরাঝাড় ষ্টেশনে এরেষ্ট হয় সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রনজিৎ দেবনাথ।তাকে জেল/হাজতে আটক করে রাখে দীর্ঘ দিন । তার দোষ ছিলো অসম সরকারের বিরুদ্ধে বাঙালির হয়ে কথা বলা।
আমি কয়েক দিন পর বাড়িতে আসি। আমাকে সামরিক বাহিনী দিয়ে আটক করে কলাইগাও থেকে। সামরিক কেম্পে অমানবিক নির্যাতন করে।
( ১৭)
১৭ আগষ্ট ১৯৯৮ খারুপেটিয়া অধিবেশন। প্রথম সংগঠন ভাগের ব্লুপ্রিন্ট । এই বৎসরেই সংগঠনের পিতৃপুরুষ বীরেন সরকার মহাশয় কঠিন রুগে আক্রান্ত হয়। তাকে নিয়ে বাইরে যেতে হয চিকিৎসার জন্য। আমি কিছু দিনের ছুটি নিলাম।এই জন্যই যে পাঁচ বৎসর গাড়ি, বাড়ি দিয়ে সংগঠন চালিয়েছে । দুরদুরান্তের শত শত সদস্যোর থাকা, খাওয়া ব্যবস্থা করেছে। তাই আমার দায়িত্ব তার সাথে থাকা।
দায়িত্ব খারুপেটিয়ার রনজিৎ সরকার এবং সীতাংশু সরকার মহাশয় কে দিলাম । কয়েক দিনের মধ্যেই ফেডারেশনের সকল নথি, ডকুমেন্ট সম্ভুনাথ দিয়ে যায়। যাহোক, সাথে দিন,তারিখ নির্ধারণ করে অধিবেশন করার কতৃত্ব প্রদান করলাম যেহেতু দুবছর কার্যকাল সমাপ্তির পথে । সীতাংশু সরকার ফেডারেশন নলবাড়ি জেলা সদস্য তথা সকৃয় কর্মী। সে ২৫ জানুয়ারি ৯৮, লালগনেশ কার্যালয় আসে এবং কেন্দ্রীয় কমিটিত কাজ করার আগ্ৰহ প্রকাশ করে । সেই মতে কেন্দ্রীয় সদস্য করা হয়। সীতাংশু, শিক্ষিত,দৃঢ় এবং সংগঠনের প্রতি দায়বদ্ধতা ছিলো।
17 আগস্ট খারুপেটিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় অধিবেশন শুরু হয়। আমি প্রতিনিধি সভায় সকল হিসাবপত্র এবং প্রতিবেদন গৃহীত করে এক আত্মীয়র বাড়িতে চলে যাই। যাহাতে কমিটি গঠন পরবে আমার নাম পুনর সভাপতি হিসেবে প্রস্তাব না হয়। সেখানেও থাকতে পারলাম না । কারণ গুহাটির বুদ্ধিজীবী দল একটি উপস্থিত ছিলেন। তারা চেয়েছিল আমার উপস্থিতি। উপায়হীন হয়ে যেতে বাধ্য হলাম। সভার সভাপতি ছিলেন শিক্ষক বাদল দে মহাশয়। সভায় কিছু সদস্য আমার নাম প্রস্তাব দিয়েছে । আর কিছু সম্ভুনাথ দেবকে। আমি সভাপতি থাকবো না অনুরোধ জানাই উঠিয়ে নিতে বলি । কিন্তু সদস্য গন বিরক্ত হয়ে সভা ত্যাগ করতে সিন্ধান্ত নেয়। তারপর সভায় অনিচ্ছাকৃত ভাবে ভোটাভুটি হয় ।মাত্র ৭ টা ভোট পায় বিরোধরা । সেই খানেই সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন রনজিৎ দেবনাথ।
(১৮)
খারুপেটীয়া অধিবেশনে পরাজয় সহজ ভাবে মানতে পারেনি কিছু পর্দার আড়ালে নেতা। তাই বেঙ্গলি টাইগার ফরছের কমান্ডার বলে প্রতিষ্ঠিত করতে মরিয়া হয়ে লেগেছে কিছু ফেডারেশনের নেতা। তাদের আশা ছিল যদি বিটিএফ বলে পুলিশ বা আর্মির দ্বারা আমাকে হত্যা করা সম্ভব হয় তবে তাদের ফেডারেশন নেতৃত্ব গ্ৰাশ করার সুযোগ হবে মহন্ত সরকারের সুযোগ পাব।
তাই প্রমাণ হিসেবে নির্ধারণ করেছে আমি রঞ্জিত সরকারকে দেওয়া নিয়োগপত্র এবং বিটিএফ সংবিধানের পান্ডু লিপি। তাদের দাবি দুই হাতের লেখা এক। প্রমাণ করলো সহদেব দাস ফেডারেশনের সভাপতি তথা বিটিএফ এর মুখ্য নেতা । এইসব তথ্য মঙ্গলদৈর এছপি জনৈক ভট্টাচার্যী সাথে মিলে সামরিক বাহিনীকে দেওয়া হয়এবং নির্দেশ দেওয়া হলো ধরে হত্যা করতে। ২০আগষ্ট ৯৮ এরেষ্ট করে আর্মি ।্অমাবিক নির্যাতন,হিটারে প্রসাব করা আদি। এই কথা জানতে পেরে কলাইগাওঁ জনগণের সাথে সারা অসম থেকে হাজার হাজার লোক এসে সমবেত হয় এবং থানা আর্মি ক্যাম্প ঘেরাও করে। উপায়হীন আর্মি আমাকে ভুটানের নিয়ে যায় এবং এনকাউন্টারের চেষ্টা কর কিন্তু ঠাকুর সদয় ইতিমধ্যে জগদীশ সরকার এবং বিরাট সিংহ দিসপুর দিল্লিতে ফোন করে ব্যতিব্যস্ত করে। সাথে সাথে প্রণব মুখার্জি মহাশয়ের ফোন আসে এবং আমাকে ছেড়ে দিতে নির্দেশ দেন এবং ছাড়েন। তারা স্বিকার করে রাজ্যিক প্রসাশন ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে হত্যা করে বদনাম করার চেষ্টা করে ছিলো। তখন থেকেই ফেডারেশন ভাগ, বিটিএফ ভাগ।( ৩য় ভাগ জগদীশ সরকারের নেতৃত্বে বিটিচি চুক্তি থেকে)।

লেখক : সারা আসাম বাঙালি যুবছাত্র ফেডারেশনের অন‍্যতম প্রতিষ্ঠাতা।

এই লেখাটি লেখকের সম্পূর্ণ নিজস্ব মতামত এবং এই লেখাটির জন্য 'নয়া ঠাহর' গোষ্ঠী বা সম্পাদক কোনো ভাবেই দায়ী থাকবে না।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.