Header Ads

আসাম বিশ্ববিদ্যালয় বরাক উপত্যকার লোড শেডিঙের অন্ধকারে শুধুই আলো ছড়িয়েছে



অমল গুপ্ত, গুয়াহাটি : শহর, সভ্যতার উন্নয়নে, সার্বিক বিকাশে উচ্চ শিক্ষার বিরাট ভূমিকা আছে। কিন্তু যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শুধু এম এ, বি এ-এর জন্ম দেয়, গাদা গাদা ডক্টরেটের জন্ম দেয়, শুধু বাহ্যিক অলংকার তৈরি করে আলমিরাতে সাজিয়ে রাখার জন্যে  আলমারি সার্টিফিকেট, পদকে ভরে যায়।  আর পদকধারীরা জীবিকা নির্বাহের নূন্যতম সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়অনাকারে থাকতে হয় সেই উচ্চ শিক্ষার প্রয়োজন আছে কি?  যেখানে ঘরে ঘরে ডক্টরেট, এম এ, বিএ পাশ আর ঘরে ঘরে বেকার,  তাদের রাজা নিজের প্রজাদের দেখে না,  সেই ভূখণ্ডে ভোট আসে ভোট যায়, মন্ত্রী হন, বিধায়ক হন, নেতা হন, নিজে বাঁচার জন্যে।  ক্রমশ দক্ষিণ অসমের এক টুকরো ভুখন্ড শুকিয়ে যাচ্ছে মরে যাচ্ছে জল দেবার মানুষ নেই নিজের প্রাসাদ, নিজের বিলাসী গাড়ি, বিদেশ ভ্রমণ, ব্যাংক সাদা কালোতে ফুলে ফেঁপে উঠে। অগপ দেখলো,  নিজের মায়ের ভাষা বাঁচাতে গিয়ে গুলি খেলোঅগপ দেখেছে,  কংগ্রেস দেখেছে, এখন পরিবর্তনকামী বিজেপি দেখছে, কংগ্রেস সুগার মিল বন্ধ করেছেদুগ্ধ প্রকল্প বন্ধ করেছে। বদরপুর টেক্সটাইল বন্ধ করেছে।  বিজেপি কবরের শেষ পেরেক কাছার কাগজ কলে পুঁতে দিয়েছে। আর কি বাকি থাকলো?   অনেক যুদ্ধ করে এক বিশ্ববিদ্যালয় পেয়েছে প্রাক্তন প্রধান মন্ত্রী নর সীমা রাও ১৯৯৪ সালে ২১ জানুয়ারি শিলচর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে দরকনাতে তো ৩৫০০ বিঘা জমিতে আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। সেই বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে অসম সরকার পি এস ভট্টাচার্যকে রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব দিয়ে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকা থেকে পাঠিয়েছিলভট্টাচার্য অসমীয়া বাঙালিদের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন অসমের স্বাভিমান কলক্ষেত্রের দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি প্রায় যুদ্ধ করে জমি অধিগ্রহণ করে কাজটি করলেও কাজের মর্যাদা পাননি  তিনি বরাক ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার সম্পর্কের দূত হিসাবে কাজ করেছেন শেষ দিন পর্যন্ত তিনি বড় অভিমান নিয়ে চলে গেলেন। টি জেলাতে ৩৫টি কলেজকে নিয়ে ৩০০০ হাজারের বেশি ছাত্র, ৪৫টি বিষয় নিয়ে পড়ানো হয়। প্রথম উপাচার্য ছিলেন জয়ন্ত ভূষণ ভট্টাচার্য  বর্তমান উপাচার্য পি বি নাথ রাজনীতি উদ্ধে নন, তাকে সরাবার জন্যে একাংশ ছাত্রের লাগাতার আন্দোলন চলছে বলে ছাত্র আন্দোলনের নেতা প্রদীপ দত্ত রায় অভিযোগ করেন। দক্ষিণ অসমের শিলচর শহরের দোর গোড়ায় এতবড়,  বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে কিন্তু পেট ভরাতে পাচ্ছে কি? 
কাছার, করিমগঞ্জ, হাইলাকান্দি জেলার প্রায় ৪০ লক্ষ জনসংখ্যা প্রায় তিন লক্ষ শিক্ষিত বেকার, গত কয়েক মাসে কৃষি বিভাগে ১৭০ জনের চাকরি বরাকের একজন ছিল না শিক্ষা বিভাগে ৩০০ জনের চাকরি হলবরাকের মাত্র একজন সুযোগ পেয়েছে বিজেপি আমলে ৭০০ জন চাকরি দিয়েছে বরাকের মাত্র জন বলে গুরুতর অভিযোগ করেন সারা কাছার করিমগঞ্জহাইলাকান্দি ছাত্র সংস্থার প্রতিষ্টাতা সভাপতি প্রদীপ দত্ত রায়। বরাকের ঘরে ঘরে এম এ, বি এ ঘরে ঘরে ডক্টরেট  এই বরাকে ঘরে ঘরে বেকার  তীব্র অভাব অনটনবেকার সমস্যা অসম চুক্তির আধারে বরাক বিশ্ববিদ্যালযের সঙ্গে তেজপুর ও বিশ্ববিদ্যালয় পেলো কিন্তু তেজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বেকার কম, পেশাদারি, কর্মের সন্ধান দেওয়া নানা সাবজেক্ট পড়ানো হয় ঘরের আলমারিতে সার্টিফিকেট, পদক ঝুলিয়ে রাখতে হয় না বরাকের মত বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সঙ্গে বরাকে বৃহৎ শিল্প স্থাপনের জন্যে আকসা তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর কাছে স্মারকপত্র দিয়েছিল তিনি গুরুত্ত্ব দেননি। অগপ তো বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি দিতেও রাজি হয়নি। বরাকের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সন্তোষ মোহন দেব এবং মুখ্যমন্ত্রী হিতেস্বর শইকিয়া বরাকের উন্নয়নে কাজ করেছেন। সারা বড়ো ছাত্র সন্থার সভাপতি উপেন ব্রহ্মের সঙ্গে আকসার এক চুক্তি হয়েছিলসেই চুক্তি অনুযায়ী আকসা বড়োদের অধিকার আন্দোলনে সমর্থন দিয়েছিল বরাকে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে সহযোগিতা করেছিল এর ফলে বড়ো জনগোষ্ঠীর সঙ্গে বাঙালিদের সুসম্পর্ক স্থাপন প্রতিষ্ঠিত হয়। বি টি সি কর্তৃপক্ষ আসাম বিশ্ববিদ্যালয়কে ৫০ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য করেসেই টাকাতে উপেন ব্রহ্ম স্মারক ভবন নির্মাণ করা হয়। বরাক বিশ্ববিদ্যালয় পেলো। কিন্তু পেপার মিল, সুগার মিল সব বন্ধ করে দেওয়া হল।  ইস্ট ওয়েস্ট করিডোরের মাত্র ৩৩ কিলোমিটার রাস্তা আটকিয়ে রাখলো বিজেপি সরকার  এন আর সি-র অত্যাচারের কথা নাই বা বললাম। বরাকের ঘরে ঘরে  বেকার, ঘরে ঘরে এম এ, ডক্টরেট, আজব ভূমি বরাক, তাই নিয়ে ভালোই আছে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.