Header Ads

ছবি কথা বলে


ছবি কথা বলে। চিত্ৰ শিল্পের ভেতর বিশ্ব, প্ৰকৃতি, সবুজ, পশু, পাখি সমস্ত কিছুই যেন ক্যানভাসে জীবন্ত হয়ে ওঠে তাঁর রং ও তুলির ছোঁয়ায়। তাঁর ছবির ঘরানা হচ্ছে মডাৰ্ন ক্ৰিয়েটিভ আৰ্ট। হ্যাঁ, এখানে শিল্পী পিনাকীরঞ্জন বেরার কথাই বলা হচ্ছে। এখন পৰ্যন্ত তিনি তিনশোরও বেশি ছবি এঁকেছেন। ছবি আঁকা ছাড়া তিনি গ্ৰাফিক্স, ভাস্কৰ্য এবং মিউজিক নিয়েও কাজ করছেন। নিজের প্ৰবল ইচ্ছাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে বলা যায় অল্প বয়সেই প্ৰতিষ্ঠিত হয়েছেন। বৰ্তমানে অতিমারি করোনার আবহে তিনি কিভাবে সময়টাকে কাজে লাগাচ্ছেন তা নিয়েই ফোনে দু চার কথা হয়েছিল ‘নয়া ঠাহর’এর সহকারী সম্পাদক রিংকি মজুমদারের সঙ্গে। তাঁর সঙ্গে হওয়া সেই কথোপকথন নয়া ঠাহরের পাঠক সমাজের জন্য তুলে ধরা হল। 
এক) ‘নয়া ঠাহর’এর ২০২০ পুজো সংখ্যার জন্য প্ৰস্তুতি চলছে। আপনার আঁকা দুই একটি ছবি নেব। কিন্তু তার আগে আমাদের ওয়েব ম্যাগাজিনের চিত্ৰ সংবাদের জন্য কয়েকটি ছবি নিতে চাই। তা শুধু ছবি দিলে পাঠক সমাজের খুব একটা ভালো না ও লাগতে পারে, তাই ছবির সাথে দুচার কথা থাকলে মন্দ লাগবে না। তা ছবি আঁকার তাগিদটা আপনি কোথায় কিভাবে পেলেন? 

জবাবঃ হ্যাঁ অবশ্যই।  আসলে আমার বাবা বলাইচন্দ্ৰ বেরা খুব ভালো ছবি আঁকতেন। দাদা পীযুষকান্তি বেরা একজন শিল্পী। ২০০২ সালে কলকাতার অ্যাকাডেমি অব ফাইন আৰ্টসে দাদার আঁকা ছবির একটি প্ৰদৰ্শনী হয়। প্ৰদৰ্শনীতে শিল্পী হিসেবে দাদার কদর দেখে আমারও মনে মনে ছবি আঁকার ইচ্ছে হয়। তবে বাবাকে দেখেই প্ৰথমে আমার মনে মনে ছবি আঁকার শখ হয়।   
 দুই)  আপনার বেড়ে ওঠা পূৰ্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার গ্ৰামে। স্কুলশিক্ষা ও উচ্চমাধ্যমিকও সেখানেই করেছেন। তারপর আপনি চিত্ৰশিল্প জগতে নিজেকে কিভাবে মেলে ধরলেন?

জবাবঃ বাবা ও দাদার আঁকা ছবি দেখে মনে ছবি আঁকার ইচ্ছেটা জেগেছিল। তারপর উচ্চ মাধ্যমিক পড়ায় সময় বিভিন্ন ধরনের ছবি আঁকতে শুরু করি। আঁকতে আঁকতে ছবির প্ৰতি ভালোবাসা তৈরি হয়। ঠিক করি আৰ্ট নিয়ে পড়াশুনো করবো। ২০০৪ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর কলকাতার কলেজ অব ভিস্যুয়াল আৰ্টে ব্যাচেলর ইন ফাইন আৰ্টসে ভৰ্তি হই। ২০০৮ সালে রবীন্দ্ৰ ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর ভৰ্তি হই। ২০১০ সালে রবীন্দ্ৰভারতী থেকেই প্ৰথম শ্ৰেণিতে প্ৰথম হই। স্বৰ্ণপদক পাই। একই বছরে আমি গভৰ্নর অ্যাওয়াৰ্ডও পেয়েছি। ২০১৭ সালে আমি ললিত কলা অ্যাকাডেমি অ্যাওয়াৰ্ড পেয়েছি। ২০১৮-২০১৯ সালে ইন্ডিয়ান আৰ্ট অ্যান্ড কালচার প্ৰমোশনে আমি পাই ‘লাইফ এমপাওয়ারমেন্ট অ্যাওয়াৰ্ডস ফর স্কুলস’। এই দুটি আমার জীবনের পাওয়া সেরা পুরস্কার। দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাই, বেঙ্গালুরুতে বিভিন্ন আৰ্ট গ্যালারিতে আমার ছবি জায়গা পেয়েছে। বিদেশে সুইজারল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, কানাডার আৰ্ট গ্যালারিতে আমার আঁকা ছবি রয়েছে। এভাবেই চলতে চলতে বিভিন্ন জায়গা থেকে ছবির অৰ্ডার আসতে থাকে।


তিন) আপনি গত এক দশকে চিত্ৰ শিল্পে প্ৰচুর খ্যাতি লাভ করেছেন। বিদেশেও আপনার ছবির প্ৰদৰ্শনী হয়েছে। আপনার তো সবসময় ব্যস্ত সিডিউল। তবে বৰ্তমানে অতিমারি করোনার পরিস্থিতিতে সবই বন্ধ। কিভাবে সময়টাকে কাজে লাগাচ্ছেন?

জবাবঃ হ্যাঁ, এতোদিন তো একের পর এক এগজিবিশন ছিল। গ্ৰাহকের অৰ্ডারের কাজ সম্পূৰ্ণ করতে ব্যস্ত থাকতাম। প্ৰদৰ্শনীর কাজের চাপ থাকতো। এখন প্ৰদৰ্শনী বন্ধ রয়েছে। তাই পুরো সময়টাকে ভেবে চিন্তে খরচ করছি। চিত্ৰ শিল্পের কাজে পুরো টা ঢেলে দিচ্ছি। পাশাপাশি মিউজিকেও সময় দিচ্ছি। বিষয়টাকে পরিবৰ্তন করে কাজটাকে আরও কিভাবে গভীরে নিতে পারা যায়, উন্নয়ন করা যায় সেটাই চেষ্টা করছি। চিত্ৰশিল্পে আরও গভীরতা আনার চেষ্টা করছি। তাছাড়া আমি গান নিয়েও চৰ্চা করি। আমি তবলা, অক্টোপ্যাড, ড্ৰামসেট বাজাতে পারি। মিউজিক্যাল ইন্সট্ৰুমেন্ট নিয়ে চৰ্চা করে যাচ্ছি।

এই ছিল আমাদের  কথোপথন। তবে শিল্পীর আরও একটি স্বপ্ন রয়েছে। সেটা হল গ্ৰামে গঞ্জে অনেক প্ৰতিভা আছে। যারা সঠিক প্ৰশিক্ষণ ও গাইডের অভাবে এগিয়ে যেতে পারছে না। তাদের জন্য নিজের গ্ৰামে একটি আৰ্ট অ্যাকাডেমি তৈরি করা। যেখানে দুঃস্থ প্ৰতিভাবান ছাত্ৰছাত্ৰীরা বিনে পয়সায় আঁকা শিখতে পারবে। চিত্ৰশিল্পী পিনাকির উঠতি প্ৰতিভাদের খুঁজে বের করার এই স্বপ্ন পূরণ হোক এই শুভেচ্ছা রইল।









কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.