Header Ads

অসমে অটল বিহারী বাজপেয়ীর স্বপ্ন অধরা, আজও বরাকবাসী মেগা সড়ক পেলো না


অমল গুপ্ত, গুয়াহাটি : আজ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপিত হচ্ছে দেশজুড়ে। গুয়াহাটি বিজেপি কার্যালয়ে দিবসটি পালিত হয়। পোখরান মরুভূমিতে পারমাণবিক পরীক্ষা, সর্বশিক্ষা মিশন, ইস্ট-ওয়েস্ট করিডোরের মতো যুগান্তকারী মেগা প্রকল্পের জন্ম দিয়েছিলেন অটল বিহারী বাজপেয়ী।  তাঁর নামে অটল অমৃত যোজনা অত্যন্ত জনপ্রিয় স্বাস্থ্য কর্মসূচি। সেই আধারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গতকাল দেশের ১৩০ কোটি মানুষের জন্য স্বাস্থ্য ডিজিটাল পরিচয়পত্র ইস্যু করার বৈপ্লবিক সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার অনেক প্রকল্প ঘোষণা করলেও তা অধিকাংশ ক্ষেত্রে বাস্তবায়ন হয়নি। আগের কংগ্রেস সরকারের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল প্রতি ভাষণে বরাক ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার সম্প্রীতির কথা, উন্নয়নের কথা বলেন। উন্নয়ন ছাড়া সম্প্রীতি হয় না। আজ দেশবাসীর সঙ্গে রাজ্যবাসীও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছেন। কিন্তু বরাকবাসীর অভিযোগ দক্ষিণ অসমের বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী বরাক উপত্যকাকে মেনল্যান্ড রাজধানী নগরী গুয়াহাটির সঙ্গে জুড়তে ইস্ট-ওয়েস্ট করিডোরের জন্য চার লেনের মহা সড়ক তৈরির কাজের সূচনা করা হয়েছিল ২০০৪  সালে। আজ তরুণ গগৈ কংগ্রেস সরকারের ১৫ বছর, বিজেপি সরকারের সাড়ে চার বছর, মোট প্রায় ২০ বছর পার হয়ে গেল। গুয়াহাটি থেকে শিলচর মাত্র ৩১৮ কিলোমিটার সড়ক পথে সময় লাগার কথা ৬ ঘন্টা ৪৩ মিনিট, বিমান পথের দূরত্ব ১৭৯ কিলোমিটার। এই সড়ক পথের ডিমাহাসাও জেলার হারাঙ্গাজাও থেকে জাতিঙ্গা প্রায় ২৫ কিলোমিটার সড়ক তৈরির কাজ বন্ধ।  ভূতাত্ত্বিক সমস্যা আছে। বার বার ধ্বস্ নামছে। এখন ৫৪ নম্বর জাতীয় সড়কের আগের দু-লেনের সড়কটি মেরামত করে ডিমাহাসাও জেলার সদর হাফলং পর্যন্ত চালু রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অফ ইন্ডিয়া কাজটি করছে। পুনরায় কেন্দ্র ৫৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে বলে হাফলং সূত্রে জানা গেল। 
কার্যত আগের টাকা জলে গেল। জাপান থেকে এক বিশেযজ্ঞ দল কয়েক মাস আগে এসে ধ্বস্ প্রবণ এলাকা পরিদর্শন করেছিলেন। এদিকে, বালাসরা থেকে হারাঙাজাও পর্যন্ত ৩১ কিলোমিটার রাস্তার অবস্থা খুব খারাপ। এনএইচআই ডি সি এল নামে নতুন কোম্পানির হাতে নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রটি জানান। এবার আরও কত কোটি টাকা খরচ হবে? হিসাব কেউ জানেন না।  এই সড়ক নির্মাণে বন বিভাগ সবুজ সংকেত আগেই দিয়েছে। কিন্তু কাজ কবে শেষ হবে? করো জানা নেই। বিজেপি সরকারও বলতে পারবে না। ২০০৪ সালের শিলচর সৌরাষ্ট্র মহা সড়ক নির্মাণের সময়সীমা ধার্য করার কথা ঘোষণা করেছিলেন তদানীন্তন সড়ক পরিবহন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ডি এস খানদুরী। বরাকের ৪০ লক্ষের বেশি মানুষ প্রাণ হাতে করে মেঘালয় হয়ে গুয়াহাটি আসতে হয়। সময় লাগে ১২ থেকে ১৪ ঘন্টা। ডিমাহাসাও জেলার সড়ক পথ নির্মিত হলে ৫ থেকে ৬  ঘন্টা কমে যেতো। লামডিং-শিলচর পাহাড় লাইনে ধ্বস্ লেগেই আছে। ট্রেন নিয়মিত চলে না। ট্রেনের দুরবস্থা দেখলে চোখে জল আসবে। ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার রেকর্ডকালীন সময়ে ত্রিপুরা পর্যন্ত ডাবললাইন তৈরি করিয়েছেন। ত্রিপুরা-আগরতলা স্টেশন ভবন দেখবার মত। সবকিছু মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে সম্পূর্ণ হয়েছে। অথচ বরাকবাসীর দুর্ভাগ্য আজও অটল বিহারী বাজপেয়ীর স্বপ্ন পূরণ করতে পারলো না কংগ্রেস, বিজেপি সরকার।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.