Header Ads

অসমে করোনা উদ্ভূত পরিস্থিতি অনুকূল, মৃত্যুর হার সবচেয়ে কম, সুস্থতার হারও বেশি, লকডাউনের পক্ষে নয়, করোনা নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে : হিমন্তবিশ্ব শর্মা


অমল গুপ্ত, গুয়াহাটি : অসমে করোনা সংক্রমণ উদ্ভূত পরিস্থিতি আজও ভয়াবহ, জটিল হওয়া সত্ত্বেও মৃত্যুর হার দেশের মধ্যে সবচেয়ে কম।মাত্র ০.২৩ শতাংশ। দেশে মৃত্যুর হার ২.৬৯ শতাংশ। সুস্থতার হারের দিকেও অসম, গুজরাট, পশ্চিমবঙ্গের পরেই ৬৩.৩৯ শতাংশ। পশ্চিমবঙ্গের হার ৬৩.৯৯ এবং গুজরাটের ৭০ শতাংশ। আজ জনতা ভবনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা অতিমারী কোভিড-১৯ সংক্রমণ নিয়ে সরকারের স্থিতি ব্যাখ্যা করে সফলতার পাশাপাশি কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়ার কথাও শোনান। তিনি বলেন, আজ পর্যন্ত ১৫,৫৩৬ জন আক্রান্ত হয়েছে। নতুন করে ৯৩৬ জন আক্রান্ত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার ৭১৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন। আজ বিকাল পর্যন্ত একজনও আক্রান্ত হয়নি।  আক্রান্তের সংখ্যা কমছে বলে দাবি করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে ৫ লক্ষ ২৫ হাজার ৪৮৫ জনকে পরীক্ষা করা হয়েছিল। প্রতিদিন গড়ে আক্রান্ত হয়েছিল ৭০০ থেকে ৯০০ জন। গত ৪ জুলাই ছিল ১২০০ কেস। গতকাল হ্রাস পেয়ে দাঁড়ায় ৯৩৬ টিতে। তবে ৬২৫৭ জনকে রাপিড এন্টিজেন টেস্ট করার আগে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩০ শতাংশ। এখন কমে দাঁড়িয়েছে ১৬ শতাংশের নীচে। আরও কমবে, তাই আর ১৪ দিন লকডাউন দেবার প্রয়োজন নেই। ৭ দিনই যথেষ্ট। তবে কাল মুখ্যসচিব কুমার সঞ্জয় কৃষ্ণ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। তারা লকডাউনের পক্ষে নন, চলতি লকডাউনের ফলে শ্রমজীবী গরিব মানুষের চরম দুর্ভোগ হয়েছে স্বীকার করে নিয়ে তিনি বলেন, এই ক্ষতি সরকার পুষিয়ে দেবে। তবে কিভাবে তা স্পষ্ট করেননি। তিনি জানান, শিলচর, গোলাঘাট, বরপেটা এবং যোরহাট এই চারটি শহরের পরিস্থিতির দিকে সরকার বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছে। চারটি শহরে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। তবে লকডাউন ঘোষণার মত পরিস্থিতি উদ্ভব হয়নি। তিনি জানান, গুয়াহাটি কেন্দ্রিয় কারাগারে গতকাল ১৯ জন আক্রান্ত হয়েছিল। আজ ৩৩ জন আক্রান্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে রঞ্জন দৈমারীও আছেন। তাকে জি এম সি-তে রাখা হয়েছে। তিনি জেলার পরিস্থিতি তুলে ধরে বলেন, নতুন ঘটনা হিসাবে করিমগঞ্জ জেলাতে ২৮ জন, বঙাইগাঁওয়ে ২৯ জন, মরিগাঁও, দরঙে  ৯১ জন আক্রান্ত হয়েছে। গুয়াহাটি মহানগর সম্পর্কে বলেন, প্রায় ১০.১১ লক্ষ জনসংখ্যার শহরের প্রায় ১ লক্ষ মানুষের কোভিড টেস্ট করা হয়েছে। যা ভারতের কোনো শহরে করা হয়নি বলে দাবি করে বলেন, আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ কমছে। ৬২৫৭ জনের এন্টিজেন টেস্ট করা হয়েছে। ৩০ শতাংশ থেকে কমে ১৬ শতাংশ হয়েছে। আরো  কমবে। নাগরিক সমিতি ১৪ দিন লকডাউনের পক্ষে সওয়াল করলেও স্বাস্থ্য বিভাগ ৭ দিনের বেশি লকডাউন চায়না।  মুখ্যসচিবকে বলেছি, সাংসদ, বিধায়কদের সঙ্গে আলোচনা করে সবার মতামত নিয়ে যেন লকডাউন ঘোষণা করা হয়। তিনি জানান,  বেসরকারি কোভিড সেন্টারে প্রায় ১০০০ বেড  খালি আছে। সরকারি হাসপাতাল ২০০ বেড খালি আছে। হোম কয়রেন্টিনে কেন কোভিড রুগীদের রাখা হয় না, এই সম্পর্কে বলেন, প্রতিবেশীদের আপত্তি হতে পারে। আমাদের পরম্পরা তিন জেনারেশন এক সঙ্গে থাকা, বৃদ্ধ মা-বাবা, নাতি-নাতনি সহবাস করা, পৃথক ঘর, সেপারেট টয়লেট, একসঙ্গে থাকলে বয়স্কদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা থাকবে। ২৪ ঘন্টার জন্যে একজন ডাক্তার রাখতে হবে। যেকোনো সময় হাসপাতাল যেতে হতে পারে। অ্যাম্বুলেন্স রাখতে লাগবে, চালকের বাবস্থা করতে হবে। সরকারের অ্যাম্বুলেন্স দেওয়া সম্ভব নাও হতে পারে। এই সব কথা চিন্তা সরকার হোম আইসোলেশনে না রেখে রোগীকে কোভিড হাসপাতালে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অথচ এই প্রশ্নে রাজনীতি করা হচ্ছে। তার সমালোচনা করা হচ্ছে। এক সম্পাদক তো করোনা সংক্রমণকে স্বীকার না করে মিথ্যা কথা বলে প্রথম পৃষ্টায় লিখেও দিলেন। চতুর্থ স্তম্ভের বিরুদ্ধে কী করেই বা লড়ব বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি জানান, ৬৫ বছরের বেশি বয়সের মানুষের জন্যে পৃথক কোভিড সেন্টার এবং গর্ভবতী এবং শিশুদের জন্য পৃথক কোভিড সেন্টারের বাবস্থা করা হবে। যা দেশে কোথাও এই বাবস্থা হয়নি। হিমন্তবিশ্ব শর্মা গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কোভিড রোগীদের যন্ত্রণা, আর্তনাদের প্রসঙ্গ তুলে সাংবাদিকদের সেই অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্যে আহবান জানান। তিনি বলেন, কিভাবে আই সি ইউ-তে কোভিড রুগীরা আছেন, ডাক্তার নার্সরা মানব সেবার উৎকৃষ্ট উদাহরণ তুলে ধরেছেন তা নিজে চোখে সাংবাদিকরা দেখতে পারবেন। তিনি জানান, জি এম সি-তে দুদিনে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। ৩৫ জন সিরিয়াস রুগী আছেন। তাদেরকে প্লাজমা থেরাপি, রেমডিসিভি, স্ত্রে রোয়েড দিয়ে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা চলছে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.