Header Ads

ফের তিনদিনের লকডাউন শুরু ত্রিপুরায়, রাজ্যে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির জন্য দায়ী সরকার, অভিযোগ বিরোধীদের


বিপ্লব বৈদ্য, আগরতলা : সোমবার থেকে তিনদিনের লকডাউন  শুরু  হল ত্রিপুরায়। শুনশান  রাজধানী আগরতলা সমেত  গোটা রাজ্য।মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব  কুমার দেবের ঘোষনামত শুরু  হয়েছে বাড়ি  বাড়ি  সমীক্ষার কাজও। জ্বর সর্দি, - কাশির মত করোনার উপসর্গ কারো আছে কিনা পরীক্ষা  করবে সমীক্ষক দল। কারো উপসর্গ  ধরা পড়লে সঙ্গে  সঙ্গে করা হবে নমুনা পরীক্ষা। করোনা সংক্রমণ  ঠেকাতে  বাড়ি  বাড়ি সমীক্ষার কাজকে সময়োপযোগী  বললেও করোনা পরীক্ষায় পজিটিভ  ধরা  পড়লে তাঁদের কোথায় রাখা হবে ? এই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।বেশী বেশী করোনা পজিটিভ  ধরা  পড়লে তাঁদের  কোথায়  রাখা হবে এই নিয়ে সরকারী কোন উদ্যোগ নেই বলেও অভিযোগ । অন্যদিকে তিনদিনের লকডাউনের যুক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধী  রাজনৈতিক  দলগুলি। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক  গৌতম  দাশের প্রশ্ন  কাদের পরামর্শে তিনদিনের  লকডাউন করছে সরকার? অপরিকল্পিতভাবে   লকডাউন করা হয়েছে শ্রমজীবি অংশের মানুষের  কথা না ভেবে। তিনদিন কাজকর্ম না থাকলে শ্রমজীবী , গরীব  অংশের  মানুষ খাবে কি? শ্রমজীবী  পরিবারগুলির কথা ভাবেই না সরকার। ১৭ জুলাই  থেকে  সাত  দিন  সীমান্ত  এলাকায় লকডাউনের সময়ও গরীব, শ্রমজীবী  পরিবারগুলি ঠিকমত খাবার পায়নি।  সরকার কোন খোঁজখবরও রাখেনি। প্রদেশ  কংগ্রেস  সভাপতি  পীযুষ কান্তি বিশ্বাসও সমালোচনার  সূরে বলেন, লকডাউন করে কি হবে?  শাসক দলের  লোকরা তো লকডাউন  মানে না। লকডাউন  চলাকালীন  সরকারি ঘরে সভা করেছেন। শাসক দলের নেতারা দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন  গোটা রাজ্য।   সিপিআই(এম -এল)রাজ্য সম্পাদক  পার্থ  কর্মকারের অভিযোগ,রাজ্যে করোনা সংক্রমণ  পরিস্থিতির এই ভয়াবহতার জন্য দায়ী সরকার। রেলে, বিমানে আসা হাজার হাজার যাত্রীকে কোনরকম পরীক্ষা না করে বাড়িঘরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজ্যে করোনা সংক্রমন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ার ফলে  জনমনে ভীতি ও আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। সরকারের উপর বিশ্বাস ও আস্থা ভেঙ্গে পড়ছে। ক্রমশ এক হতাশা ও অন্ধকার  গ্রাস করছে রাজ্যবাসীকে । এর মোকাবেলায় লকডাউন কোন সমাধান হতে পারে না।  পূর্বেকার পাঁচ বার লকডাউন দেশে বা রাজ্যে গণ সংক্রমন ঠেকাতে পারেনি। বরং অপরিকল্পিত ও প্রস্তুতিবিহীন ভাবে লকডাউন জন জীবনে ও পরিযায়ী শ্রমিকদের জীবনে ধ্বংস ও বিপর্যয় নামিয়ে এনেছে। অর্থ ব্যবস্থা কে আরো বেশী করে সংকটগ্রস্ত করেছে। জনগণের মধ্যে করোনা অতিমারী নিয়ে বিজ্ঞান সম্মত সচেতনতা বৃদ্ধি ও প্রত্যয় সৃষ্টি না করে, সরকারি চিকিৎসা পরিকাঠামো কে উন্নত না করে, গণ পরীক্ষা ও  চিকিৎসার গ্যারান্টি না করে করোনা অতিমারীকে মোকাবেলা করা যাবে না। রাজ্যে ইতিমধ্যে চলতি চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। নাগরিকেরা অন্যান্য সব রোগের সরকারি চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়েছেন। বেসরকারি হাসপাতাল ফায়দা নিচ্ছে।   কন্টেইনমেন্ট জোন ও কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্র গুলিতে চূড়ান্ত অব্যবস্থার কারনে গণ বিক্ষোভ দেখা দিয়েছে।                                                  জাতীয় বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা আইন -২০০৫ চাপ্টার  ২,ধারা  ১২ অনুসারে বিপর্যয় কালীন সময়ে নাগরিকদের জন্য খাদ্য সামগ্রী, রোজগার ও অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবার ব্যবস্থাপত্র যোগান দেওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু সরকার তা মানছে না। সদিচ্ছাও নেই।  এই আইন কে অপব্যবহার করছে নাগরিকদের কন্ঠরোধ করার জন্য। ভিন্ন মত প্রকাশের অধিকার কে কেড়ে নেওয়ার জন্য। অধ্যাদেশ জারি করে সরকারি সম্পদ বিক্রি করে দিচ্ছে কেন্দ্রের  সরকার। সামনের সারির যোদ্ধা নার্স, চিকিৎসক, আশা কর্মী ও অন্যান্য কর্মীদের সুরক্ষার তেমন কোন ব্যবস্থা নেই। তাঁরা বার বার এই দাবি তুলে ধরেছেন। পর্যাপ্ত সুরক্ষা সামগ্রী দাবি করার  অপরাধে তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে বরখাস্ত করার হুশিয়ারী দিয়েছে সরকার।  নাগরিকদের আস্থা অর্জন করে করোনা মহামারী মোকাবেলায় সার্বিক গণ উদ্যোগ ও বৈজ্ঞানিক গণ সচেতনতা মূলক উদ্যোগ গ্রহণ করছে না সরকার, অভিযোগ  পার্থ কর্মকারের। সর্বশেষ  পাওয়া  তথ্য অনুসারে ত্রিপুরায়  করোনা পজিটিভ রোগীর সংখ্যা  চার  হাজারের  কাছাকাছি পৌঁছেছে। মৃত্যু  হয়েছে  ১৩ জনের। ১৬৬টি কন্টেইনমেন্ট জোন তৈরি  হয়েছে গোটা রাজ্যে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.