Header Ads

তেরোটি বাঁদরের মৃত্যু এখনও রহস্যের আবর্তে


প্রিয়া নাথ, কাটিগড়া : বন্য প্রাণীর মৃত্যু সভ্য সমাজের সবজান্তা মানুষের মৃত্যুর মতো ততটা গুরুত্বপূর্ণ নয় বলেই হয়তো একটার পর একটা প্রাণীর উপর চলছে নৃশংসতাগুয়াহাটীর কাটাবাড়িতে চিতাবাঘ হত্যার ঘটনা কেরলের মালাপ্পু্রমের গর্ভবতী হাতির নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনা নিশ্চয় সভ্যসমাজের মাথা হেঁট করেছেপরিকল্পিতভাবে লোভ-লালসা দেখিয়ে এভাবে অমানবিক হত্যার ঘটনা ঘটাতে যেখানে বিন্দুমাত্র বিবেকে বাঁধেনি, সেখানে জলে ডুবে বাঁদরের মৃত্যু নিয়ে মাথা ঘামাবে কে? এখানেই শেষ নয় সাধারণ জনমনে এখনও বহু প্রশ্নের উদ্রেক ঘটছেক্ষোভে ফুঁসছেন কাটিডড়া সমষ্টির কাতিরাইলের বাসিন্দারাফুঁসছেন বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, বজরং দল সহ হিন্দু জাগরণ মঞ্চের কর্মকর্তারা
উল্লেখ্য, একসঙ্গে ১৩ টি বাঁদরের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে এখনও  নীরবতাই বহাল রয়েছেগোটা ঘটনাকে নেহাৎ কাকতলীয় বলে গুটিয়ে নিলেও বৃহত্তর কাতিরাইল ভোলাগিরি এলাকার একমাত্র পানীয় জলের উৎস তথা জনস্বাস্থ্য কারিগরি বিভাগের এই পানীয় জল সরবরাহ প্রকল্পের রিজার্ভার ট্যাঙ্ক থেকে একসঙ্গে ১৩ টি বাঁদরের বীভৎস মৃত্যুর দায় কার ? জলবিভাগ না বনবিভাগের? এই দায়বদ্ধতা কার? কার গাফিলতির চরম খেসারত দিতে গিয়ে অপ্রত্যাশিত আশঙ্কায় ভুগতে হচ্ছে বৃহত্তর কাতিরাইলবাসীকে? জিলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও এই ১৩ টি বাঁদরের মর্মান্তিক মৃত্যুর  তদন্ত নিয়ে কোনো পোষকতার খবর এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নিতাছাড়া, তেমন সক্রিয় ভূমিকাও লক্ষ্য করা যায়নিতদন্তের অগ্রগতি বলতে এই যা, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সামনে এসেছে এবং কয়েক দফায় বনবিভাগের পক্ষ থেকে জনস্বাস্থ্য কারিগরি বিভাগের দু একজন কর্মী আধিকারিকের ঘটনাস্থল পরিদর্শন লক্ষ্য করেছেন কাতিরাইলের মানুষ ব্যসতাছাড়া, সবথেকে চাঞ্চল্যকর ঘটনা হচ্ছে, যে রিজার্ভার ট্যাঙ্ক থেকে বাঁদর গুলোর মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে, সেই রিজার্ভার ট্যাঙ্ক থেকে পানীয় জল সরবরাহ করা হয়েছে? না বিকল্প রিজার্ভার ট্যাঙ্ক থেকে ঐদিন পানীয় জল সরবরাহ করা হয়েছিল? শুধু তাই নয়, ঘটনার পাঁচদিন অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও এখনও পানীয়জল সরবরাহ করা হচ্ছে কী? যদি করা হয়ে থাকে, তবে কী ব্যবস্থার মাধ্যমে বর্তমানে এলাকায় পানীয়জল সরবরাহ করা হচ্ছে? তা কিন্তু এখনও স্পষ্টভাবে জানা যায়নিযদিও পরিচালন কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই রিজার্ভার ট্যাঙ্কটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে বহুদিন থেকে, কাজেই এই ট্যাঙ্ক থেকে জল সরবরাহ করা হয়নাকিন্তু স্থানীয়রা বলছেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে পরিত্যক্ত ট্যাঙ্কটি পরিস্কার করার জন্য বার বার চাপ সৃষ্টি করা হলেও কেউই আমল দেননি ব্যাপারটির উপরতাছাড়া, এলাকায় নিত্যদিন বাঁদরের মাত্রাতিরিক্ত উপদ্রবের হাত থেকে রক্ষা পেতে সংশ্লিষ্ট বিভাগের দ্বারস্থ হওয়া সত্ত্বেও কেউ কোনো পদক্ষেপ নেয়নিএতে দস্তুরমতো তিতিবিরক্ত হয়ে পড়েছেন এলাকার জনসাধারণ
কাতিরাইল টিলা এলাকা সহ বনাঞ্চলে ভরপুরনিঃসন্দেহে বাঁদরের বাসস্থান, সুতরাং উপদ্রব করাটা খুব একটা আশ্চর্যের বিষয় নয়তবে, আক্ষেপের বিষয় এই যে, বাঁদরের বাসস্থানটিই শেষমেশ নিরাপদ থাকলো না কেন? কার গাফিলতিতে প্রাণ হারাতে হল একসঙ্গে ১৩ টি বাঁদরকে? এদিকে ১৩ টি বজরঙ্গীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তীব্র প্রতিবাদ জানালো বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, বজরং দল সহ হিন্দু জাগরণ মঞ্চের কর্মকর্তারাএকইসঙ্গে এতো গুলো বাঁদরের ময়নাতদন্ত নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন পশ্চিম কাছাড় জিলা সভাপতি পরেশ চন্দ্র পাল, সম্পাদক অশোক কুমার দাস, বজরং দলের অরূপ দত্ত, হিন্দু জাগরণ মঞ্চের সত্যজিৎ দাস সহ প্রমুখ
তাছাড়া, ঘটনা প্রকাশ্যে আসার দিন অর্থাৎ জুন ট্যাঙ্ক থেকে ১৩ টি বাঁদর উদ্ধার করার পর স্থানীয় লোকের কাছ থেকে দা নিয়ে সেখানেই একটি মৃত বাঁদরের ময়নাতদন্ত করা হয় নিয়েও তীব্রভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেন হিন্দু সংগঠনের কর্মকর্তারা এবং এই পুরো ঘটনাটির উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের দাবি জানান তারা

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.