Header Ads

২০২১-এর ভোটের আগে ভাঙনের শঙ্কায় কাঁপছে তৃণমূল--মুকুল-বাহিনীকে রুখতে ভরসা পিকে !!

বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায়
একুশের মহাযুদ্ধ যত এগিয়ে আসছে, ততই তৃণমূলে ভাঙনের আতঙ্ক তীব্র হচ্ছে। ২০১৯-এ যেভাবে লড়াই থেকে ছিটকে গিয়েছিল তৃণমূল, এবারও কিন্তু তৃণমূলে সেই পরিস্থিতি বজায় রয়েছে। ২০১৯ থেকে এখনও শিক্ষা নিতে পারেনি তৃণমূল। এখনও তাই দলাদলি লেগেই রয়েছে বিভিন্ন জেলার তৃণমূল সংগঠনে।

এই অবস্থায় বিজেপি তাঁদের ঘাটতি পূরণ করতে টার্গেট করেছে তৃণমূলকে। ঠিক যেভাবে ২০১৯-এ তৃণমূলের ঘর ভেঙে প্রার্থী করে তাঁদের জিতিয়ে সংসদে পাঠিয়েছিল বিজেপি, এবারও যে সেই খেলা খেলবেন মুকুল রায়, তা বিলক্ষণ জানেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই এখন থেকেই সাবধানী পদক্ষেপ নিতে চাইছে তৃণমূল।
২০২১ নির্বাচনের প্রাক্কালে তাই দলাদলি রুখতে তৃণমূল কংগ্রেস পিকের উপর ভরসা করতে শুরু করে দিল। যেভাবে তিনি ২০১৯-এর পরে দায়িত্ব নিয়ে বিজেপিকে রুখে দিয়েছিলেন, এবারও তিনি তা করতে সক্ষম হবেন বলে বিশ্বাস মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এবং বিশেষ করে অভিষেকও প্রশান্ত কিশোরের উপর আস্থা রাখছেন।
কিন্তু দলে শুদ্ধিকরণ ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার কর্মসূচী সামনে রেখে আইপ্যাক বিশেষ এক নেতাকে প্রোমোট করার জন্য তার অনুগামী সমর্থক বাড়ানোর ব্যাপারেই বেশি সক্রিয় থাকার কারণেই দলাদলি গোষ্ঠীসংঘর্ষ থামতেই চাইছে না। পিকে’র নতুন কর্মসূচী ‘যুবশক্তি’ যুবদের কতটা প্রভাবিত করতে পারবে তা নিয়ে ইতিমধ্যেই  সংশয় তৈরি হয়ে গেছে বিভিন্ন স্তরে।
তাই বিজেপির থেকেও তৃণমূল বেশি ভয় পাচ্ছে তৃণমূলীদেরই। পার্টির মধ্যে দলাদলির কারণে আগে অনেক কিছুই হারাতে হয়েছে। ২০২১-এ যাতে হারাতে না হয়, তার জন্য একটি বড় সাংগঠনিক রদবদল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। যে কোনও মূল্যে আদি-নব্য দ্বন্দ্ব ঘুচাতে চাইছে তারা।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, এই সাংগঠনিক রদবদল শুরু হবে উত্তরের জেলাগুলি থেকে। বিগত লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গে আটটি আসনেই পরাজিত হয়েছিল তৃণমূল। সেই হিসেবে তাঁদের হারানোর কিছু নেই। বিজেপির কাছে হেরে এবার তা পুনর্দখলের পরিকল্পনা শুরু করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তরে বিশেষ করে কোচবিহার-জলপাইগুড়ি-দার্জিলিংয়ের সাংগঠনিক খোলনলচে আগাপাশতলা পরিবর্তনের কথা না ভাবলে একুশের বিধানসভা নির্বাচনের ফলও লোকসভার মতোই হতাশজনক হতে বাধ্য।
দলীয় কোন্দলের কারণে গত পঞ্চায়েত ও লোকসভা নির্বাচনে ভারী মূল্য দিতে হয়েছিল তৃণমূলকে। তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব মনে করছে পার্টিতে সর্বস্তরে সুসংহত সমন্বয় সাধন করা এখন তাদের অগ্রাধিকার। তৃণমূল সেই লক্ষ্যেই কাজ করছে। দলের সংগঠনকে মজবুত করার রাস্তায় হাঁটছে তৃণমূল। তার জন্যই সাংগঠনিক রদবদল। কিন্তু সেটা যদি ফের সেই থোর-বড়ি-খাড়া’র ফর্মূলায় হয় তাহলে ফলাফল খুব বেশি আশাপ্রদ হবে না।
তৃণমূলে যুব শাখা এবং জেলা নেতাদের মধ্যে উত্তরবঙ্গে যথেষ্ট বিভেদ রয়েছে। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে সেই বিভেদ মেটাতে তৃণমূল তৎপর। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের আগে কোচবিহারে তৎকালীন তৃণমূল যুব শাখার নেতা নিশীথ প্রামানিক বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন এবং তৃণমূলকে পরাজিত করেছিলেন।
তৃণমূল নেতৃত্ব সাংগঠনিকভাবে রদবদল করে সতর্কতার সঙ্গে পদক্ষেপ নিতে চান। দলীয় নেতাদের একাংশ যাঁরা প্রধান পদে রয়েছেন, তাঁরা অনেকেই নেতাদের সঙ্গে সুষ্ঠুভাবে কাজ করছেন না। তার খেসারত দিতে হচ্ছে তৃণমূলকে। তাই ২০২১-এর আগে তৃণমূল দলের অন্তর্বর্তী বিরোধ নির্মূল করে দিতে চায়। কিন্তু প্রশ্ন হল তা কতটা পারবেন নেত্রী এবং ভোট মগজ পিকে--সেটাই এখন দেখার !

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.