Header Ads

ত্রিমুখী সামরিক চাপের প্রচ্ছন্ন হুমকি চীনের--শেষপর্ন্ত মুখোশ খসে পড়ল !!

বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায়
লাদাখে চীনা ও ভারতীয় সেনাদের মধ্যে প্রাণঘাতী সংঘর্ষের ঘটনায় ভারতকেই দুষছে বেইজিং। এ ঘটনায় সেনাদের প্ররোচনা দেওয়া বন্ধ করে ভবিষ্যতে নিজ বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণের জন্য দিল্লির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। অন্যদিকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকরও কড়া অভিযোগ করেছেন, সেদিন পরিকল্পিতভাবে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে তুলেছিল চীনা বাহিনী। এর জেরেই দুই দেশের সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তবে চীনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসের প্রচ্ছন্ন হুমকি, শুধু বেইজিং-এর নয়, বরং চীন, পাকিস্তান ও নেপালের ত্রিমুখী সামরিক চাপে পড়তে পারে দিল্লি !

সাংহাই একাডেমি অব সোশ্যাল সায়েন্সেস-এর ইন্টারন্যাশনাল রিলেশন্স ইনস্টিটিউট-এর একজন রিসার্চ ফেলো হু ঝিয়াং বুধবার গ্লোবাল টাইমস-কে বলেন, ‘সীমান্ত পরিস্থিতি পরিবর্তনের কোনও ইচ্ছা আদৌ চীনের নেই। ঘটনাটি নিয়ন্ত্রণরেখার চীনা অংশেই ঘটেছে। ফলে সংঘর্ষকালে ভারতের ২০ জন সেনাসদস্য নিহত হয়। এই সংঘাতে ভারতীয় পক্ষ থেকে পুরোপুরি উসকানি দেওয়া হয়েছিল।’
এই আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক বলেন, ‘ভারত একই সময়ে চীন, পাকিস্তান ও নেপালের সঙ্গে সীমান্ত বিরোধে জড়িয়েছে। পাকিস্তান চীনের নির্ভরযোগ্য কৌশলগত অংশীদার। নেপালের সঙ্গেও বেইজিং-এর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশই চীনের প্রস্তাবিত বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।’
হু ঝিয়াং বলেন, ‘ভারত যদি সীমান্ত উত্তেজনা বাড়িয়ে তোলে তবে তারা দুইটি বা এমনকি তিনটি ফ্রন্টের সামরিক চাপের মুখোমুখি হতে পারে। এটি দিল্লির সামরিক সক্ষমতার অনেক বেশি বাইরে। এটি ভারতকে একটি বিপর্যয়কর পরাজয়ের দিকে ঠেলে দিতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘এখনই এই পরাজয় দিল্লির জন্য বিপর্যয়কর হবে। কেননা সেখানকার উদীয়মান হিন্দু জাতীয়তাবাদ এমন একটি ব্যর্থ পরিণতি মেনে নেবে না এবং মোদি সরকারের পতন ঘটবে।’
এই চীনা বিশ্লেষক বলেন, ‘ভারতীয় নীতিনির্ধারকদের এই পরিস্থিতি ভুলভাবে নেওয়া উচিত নয়। কেননা, তাদের মধ্যে কেউ কেউ মনে করেন, চীন-মার্কিন সম্পর্কের অবনতিশীল পরিস্থিতি দিল্লিকে বেইজিংকে চ্যালেঞ্জ জানানোর সুযোগ করে দেবে। কেননা, চীন বা যুক্তরাষ্ট্র কারও জন্যই ভারত কোনও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়।
চীনা বিশেষজ্ঞদের সূত্র দিয়ে গ্লোবাল টাইমস লিখেছে, মোদি সরকারের ভারতে মার্কিনপন্থী শক্তি নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। কেননা চীনকে উস্কে দেওয়ার মতো মূর্খতাপূর্ণ আন্দোলন গুরুতর পরিণতি ঘটাতে পারে।
অন্যদিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও বিদেশমন্ত্রী রীতিমতো কড়া প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। উভয়েই সাফ জানিয়ে দিয়েছেন চীন যদি ভারত সীমান্তে প্ররোচনামূলক উত্তেজনা তৈরির পথ থেকে সরে না যায় তাহলে তাদের কঠিন ফল ভোগ করতে হবে। তাঁদের এই কড়া প্রতিক্রিয়া যে শুধু কথার কথা নয় তা বোঝা যাচ্ছে সামরিক তৎপরতার মধ্য দিয়ে। ইতিমধ্যেই সেনাবাহিনীকে প্রয়োজনানুযায়ী স্বাধীন সিদ্ধান্ত গ্রহণের অনুমতি দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর পরেই কাশ্মীর ও উত্তরাখণ্ড থেকে সেনা পাঠানো শুরু হয়েছে লাদাখ সীমান্তে। বেশ কিছু এলাকা থেকে লোকজন সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বায়ুসেনাও নিজেদের পজিশন নেওয়া শুরু করেছে। পাকিস্তান ও নেপালের নিজস্ব শক্তি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা আছে ভারতীয় সেনাবাহিনীর। তাই চীনাদের তথাকথিত ‘ত্রিমুখী সামরিক চাপ’-এর হুমকিকে ভারতীয় বাহিনী পাত্তা দেওয়ার কথা আদৌ ভাবছে না।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.