Header Ads

চীন-ভারত গণমাধ্যমে লাদাখ সংঘর্ষের প্রতিক্রিয়া !!

বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায়
সীমান্তে সংঘাতের মধ্য দিয়ে চীন ভারতের সঙ্গে হঠকারিতামূলক আচরণ করেছে বলে উল্লেখ করেছে ভারতের গণমাধ্যমগুলো। অন্যদিকে চীনের সংবাদমাধ্যম এই ঘটনার জন্য ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডকেই দুষছে।
ভারতের ইংরেজি দৈনিক ‘টাইমস অফ ইন্ডিয়া’ এই ঘটনাকে ‘চীনের আগ্রাসন’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে চীনের বিরুদ্ধে স্বাধীনভাবে তদন্তের যে আন্তর্জাতিক দাবি উঠেছে, তাতে সায় আছে ভারতের। আর এ কারণেই চীন মূলত ভারতকে সতর্কবার্তা দিয়েছে বলে সংবাদমাধ্যমটি তাদের এক কলামে উল্লেখ করেছে।

‘‘বেইজিং যদি ভারতকে চীনের কূটনৈতিক অবস্থানের বিষয়ে চুপ করাতে পারে তাহলে প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্যও এই কঠিন বার্তাটি দেয়া হবে যে এশিয়ার সিদ্ধান্ত আসলে কে নেবে। আর সে কারণেই চীন যা পছন্দ করে না, ভারতের সেটাই করা উচিত হবে এবং পালটা কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিতে হবে,’’--এমনটাই লেখা হয়েছে টাইমস অফ ইন্ডিয়াতে !
এই প্রেক্ষাপটে হংকংয়ের অর্থনীতি, তিব্বত ও শিনজিয়াংয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সমালোচনা এবং তাইপের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে জোর দিতে নতুন দিল্লিকে পরামর্শ দিয়েছেন ঐ কলামের লেখক। চীনের পণ্য আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের মাধ্যমে বাণিজ্যকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারেরও পরামর্শ দেন তিনি।
‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’ এর একটি কলামে বলা হয়েছে, অল্প কিছুদিন আগেই দুই দেশের সামরিক কর্মকর্তারা একটি সমঝোতা করেছিলেন। চীনের হাতে ভারতীয় ২০ সেনার মৃত্যু সেটিকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। লেখক মনে করছেন, ‘‘বিভিন্ন বৈঠকের মধ্য দিয়ে শি জিনপিং ও নরেন্দ্র মোদী যে চুক্তি করেছেন চীনের হঠকারিতায় তা ভেঙে পড়ছে। সব ধরনের রাজনৈতিক ও সামরিক চ্যানেল চালু করে নতুন দিল্লির এই বিষয়টি পরিষ্কার করা উচিত।’’
চীনের সংবাদমাধ্যম জিয়েফাং জুনবাও (পিপলস লিবারেশন আর্মির সংবাদপত্র) সীমান্তে সোমবারের সংঘর্ষকে দেখছে এভাবে--‘‘১৫ জুন সন্ধ্যায় ভারতীয় বাহিনী চীন-ভারত সীমান্তের গালওয়ান নদী উপত্যকায় সীমান্তরেখা বরাবর পুনরায় বেআইনি কর্মকাণ্ড চালিয়েছে। তারা পরিকল্পিতভাবে হামলার উসকানি দিয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে সৃষ্ট সংঘাতে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।’’
নিবন্ধটিতে ভারতকে তার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ, সব ধরনের সীমান্ত সংঘাত নিরসন এবং বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য আলোচনায় ফেরার আহবান জানানো হয়।
ভারতের গণমাধ্যমগুলোতে ২০ সেনাসদস্য নিহত হওয়ার খবর বের হলেও চীন এখনও উভয় দেশের কারো হতাহতের বিষয়েই মুখ খোলেনি। এর কারণ হিসেবে গ্লোবাল টাইমসের চীনা সংস্করণে সংবাদপত্রটির প্রধান সম্পাদক লিখেছেন, ‘‘দুই দেশের জনগণ মৃত্যুর পরিসংখ্যানের তুলনা করুক, চীন এমনটা চায় না। এতে খারাপ হওয়া পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে। চীনের দিক থেকে এ ব্যাপারে নিরবতা বন্ধুত্বের ইঙ্গিত।’’
তিনি ‘দেশের বাইরে থেকে ছড়ানো মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে কোনো গুজবে’ কান না দিতে পাঠকদের প্রতি আহবান জানান। প্রধান সম্পাদক লিখেছেন, ‘‘উত্তেজনা নিরসনে আমাদের সরকার ও পিপলস লিবারেশন আর্মি যে কৌশল নিয়েছে আমরা তার উপর আস্থা রাখি।’’
এদিকে বুধবার তিব্বতের মালভূমিতে সামরিক বাহিনীর মহড়া চালানোর ছবি প্রকাশ করেছে চীনের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন। পিপলস লিবারেশন আর্মির ব্রিগেডটি সামরিক সরঞ্জামসহ তিন স্তরের নিরাপত্তা অনুশীলন চালিয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে খবরে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.