Header Ads

অস্ত্র ব্যবহারে ভারতীয় বাহিনীকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী !!

 বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায়
লাদাখের গালওয়ান সীমান্তে সংঘর্ষের পর চীনা সেনাদের জবাব দিতে তিন বাহিনীকেই ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ দিয়েছে ভারত। শুধু লাদাখ বা গলওয়ান উপত্যকা নয়, ভারত-চীন সীমান্তের পুরো এলাকাতেই তিন বাহিনীকে এই কড়া অবস্থান নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং।

রোববার চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ (সিডিএস) বিপিন রাওয়াতসহ তিন বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে বৈঠকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ এমনই বার্তা দিয়েছেন বলে সেনা সূত্র জানিয়েছে।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, চীনের সঙ্গে পুরো সীমান্ত এলাকাতেই জল, স্থল ও আকাশে তীক্ষ্ন নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। পাশাপাশি চীনা সেনাদের গতিবিধিও নখদর্পণে রাখার কথা বলেছেন তিনি। কড়া বার্তা দিয়ে বলেছেন, চীনের তরফে কোনো রকম আগ্রাসনের মনোভাব বুঝতে পারলেই তার উপযুক্ত জবাব দিতে হবে। সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রেও সেনাদের পূর্ণ স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে বৈঠক সূত্রে।
প্যাংগং সো-তে গত মাসের ৫-৬ তারিখ ও গালওয়ান উপত্যকায় ১৫ জুন সংঘর্ষ হয়। প্রতিবারই দল বেঁধে ডাণ্ডা ও লোহার আংটা লাগানো রড নিয়ে ভারতীয় জওয়ানদের তাড়া করেছিল চীনা বাহিনী।
লাদাখের গালওয়ান সীমান্তে সংঘর্ষের পর ভারত ও চীনের মধ্যে সম্পর্কে গুরুতর অবনতি ঘটেছে। প্রতিবেশী পারমাণবিক শক্তিধর দুই দেশ ক্রমেই যুদ্ধ পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে।
১৫ জুন মধ্যরাতে চীনা সেনাদের হামলায় ২০ ভারতীয় সেনা নিহতের ঘটনায় সীমান্তে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। দুই দেশই সীমান্তে সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করছে।
লাদাখের আকাশে উড়তে শুরু করেছে যুদ্ধবিমান, হেলিকপ্টার। সীমান্তে ঘাঁটি গেড়ে বসছে চীনের সেনাবাহিনীও। ভারতীয় সেনাবাহিনীও তোড়জোড় শুরু করেছে।
ভারত সীমান্তের দিকে শত শত ট্রাক, বুলডোজার ও অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম নিয়ে যুদ্ধ সাজে এগিয়ে আসছে চীনা বাহিনী।
এলএসি বরাবর চীনা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় ১২৭টি গাড়ির দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। এলাকাটি এলএসি থেকে মাত্র ৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
ভারত সীমান্ত থেকে ২০০ কিলোমিটারের মধ্যে পুরোদস্তুর বিমান ঘাঁটিও গড়ে তুলেছে চীন। লাদাখের প্যাঙগঙ লেকের ২০০ কিলোমিটার দূরে তিব্বতের ‘গাড়ি কুনসা’য় ১০ বছর আগে বিমানবন্দর নির্মাণ করে চীন।
বেইজিং তখন জানিয়েছিল অসামরিক বিমান পরিবহনের জন্য বিমানবন্দরটি তৈরি করা হচ্ছে। কিন্তু উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়েছে, এক মাসে এ বিমানবন্দরের সম্প্রসারণের কাজ অনেক বেড়ে গেছে। সেখানে রীতিমতো বিমান ঘাঁটি বানিয়ে ফেলা হয়েছে।
ভারতের সঙ্গে প্রায় ৪ হাজার ৩৮৮ কিমি. এলাকাজুড়ে সীমানা রয়েছে চীনের। এর আগে বহুবার সীমান্ত নিয়ে বিবাদে জড়িয়েছে ভারত ও চীন।
ভারতও সীমান্তে সামরিক শক্তি বাড়াচ্ছে। লাদাখে যুদ্ধবিমান ও অ্যাটাক হেলিকপ্টার পাঠিয়েছে ভারত। যুদ্ধনীতির ক্ষেত্রেও বড় পরিবর্তন এনেছে ভারত। চীন সীমান্তে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের বিধিনিষেধ তুলে নিয়ে কমান্ডারদের পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে ভারতীয় সামরিক বাহিনীকে। এর ফলে চীন সীমান্তের নিয়ন্ত্রণরেখায় আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারে আর কোনো বিধিনিষেধ রইল না।
একজন উচ্চপদস্থ সেনা কর্মকর্তা জানান, নিয়ম পরিবর্তন হওয়ার ফলে নিয়ন্ত্রণরেখায় আর ভারতীয় কমান্ডারদের হাত বাঁধা থাকবে না। তারা যেটা ঠিক মনে করবেন, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারবেন। তিনি বলেন, খুব প্রয়োজন পড়লে হাতে যা আছে তার সবই ব্যবহার করতে পারবেন জওয়ানরা।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.