Header Ads

চৈতালি বেলাশেষে...এক বাংলাদেশী মেয়ের গপ্প... অষ্টাদশ পর্ব (১৮)

 দেবাশীষ মুখার্জী

নিলয়ের বাড়িতেই বসেছিলো পারিবারিক এক বৈঠক...এই বৈঠকেই ঠিক হয় সেদিন এই দুজনের সম্পর্কের ভবিষ্যৎ....যদিও এর আগেই এরা দুজন মানে মৌলি আর নিলয় আলাদা হবার সিন্ধান্ত নিয়েই নিয়েছিলো...শুধু তাতে মান্যতা মানে স্ট্যাম্পটা দিতে বসেছিলো এই পারিবারিক নাট্য সমাবেশ...

এমন কিছু কথা উঠে আসে এই সমাবেশে যেটা কেবলমাত্র তাদের দাম্পত্যজীবনেই সীমাবদ্ধ ছিলো..আবার ছিলোও না..

প্রথমেই যেটা আসে সেটা হলো মৌলির সিগারেট প্রীতি...মৌলির বালিশের তলা থেকে উদ্ধার হওয়া প্যাকেট কে প্যাকেট সিগারেট...
এই ঘটনাটা সামনে আসতেই পুরো ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে যান মৌলির জেঠু....পুরোপুরিভাবে দোষটা মৌলির ঘাড়ে চাপাতে পারলেই যেনো বেঁচে যান তিনি...

উঠে আসে নিলয়ের যৌনতা নিয়েও...এখানেই জানা যায় নিলয়ের দেওয়া যৌনতার যন্ত্রনা দিনের পর দিন ভোগ করতে হয়েছে মৌলিকে....যৌনতা মানে নিলয় জানতো ধর তক্তা মার পেরেক...যৌনতা যে আবেগ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় সেই ব্যাপারটাই ছিলো না নিলয়ের মধ্যে...
খোদ মৌলি জানিয়েছে...পাঁচ বছরের বিবাহিত জীবনে অরগ্যাজম কি জিনিস সেটা সে মাত্র একদিন বুঝেছিলো...বাকি দিনগুলো ছিলো রিক্সাওয়ালা সেক্স....নিলয় আসতো...বিছানায় মৌলিকে ধামসাতো...নিজেরটা বুঝতো...তারপর পাশ ফিরে ঘুম...
আর মৌলির সারারাত কাটতো যন্ত্রনা আর জ্বালায়..

মৌলির মা হওয়া নিয়েও প্রশ্ন ওঠে....নিলয়ের স্পার্মকাউন্ট ঠিক থাকা সত্ত্বেও সন্তান আসেনি কেন তাদের মধ্যে...

এ এমন এক অবস্থা একে যতো ঘাঁটানো যাবে তত গন্ধ ছাড়বে.....

তবে সব কিছু ছাড়িয়ে যায় যখন নিলয় সানির কথা তোলে....

থার্ড সেমিস্টারের পরীক্ষা এগিয়ে আসার জন্য সেদিন মৌলি অনেক রাত পর্যন্ত পড়াশোনা করছিলো...সেই সময় মৌলির পাশে ঘুমের ভান করে শুয়েছিলো নিলয়..

এই সময় মৌলির ফোনে সানির মেসেজ আসে...সানি বলে পরীক্ষার আগে এতো রাত অবধি জেগে আছো কেন...
মৌলি রিপ্লাই দেয়...অনেক পড়া বাকি তাই পড়তে হচ্ছে...
সানি বলে ঘুমিয়ে পড়ো...
মৌলি বলে...মশারি টাঙিয়ে ঘুমাতে যাবো এবার....
সানি বলে...মশারি টাঙিয়ে দিয়ে আসবো....

ব্যাস হটাৎ করে ঘুম থেকে উঠে মৌলির হাত থেকে ফোনটা কেড়ে নেয় নিলয়....সমস্ত মেসেজ গুলো পড়ে যা তা অপমান করে মৌলিকে...বলে এতো রাতে একজনের স্ত্রী হয়ে পরপুরুষের সাথে কথা বলতে লজ্জা করে না তোমার....

মৌলি শুধু বলে....সানি কিন্তু তোমার বন্ধু...পারিবারিক বন্ধু....

নিলয় সে রাতে আর কথা বাড়ায় না....

তারপরদিন সকালে নিলয় মৌলির ফোনটা সানির বাড়িতে পাঠায় তার ছোটমামাকে দিয়ে...সানির বাবা মা কে সব মেসেজগুলো পড়ে শোনায় তার ছোটমামা...চুড়ান্ত অপমান করে সানির বাবা মা আর সানিকে...
কথাকাটাকাটির মধ্যেই সানি বলে....বিয়ে যদি করতেই হয় তাহলে ওকেই করবো...পারলে আটকে নেবেন যান....

সব কথা আস্তে আস্তে থামে...দুই পরিবার শেষমেশ একটা জায়গায় আসে যে এদের সম্পর্ক আর থাকার নয়...অতএব যা সিন্ধান্ত নেবার এখানেই নেওয়া হোক...

নিলয়ের ইচ্চে ছিলো মৌলির ফার্নিচারগুলো রেখে দেবার....তার বিনিময়ে টাকা দিয়ে দেবে...কিন্তু মৌলি রাজী হয়না....মৌলির শ্বশুরমশাই এক অদ্ভুদ দাবী করলেন...বিয়েতে যে এতো খরচ করেছেন তিনি সেই টাকা কে মেটাবে....

এই নিয়ে দু এক কথা হতেই মৌলি নিজের হাত থেকে বালা দুটো খুলে তার শ্বশুরমশাইকে দিয়ে বলে...এই রইলো আপনার খরচ....

সব ছেড়ে এসেছিলো নিলয়ের কাছে...নিজের হার...আশির্বাদে দেওয়া নিলয়ের হার সবকিছু....মৌলি খোরপোষের দাবি থেকেও সরে এসেছিলো...কোন খোরপোষ দাবি করেনি সে....

পারিবারিক ভাবে ব্যাপারটা সেটেলড হবার পর এবার সেটা নিয়ে তারা আদালতে যায়...সেখানেও নিলয় এক কান্ড ঘটিয়েছিলো...সেই নিয়ে পরে আসবো...

মৌলি এর পর ও বাড়িতে ছিলো দিন তিনেক....পড়াশোনার জন্য একটা মেস সে দেখে রেখেছিলো আগেই...পড়াশোনার পরিবেশ তো ছিলোনা এ বাড়িতে কোনদিনই....

যাবার আগের দিন রাত্রে মৌলি সব কিছু গোছগাছ করে...বাঁধাছাঁদা নিজেই করে...

পরদিন সন্ধ্যার দিকে মৌলির জেঠু একটা গাড়ি নিয়ে আসেন....তাতে সমস্ত মাল তুলে তিন সন্ধ্যেবেলায় মৌলি নিলয়ের বাড়ি থেকে বেরিয়ে মেসের উদেশ্যে রওনা দেয়...

সব কাজ সারা...বেডরুমে একা দাঁড়িয়ে মৌলি আর নিলয়...

মৌলি জড়িয়ে ধরে নিলয়কে অঝোরে কাঁদতে কাঁদতে বলে....

তুমি একবার বললে আমি থেকে যাবো...একবার বলো....

নিলয় মৌলিকে সরিয়ে দিয়ে বলে...আর তা সম্ভব নয়..

চলবে....

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.